ঢাকা, শুক্রবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

‘মৃত্যুর পর’ পাওয়ার অব অ্যার্টনি নিয়ে বিতর্কিত মওদুদ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১৮ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০১৮
‘মৃত্যুর পর’ পাওয়ার অব অ্যার্টনি নিয়ে বিতর্কিত মওদুদ চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন ড. হাছান মাহমুদ। ছবি: উজ্জ্বল ধর

চট্টগ্রাম: আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এমপি বলেছেন, ‘একজন অস্ট্রিয় মহিলার মৃত্যুর তিন মাস পর পাওয়ার অব অ্যার্টনি নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ গুলশানে বাড়ির মালিক হয়ে যান। পরবর্তীতে সেই বাড়িটি সর্ব্বোচ্চ আদালতের রায়ে তিনি ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন। এসব বিষয়টি নিয়ে তিনি মানুষের কাছে বিতর্কিত।’

রোববার (১৭ জুন) বিকেলে নগরের চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদকে উদ্দেশ্য করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে তিনি মনগড়া কিছু অভিযোগ ও মিথ্যাচার করেছেন।

তার পারদর্শীতা আছে তিনি সন্দুর করে গুছিয়ে মিথ্যে বলতে পারেন। সেই কারণে তিনি সমস্ত স্বৈরাচার সরকারের প্রিয়ভাজন ছিলেন।
তিনি জিয়াউর রহমানের সময় উপ-প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। এরশাদ সাহেবের সময়কালে প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। পরে রাষ্ট্রপতির দায়িত্বও দিয়ে ছিলেন। বঙ্গবন্ধু যখন রাষ্ট্র ক্ষমতায় তখন ব্যারিস্টার মওদুদের দুর্নীতির অভিযোগে শাস্তি হয়েছিলো। পরবর্তীতে পল্লীকবি জসীম উদ্দিনের অনুরোধের প্রেক্ষিতে তার শাস্তি মওকুফ করেন বঙ্গবন্ধু। আপনার হয়তো অনেকে জানেন না, তিনি পল্লীকবির মেয়ের জামাই। তিনি বহু আগে থেকেই একজন বিতর্কিত মানুষ। তার ভূমিকা তার দলের মধ্যেই প্রশ্নবিদ্ধ। তার আচরণ তার দলের নেতা্রাই বিশ্বাস করেন না। ’

তিনি আরও বলেন, ‘পত্র-পত্রিকায় দেখেছি, বেগম জিয়ার পক্ষে বিএনপি যে আইনি লড়াই করছে। সেই আইনজীবী প্যানেল থেকেও মওদুদ আহমেদকে বাদ দেওয়া হয়েছে। বেগম জিয়া বলেছেন তাই। তার নির্বাচনী এলাকায়ও তিনি বিতর্কিত। বিএনপি ও খালেদা জিয়াকে নিয়েও তার ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। যেভাবেই হোক তিনি দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন। সেই প্রেক্ষিতে তার নিরাপত্তা দেওয়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব। কোম্পানিগঞ্জে গতকাল ঈদের দিন তার সামনেই নেতাকর্মীরা মারামারি করছে। তার কারণে বিএনপিতে সেখানে কয়েকভাগে বিভক্ত। যখন একজন নেতার সামনে তার দলের নেতারাই মারামারি করে, তখন তাকে সহযোগিতা করা তো দায়িত্ব। তখন আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর পক্ষ থেকে সেখানে অবস্থান নেওয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আর সেই দিনই তিনি কাহিনী সাজিয়েছেন। মওদুদ সাহেব রাজনীতির পাশাপাশি ছোট গল্পও লিখতে পারেন। বেগম জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়েও তিনি পরামর্শ দিয়েছেন। এতে মনে হয়েছে মওদুদ সাহেব ব্যারিস্টারের পাশাপাশি ডাক্তারিও জানেন। ’   

হাছান মাহমুদ আরও বলেন, ‘তিনি অনেক বড় ব্যারিস্টার। আমার মনে হয় বাংলাদেশে ওনার মতো বড় ব্যারিস্টার অতীতেও ছিলো না, ভবিষ্যতেও হবে না। গুলশানের বাড়ি সর্ব্বোচ্চ আদালতের রায়ে তিনি ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন। সেই বাড়িটি একজন অস্ট্রিয় মহিলা নাগরিকের। ওই মহিলার নাম ইনজে মারিয়া। ইনজে মারিয়ার মৃত্যুর তিন মাস পরে সই করা পাওয়ার অব অ্যার্টনি সাবমিট করে ব্যারিস্টার মওদুদ সাহেব ওই বাড়ির মালিক হয়ে যান। ’

‘যেই ব্যারিস্টার মানুষের মৃত্যুর পর পাওয়ার অব অ্যার্টনি নিতে পারেন, তিনি তাহলে অনেক বড় ব্যারিস্টার। এরকম ব্যারিস্টার অতীতেও ছিলো না, ভবিষ্যতেও হবে কি না আমার মনে হয় না। ’ যোগ করেন ড. হাছান মাহমুদ।

তিনি আরও বলেন, ‘ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ এসমস্ত কারণে দলের কাছে বিতর্কিত। মানুষের সামনে মুখ দেখাতে পারছেন না। সেই বিতর্ক থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য আমাদের দলের (বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ) সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে কিছু মনগড়া অভিযোগ উত্থাপন করেছেন। ’

‘আমি ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের প্রতি অনুরোধ জানাবো, এ সমস্ত মিথ্যা অভিযোগ উপস্থাপন করে কোন লাভ নেই। বরং সারাজীবন আপনাকে নিয়ে যে বিতর্ক এবং রাজনীতির মাঠে বিতর্কিত ভূমিকার জন্য আপনি জনগণের কাছে ক্ষমা চান। ’

সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, উপ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক রাষ্ট্রদূত নুরুল আলম চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৬ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০১৭
এসবি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।