ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

মিয়ানমার মাদক নির্মূলে সহযোগিতা করছে না

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৩২ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০১৮
মিয়ানমার মাদক নির্মূলে সহযোগিতা করছে না জেলা প্রশাসন, বহিরাগমন ও পাসপোর্ট বিভাগ, কারা কর্তৃপক্ষ, ফায়ার সার্ভিস ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভা

চট্টগ্রাম: দেশের অভ্যন্তরে মাদকের ভয়াবহ আগ্রাসন নির্মূলে সকলকে সম্মিলিত প্রচেষ্টা চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. ফরিদ উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী।

শনিবার (২১ জুলাই) চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে জেলা প্রশাসন, বহিরাগমন ও পাসপোর্ট বিভাগ, কারা কর্তৃপক্ষ, ফায়ার সার্ভিস ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মো. ফরিদ উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী বলেন, দেশে ক্রমান্বয়ে মাদকের ভয়াবহতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

আমরা মাদক উৎপাদনকারী দেশ নই, মাদক ভোগকারী। পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে এসব মাদক আমাদের দেশে প্রবেশ করছে।
আমরা চেষ্টা করছি পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে এসব মাদক প্রবেশ বন্ধ করতে কিন্তু তাদের অসহযোগিতার কারণে পুরোপুরি পেরে উঠছি না।

তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের চুক্তি হয়েছিলো। আমরা বর্ডারের পার্শ্ববর্তী মাদক কারাখানার তালিকা দিয়েছিলাম। তারা বর্ডারের পাশে মাদক উৎপাদন কারখানা বন্ধ করে দিয়েছেন। ভারত থেকে মাদক আসা অনেক কমে গেছে। মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের ১৯৯৪ সালে চুক্তি হয়েছিল। তাদেরকেও তালিকা দিয়েছি কিন্তু তারা কোনো ব্যবস্থা নেননি। চুক্তির পর থেকে মিয়ানমারের সঙ্গে মাত্র ৩টি মিটিং করতে পেরেছি। তারা মিটিংয়েও বসতে চান না। এ নিয়ে তাদের কোনো আগ্রহ দেখতে পাই না। ৩টি মিটিংয়ের কোনো সিদ্ধান্তও আজও বাস্তবায়ন করেননি তারা। মিয়ানমারে দেশ পরিচালনার দায়িত্বে যারা আছেন তারাই এ মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।

মো. ফরিদ উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী বলেন, এখন আমাদের নিজেদের সচেতন হতে হবে। মাদকের সঙ্গে যারা জড়িত তারা সমাজে প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিত। প্রমাণ পেলে আমরা তাদেরও ছাড় দেই না। তবে তাদের সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে সবাইকে।

তিনি বলেন, মসজিদের ইমাম, স্কুলের শিক্ষক থেকে সবাইকে মাদক নির্মূলে সম্পৃক্ত করতে চাই। এ নিয়ে পরিকল্পনা হয়েছে। এজন্য সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের সহযোগিতা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, ‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর প্রতিষ্ঠার পর থেকে পঙ্গু প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিতি পেয়ে আসছে। কারণ এ প্রতিষ্ঠানে লোকবলের অভাব। তারা যে মাদক নিয়ন্ত্রণ করবে তার জন্য অন্য সংস্থার সাহায্যের জন্য চেয়ে থাকতে হয়। ৫-৬ জন জনবল দিয়েও একটি জেলা কার্যালয় চালাতে হয়। এটি চেইঞ্জ হচ্ছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর আগের চেয়ে শক্তিশালী হচ্ছে। ১৯৯০ সালের মাদক আইনের সংশোধনী আনা হচ্ছে। ’

‘মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে সংশোধন করা হচ্ছে। মাদকের গডফাদারদের ধরতে কার্যকর হবে এ আইন। আগের আইনে মাদকের গডফাদারদের ধরার সুযোগ ছিল না। শিগগিরই এ আইন পাশ হবে। ’ যোগ করেন মো. ফরিদ উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী।

দেশে ইয়াবা প্রবেশের প্রদান রুট কক্সবাজারকে নিয়ে মাদক নির্মূলে বিশেষ জোন করার পরিকল্পনা রয়েছে জানিয়ে সরকারের ঊর্ধ্বতন এ কর্মকর্তা বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে চলমান অভিযান নিয়মিত চলবে।

মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেন, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) আমেনা বেগম, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সর পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) মেজর একেএম শাকিল নেওয়াজ, কারা উপ-মহাপরিদর্শক পার্থ গোপাল বণিক, জেলা পুলিশ সুপার নুরেআলম মিনা, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক মজিবুর রহমান পাটোয়ারী, বহিরাগমন ও পাসপোর্ট বিভাগের উপ পরিচালক জাকির হোসেন নোমানসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকতারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৪ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০১৮
এসকে/টিসি

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad