ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

বন্ধুর ফাঁদে পড়ে ছিনতাইকাজে ২ কলেজছাত্র!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৫ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০১৮
বন্ধুর ফাঁদে পড়ে ছিনতাইকাজে ২ কলেজছাত্র! দুই কলেজ ছাত্র মো. সাইদুর রহমান নিয়াজ (২০) ও মো. জামাল উদ্দিন অন্তর (২০)।

চট্টগ্রাম: বন্ধুর ফাঁদে পড়ে ছিনতাইকাজে জড়িয়ে পড়ে দুই কলেজ ছাত্র মো. সাইদুর রহমান নিয়াজ (২০) ও মো. জামাল উদ্দিন অন্তর (২০)।

মঙ্গলবার (১০ জুলাই) বিকেলে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহনাজ রহমানের আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে এমন তথ্য দিয়েছেন বলে জানিয়েছে আদালত সূত্র।

গত ১০ এপ্রিল নগরের লালদীঘি জেল রোডে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় সোমবার রাতে তাদের দুইজনকে গ্রেফতার করে কোতোয়ালী থানা পুলিশ।

মঙ্গলবার বিকেলে এ ছিনতাইয়ের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে তারা উল্লেখ করেন, গত ১০ এপ্রিল বন্ধু অন্তর ফোন দিয়ে নিয়াজকে তার বাসায় যেতে বলে।

কেননা তারা দুজনেই একসঙ্গে কলেজে যায়। এরপর নিয়াজ অন্তরকে বলে সিরাজদৌল্লা রোডে তার বন্ধু জিসানের বাসায় যেতে। সেখানে গেলেও দুজনের কারো কলেজ-ব্যাগ ছিল না। সেখান থেকে জিসানসহ তিনজনে ১ নম্বর বাসে উঠে জেল রোডে চলে যায়। সেখানে নিয়াজ চারজন ছেলের সাথে জিসান ও অন্তরকে পরিচয় করিয়ে দেয়। যদিও বা জিসানসহ কারো সাথে তাদের পূর্ব পরিচয় ছিল না। তখন জিসান নিয়াজকে বলে রিকশায় করে একজন মুরব্বী আসবে তাকে মারতে হবে। একথা শুনে অন্তর আর নিয়াজ অবাক। এর পরপরই ওখানে তাদের সঙ্গে যোগ দেয়া দেলোয়ার, শওকত, রাশেদ হৃদয়সহ জিসান রিকশায় করে আসা মুরুব্বিটাকে নামিয়ে মারতে থাকে। তখন নিয়াজ আর অন্তর পিছনে দাঁড়িয়ে ছিল। হঠাৎ জিসান ওই লোক থেকে একটি ব্যাগ কেড়ে নিয়ে নিয়াজের হাতে দিয়ে দৌঁড়াতে বলে। তখনও সে জানতো না ব্যাগে কী আছে। দৌঁড় দিয়ে টেরিবাজার হয়ে একটি মন্দিরের সামনে চলে যায় নিয়াজ। তখন তার পেছন পেছন জিসান ও অন্তর দৌঁড় দেয়। তখন তিনজন লোক নিয়াজকে জিজ্ঞেস করে তুমি কে? তখন সে ভয়ে কাঁপছিল। লিটন কাকু নামে একজন নিয়াজের ব্যাগে কী আছে জানতে চাইলে উত্তর দিতে না পারলে তারা ব্যাগ খুলে দেখেন সব টাকা। পরে তারা নিয়াজকে আটকে রাখলেও ওই সময়ে জিসান ফয়সালরা নিয়াজকে অনবরত ফোন দিতে থাকে। তাদের বিষয়টি জানালে তখন লিটন কাকু নামের স্থানীয় একজন নিয়াজের মোবাইল থেকে ফয়সালের সাথে কথা বলেন। ফয়সালের খালাতো ভাই কামরুজ্জামানের কথা বলে ছাড়িয়ে নিয়ে ফয়সালের মোটরসাইকেল করে নিয়াজকে আন্দরকিল্লায় নামিয়ে দিলে সে চকবাজার দেবপাহাড়ের বাসায় চলে যায়।

কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন বাংলানিউজকে বলেন, দুই কলেজছাত্র না জেনেই বন্ধুর ডাকে ঘুরতে বের হয়ে ছিনতাইয়ে জড়িয়ে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন। অন্ধবিশ্বাসে তাদের আরেক বন্ধু জিসানের ডাকে সাড়া দিয়ে ‘কাজে’ (ছিনতাই) বের হলেও তারা জানতেন না কী সেই কাজ! তাদের বন্ধু জিসানের সহযোগীদের মাধ্যমে সংঘটিত ছিনতাইয়ের টাকা নিয়ে পালিয়ে গেলেও নিজেরাই স্থানীয় অন্য গ্রুপের হাতে পড়ে ছিনতাইকৃত টাকাসহ আটক হয়েছিল। কিন্তু সেই ছিনতাইকারি চক্রের একজন ‘বড়ভাই’ এসে তাদের অন্য গ্রুপ থেকে টাকাসহ উদ্ধার করলেও ঘটনার দুই মাস পর ঠিকই পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে সেই দুই কলেজছাত্র।

এ গ্রুপের অন্যদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান চলছে বলে জানান ওসি মোহাম্মদ মহসীন।

বাংলাদেশ সময়: ২২১০ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০১৮

এসকে/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।