সোমবার (২৫ জুন) বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে সমর চৌধুরীর মেয়ে অলকানন্দা চৌধুরী এ আকুতি জানান।
অলকানন্দা চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, কারাগারে বাবা খুব অসুস্থ।
অলকানন্দা চৌধুরী বলেন, আমার বাবাতো কোনো অপরাধী নয়। ষড়যন্ত্র করে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ সঞ্জয় দাশের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে আমাদের পরিবারকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে।
তিনি বলেন, রোববার কারাগার থেকে বাবা জামিন পাবেন আশা করেছিলাম আমরা। কিন্তু আদালত বাবাকে একটি মামলায় জামিন দিলেও অন্য মামলায় জামিন দেননি।
রোববার (২৪ জুন) শুনানি শেষে ইয়াবার মামলায় জামিন পেয়েছেন সমর কৃষ্ণ চৌধুরী তবে অস্ত্র উদ্ধারের মামলায় তাকে জামিন দেননি আদালত।
বোয়ালখালী উপজেলার সারোয়াতলী গ্রামের সমর কৃষ্ণ চৌধুরীকে গত ২৮ মে ‘অস্ত্র ও ইয়াবা উদ্ধারের’ মামলায় আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় বোয়ালখালী থানা পুলিশ।
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক সঞ্জয় দাশের সঙ্গে বিরোধের জেরে বোয়ালখালী থানা পুলিশ সমর কৃষ্ণ চৌধুরীকে চট্টগ্রাম নগর থেকে তুলে নিয়ে মাদক ও অস্ত্র দিয়ে মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ করে আসছে তার পরিবার।
অলকানন্দা চৌধুরী বাংলানিউজকে অভিযোগ করেন, ২৭ মে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে চট্টগ্রাম নগরের জহুর হকার্স মার্কেটের সামনে থেকে সমর চৌধুরীকে তুলে নিয়ে যায় বোয়ালখালী থানা পুলিশ। পরদিন ২৮ মে সকালে ৩১০ পিচ ইয়াবা ও একটি একনলা বন্দুক হাতে ধরিয়ে দিয়ে ছবি তুলে। ইয়াবা ও অস্ত্র উদ্ধারের মামলা দিয়ে জেলে পাঠায় বাবাকে।
পরে সমর চৌধুরীর সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে সমালোচনার ঝড় উঠে। বাংলানিউজের অনুসন্ধানে উঠে আসে সমর চৌধুরীকে মামলায় ‘ফাঁসানোর’ নেপথ্যে।
জানা যায়, স্থানীয় স্বপন দাশের সঙ্গে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত ব্রিটিশ নাগরিক সঞ্জয় দাশের। এ নিয়ে তাদের মধ্যে আদালতে মামলা মোকাদ্দমাও হয়। স্বপন দাশের বাল্য বন্ধু আও্য়ামী লীগ নেতা সমর কৃষ্ণ চৌধুরী। সমর কৃষ্ণ চৌধুরী আইনজীবীর সহকারী হিসেবে চট্টগ্রাম জর্জ কোর্টে কাজ করেন। স্বপন দাশ যখন সম্পত্তি নিয়ে বিপদে পড়ে তখন তার পাশে দাঁড়ায় সমর কৃষ্ণ চৌধুরী। তিনি স্বপন দাশকে আ্ইনজীবী দেখিয়ে দেন। পরে স্বপন দাশের কাছ থেকে জমি ক্রেতা তাহের মিয়া আদালতে সঞ্জয় দাশ বিরুদ্ধে মামলা করেন। তখন সঞ্জয় দাশ এর পিছনে ইন্দনদাতা হিসেবে সমর চৌধুরীকে সন্দেহ করেন। গত বছরের নভেম্বরে সমর চৌধুরীর চট্টগ্রাম নগরীর নন্দনকাননের বাসায় গিয়ে এ বিষয়ে কথা না বলতে হুমকিও দিয়ে আসে বলে অভিযোগ সমর চৌধুরীর পরিবারের। পরে সমর চৌধুরীকে একটি ইয়াবার মামলায় জড়িয়ে দেন। সর্বশেষ ২৭ মে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে চট্টগ্রাম নগরের জহুর হকার্স মার্কেটের সামনে থেকে সমর চৌধুরীকে তুলে নিয়ে যায়। পরদিন ২৮ মে সকালে ৩১০ পিচ ইয়াবা ও একটি একনলা বন্দুক উদ্ধারের মামলা দিয়ে জেলে পাঠায় সমর চৌধুরীকে।
অলকানন্দা চৌধুরী বলেন, আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি এবং এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
অলকানন্দা চৌধুরী বলেন, আমাদের কোথাও ভরসা নেই। কারণ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাদের পক্ষে। এখন বাবার মুক্তির ব্যাপারে মামনীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫০ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০১৮
এসকে/টিসি