শনিবার (২১ জুলাই) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. ফরিদ উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরীর সঙ্গে জেলা প্রশাসন, বহিরাগমন ও পাসপোর্ট বিভাগ, কারা কর্তৃপক্ষ, ফায়ার সার্ভিস ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ তথ্য জানান।
আরও খবর>>**মিয়ানমার মাদক নির্মূলে সহযোগিতা করছে না
নগরের চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে পার্থ গোপাল বণিক বলেন, কারাগারে এখন ধারণ ক্ষমতার চারগুণের বেশি বন্দি রয়েছে।
নতুন ফায়ার স্টেশন চান জেলা প্রশাসক
চট্টগ্রাম শহর এলাকায় আরও ফায়ার স্টেশন স্থাপনের অনুরোধ জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেন।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম অনেক বড় শহর। ক্রমান্বয়ে খুব ঘনবসতির শহরে পরিণত হচ্ছে। যানজটও বেড়েছে সীমাহীনভাবে। এখানে আরও কয়েকটি ফায়ার স্টেশন দরকার আছে বলে মনে করি।
উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, নাসিরাবাদে কোথাও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে আগ্রাবাদ বা বায়েজিদ এলাকা থেকে যেতে হবে। হয়তো যেতে যেতে দেখা যাবে সব পুড়ে গেছে।
সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. ফরিদ উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণে অনুরোধ জানান।
জেলা প্রশাসক বলেন, চট্টগ্রাম বিভাগে ২৭টি মাদক নিরাময় কেন্দ্র রয়েছে। এসব মাদক নিরাময় কেন্দ্রগুলো তদারকি করা প্রয়োজন। মাদক নিরাময় কেন্দ্রের আড়ালে তারাও মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত কি না তা যাচাই করতে হবে।
মাদকের মামলা বিবেচনায় দ্রুত সাজা চান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার
মাদকের মামলা বিবেচনা করে দ্রুত এসব মামলা নিষ্পত্তি করে দোষীদের শাস্তি চান চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) আমেনা বেগম।
তিনি বলেন, বিচার বিভাগ আলাদা একটি বিষয়। তবুও পরিস্থিতি বিবেচনায় মাদকের মামলাগুলো যাতে দ্রুত নিষ্পত্তি করে মাদক ব্যবসায়ীদের সাজা দেওয়া হয় এমন প্রস্তাব রাখছি। যাদের বেশি মাদকের মামলা রয়েছে সেসব মামলা তো এমনিতে হয়নি। যথাসময়ে সাজা না হওয়ায় তারা জামিনে বের হয়ে ফের মাদক ব্যবসা করেন, ফের অপরাধে জড়িয়ে পড়েন। তাদের মামলাগুলো পেন্ডিং না রেখে দ্রুত সাজা দিয়ে দিলে ফের অপরাধ করার সুযোগ পাবে না।
তিনি বলেন, মাদক ব্যবসায়ীদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করতে হবে। তা তদন্ত করে জড়িত অন্যদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
মাদকের জন্য আলাদা ট্রাইব্যুনাল চান পুলিশ সুপার
মাদকের মামলাগুলো বিচারের জন্য আলাদা ট্রাইব্যুনাল গঠনের প্রস্তাব করেছেন জেলা পুলিশ সুপার নুরেআলম মিনা।
তিনি বলেন, আমাদের আদালতগুলোতে বিচারক সংকট রয়েছে। মামলার জট লেগে থাকে। শুধু মাদকের জন্য যদি আলাদা ট্রাইব্যুনাল করা যায় তাহলে মাদক ব্যবসায়ীদের দ্রুত শাস্তি নিশ্চিত করা যাবে।
জবাবে সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. ফরিদ উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী বলেন, মাদকের জন্য আলাদা ট্রাইব্যুনাল গঠনের প্রস্তাব আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। শিগগিরই হয়তো কোনো সিদ্ধান্ত পাওয়া যাবে্।
মিয়ানমার থেকে মাদক প্রবেশ বন্ধ না হওয়ার বিষয়কে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক চক্রের ষড়যন্ত্র বলে মনে করেন পুলিশ সুপার।
তিনি বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাংলাদেশকে ব্যর্থ করতে চায় আন্তর্জাতিক চক্র। তাই দেশের যুবসমাজকে ধ্বংস করতে চায়।
২৮ মামলার আসামি মো. ইউসুফের ভুয়া ঠিকানায় পাসপোর্টের পুলিশ ভেরিফিকেশন হওয়ার বিষযে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার বলেন, বিষয়টি তাদের নজরে এসেছে। তদন্ত চলছে।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেনের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. ফরিদ উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী।
আরও বক্তব্য দেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সর পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) মেজর একেএম শাকিল নেওয়াজ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক মজিবুর রহমান পাটোয়ারী, বহিরাগমন ও পাসপোর্ট বিভাগের উপ পরিচালক জাকির হোসেন নোমান সহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকতারা।
বাংলাদেশ সময়: ২২০৫ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০১৮
এসকে/টিসি