চসিকে প্রতিবছর যেমনি বাড়ছে বাজেটের আকার, তেমনি বাড়ছে বাস্তবায়নের হারও। এরমাধ্যমে ৬০ বর্গমাইলের চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৪১ ওয়ার্ডের ৬০ লক্ষাধিক নগরবাসী এর সুফল পাচ্ছেন।
ক্রমান্বয়ে বাজেট বাস্তবায়নে সাফল্যের পেছনে একাধিক কারণ রয়েছে উল্লেখ করে চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমি প্রথম বছর যখন দায়িত্ব নিয়েছিলাম, তখন আমার অভিজ্ঞতা ছিলো সীমিত। যতই দিন যাচ্ছে আস্তে আস্তে অভিজ্ঞতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সরকারের সক্রিয় সহযোগিতা ও মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প সহায়তার কারণে চসিকের অর্জন বাড়ছে উল্লেখ সিটি মেয়র আজ ম নাছির উদ্দীন আরও বলেন, ‘সক্ষমতা বৃদ্ধি ও অভিজ্ঞতা বাড়ার কারণে মূলত প্রতিবছরেই আমরা বেশি বেশি ইনক্রিমেন্ট করতে পারছি। বাজেট বাস্তবায়নে ২০১৬-১৭ ও ২০১৭-১৮ অর্থবছরে যা অর্জন করেছি, আগামী অর্থবছরে তা ৫০ শতাংশের বেশি সফলতা অর্জন করতে পারবো। যদিও সামর্থ এবং সীমাবদ্ধতার কারণে চাহিদা অনুযায়ী অর্থ ছাড় হচ্ছে না। ’
অর্থ ছাড়টা বৃদ্ধি হলে আমাদের অর্জনটা আরও বাড়তো বলেও মত প্রকাশ করেন এ নগরপিতা।
চসিকের বাজেট পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) নির্বাচনে মেয়র পদে নির্বাচিত হওয়ার পর আ জ ম নাছির উদ্দীন ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ১ হাজার ৬৩২ কোটি ৭৮ লাখ টাকার প্রথম বাজেট দেন। সেই অর্থবছরে মোট বাজেটের মধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছিলো শুধুমাত্র ৪৩৪ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। যেটি মোট বাজেটের ২৬ দশমিক ৬০ শতাংশ।
২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৫৯২ কোটি ৮৯ লাখ টাকা বেড়ে ২ হাজার ২২৫ কোটি ৬৭ লাখ টাকার দ্বিতীয় বাজেট দেন। সেই অর্থবছরে মোট বাজেটের মধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছিলো ৬৬২ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। যেটি মোট বাজেটের ২৯ দশমিক ৭৭ শতাংশ।
পরবর্তীতে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১০২ কোটি টাকা বেড়ে ২ হাজার ৩২৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকার তৃতীয় বাজেট দেন। সেই অর্থবছরে মোট বাজেটের মধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছিলো ৮৮৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। যেটি মোট বাজেটের ৩৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ।
চসিকের প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে চসিকের নিজস্ব উৎস থেকে আয় হয়েছিলো ৩৬৬ কোটি ৫১ লাখ টাকা। পরবর্তীতে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে প্রায় ৩৪ কোটি টাকা বেড়ে দাঁড়ায় ৪০০ কোটি ২৩ লাখ টাকা। প্রতিবছর বাজেটের আকার যেমনি বাড়ছে, তেমনি বাড়ছে বাস্তবায়নের হারও। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে উন্নয়ন অন্যদান ও অন্যান্য খাতে ১২টি প্রকল্পে ১ হাজার ২৯০ কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়েছিলো। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৩টি বাড়িয়ে ১৫টি প্রকল্পে ১ হাজার ৬৮০ কোটি টাকার বাজেট ধরা হয়েছে।
২০১৭-১৮ অর্থবছরের চেয়ে বকেয়া ও হাল কর এবং অভিকর খাতে এবার বাজেট বেড়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, বকেয়া ও হাল কর এবং অভিকর খাতে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বাজেট ধরা হয়েছিলো ৬৮১ কোটি ১২ লাখ টাকা। সেখানে বাস্তবায়িত হয়েছে ১৩২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে তা বেড়ে ধরা হয়েছে ৩৩৫ কোটি ৪২ লাখ ৮২ হাজার টাকা। এছাড়া উন্নয়ন অনুদান খাতে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বাজেট ধরা হয়েছিলো ১ হাজার ২৯০ কোটি টাকা। সেখানে বাস্তবায়িত হয়েছে ৪৪২ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে তা বেড়ে ধরা হয়েছে ১ হাজার ৬৮০ কোটি টাকা। এরূপ প্রত্যেক খাতে প্রতিবছর চসিকের অর্জন বাড়ছে বলেও মত প্রকাশ করেন তিনি।
২৪২৫ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা চসিকের
বাংলাদেশ সময়: ২১৪০ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০১৮
এসবি/টিসি