রোববার (০৮ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতির মাধ্যমে ক্যাব নেতারা এ উদ্বেগের কথা জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, বেসরকারি চিকিৎসক সমিতির ব্যানারে কোন প্রকার ঘোষণা ছাড়াই বেসরকারি ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও প্রাইভেট প্র্যাকটিসসহ সকল চিকিৎসা কার্যক্রম বন্ধ করে র্যাবের অভিযান বন্ধে আল্টিমেটাম দিয়ে চট্টগ্রামের সকল চিকিৎসকের ব্যক্তিগত চেম্বার, বেসরকারি ক্লিনিক, প্যাথলজিক্যাল ল্যাবে অনির্দিষ্টকালের জন্য সকল চিকিৎসা বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
নেতারা বলেন, র্যাব দেশের সাধারণ জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে বিতর্কিত ম্যাক্স হাসপাতালে অভিযান পরিচালনা করেন এবং ব্যাপক অনিয়ম পান, সে কারণে তাদেরকে শাস্তি প্রদান করা হয়।
নেতারা শিগগিরই লাখ লাখ রোগীকে জিম্মি করে এ ধরনের অনৈতিক, অন্যায্য, অযৌক্তিক ও অমানবিক কর্মকাণ্ড পরিহার করে সকল বেসরকারি চিকিৎসক ও ক্লিনিক মালিকদেরকে আইনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সরকারের কাছে প্রতিকার চাওয়ার পরামর্শ দিয়ে অবৈধ ধর্মঘট প্রত্যাহারের দাবি করেন।
সাধারণ জনগণকে জিম্মি করে বেসরকারি ক্লিনিক, চেম্বার, প্যাথলজি ল্যাব ও সকল চিকিৎসা বন্ধের ঘোষণায় হতাশা প্রকাশ করে ক্যাব নেতারা রোগীদেরকে জিম্মি করে র্যাবের অভিযানকে নসাৎ করার হীন ষডযন্ত্র পরিহার করারও আহ্বান জানান।
গুটি কয়েক অসাধু লোকের অর্থ লিপসার কারণে চেম্বার ও ক্লিনিক বন্ধে সকল চিকিৎসকের একযোগে অঘোষিত ধর্মঘট চিকিৎসকের মহান পেশাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে এবং চিকিৎসকরা আইনের উর্ধ্বে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বলেও মত প্রকাশ করেন এবং এ ধরনের আত্মঘাতি কর্মসূচি থেকে সরে আসারও আহবান জানিয়েছেন তারা।
ক্যাব নেতারা আরও বলেন, চিকিৎসাসেবা একটি মহান পেশা। সেবাধর্মী পেশা হলেও বর্তমানে কিছু অসাধু চিকিৎসক ও ক্লিনিক মালিকদের কারণে এ মহান পেশাকে কাজে লাগিয়ে দিনে দিনে কোটিপতি হবার বাসনায় লিপ্ত। সেই কারণে রোগীর সেবা, মানবতার সেবার চেয়ে অর্থই তাদের কাছে মূখ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক ও সুযোগ-সুবিধা থাকলেও রোগীরা সেখানে ন্যূনতম চিকিৎসাসেবা পাচ্ছে না। রোগীদের ক্লিনিক ও চেম্বারে যেতে পারমর্শ প্রদান করা হয়। আর যে কোন মানুষ রোগাক্রান্ত-রোগী হলেই আগে পরামর্শ দেয়া হয় প্যাথলজিকাল টেস্ট ও অপারেশনের। কারণ এতে চিকিৎকদের লাভ বেশি। যার কারণে প্যাথলজিক্যাল ল্যাবগুলো ব্যাঙের ছাতার মতো শহর, গ্রাম সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। আর ক্লিনিকগুলো নামমাত্র সেবা দিয়ে গলা কাটা বিল আদায় করছে। বিএমএসহ সরকার ও বিরোধীদলের সমর্থিত চিকিৎসকদের পেশাজীবী সংগঠনগুলির দৌরাত্ম একচেটিয়া প্রভাবের কারণে এখানে রোগীদের মানসম্মত সেবা নিশ্চিত করতে সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগের কোন প্রকার নজরদারি করার সাহস পর্যন্ত নেই। ফলে মানুষ অসহায় হয়ে পার্শ্ববর্তী দেশে চিকিৎসার জন্য ভিড় জমায়।
ক্যাব নেতারা স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সেক্টরে এ ধরণের নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য ক্লিনিক, প্যাথলজিকাল ল্যাবসহ স্বাস্থ্য বিভাগের সকল প্রতিষ্ঠানে কঠোর নজরদাবির দাবি জানান। স্বাস্থ্য সেক্টরে কমিশন প্রথা, উপহার প্রথা বাতিলসহ ভোক্তা স্বার্থ রক্ষায় কঠোর আইনী প্রতিকার এবং সিবিএ সংগঠনের মতো বিএমএর অযাচিত হস্তক্ষেপ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণের দাবি জানান।
বিবৃতিতে ক্যাব কেন্দ্রিয় নির্বাহী কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব মহানগরের সভাপতি জেসসিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, ক্যাব দক্ষিণ জেলার সভাপতি আবদুল মান্নান ও ক্যাব যুব গ্রুপের সভাপতি চৌধুরী কেএনএম রিয়াদ প্রমুখ সই করেন।
অভিযানের মুখে হঠাৎ স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ ঘোষণা চট্টগ্রামে
সেই ম্যাক্স হাসপাতালকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা
দুই বছর লাইসেন্সবিহীন ম্যাক্স হাসপাতালের ফার্মেসি
বাংলাদেশ সময়: ১৯১২ ঘণ্টা, জুলাই ০৮, ২০১৮
এসবি/টিসি