এদিকে, সমুদ্রে লঘুচাপের কারণে গত ৩ তিন ধরে ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। এর পাশাপাশি দিনে দুইবার জোয়ারের পানি এসে বাদুরতলা এলাকায় জলাবদ্ধতা চরম আকার ধারণ করেছে।
জলাবদ্ধতার কারণে পবিত্র এ রমজান মাসে বাদুরতলা এলাকার শত বছরের পুরনো জঙ্গীশাহ আল কোরাইশী (র.) মসজিদে মুসল্লীরা নামাজ আদায় করতে যেতে খুব দুর্ভোগে পড়েছেন।
ইলিয়াছ নামে বাদুরতলা এলাকার এক বাসিন্দা বাংলানিউজকে বলেন, বৃষ্টি হলেই এ এলাকায় পানি ওঠে যায়। অনান্য এলাকায় সড়ক সম্প্রসারণ ও উচূ করা হলেও মাজারগেটের সড়কে তেমন কোন কাজ হয়নি। যদিও মাঝে মধ্যে লোভ দেখানো নালা পরিষ্কার করা হয়। বাদুরতলা সংলগ্ন চাকতাই খালের ওপর বর্ষার আগ থেকে ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু করেছে। ব্রিজ নির্মাণের জন্য কাটা হয়েছে খালের পাড়। সেই পাড় দিয়ে জোয়ার পানি এলাকা ঢুকে পড়ছে। বৃষ্টি আর জোয়ারের পানি এলাকার অলি-গলিতে ঢুকে পড়ছে। তিন ধরে পানিবন্দি এ বাদুরতলা এলাকা। দেখার যেন কেউ নেই।
বাদুরতলা এলাকার ওসমান আলী শাহ বাংলানিউজকে বলেন, বর্ষাকাল আসলেই আমাদের দুর্ভোগের শেষ থাকে না। বৃষ্টি হলেই বাদুরতলা এলাকায় পানি ওঠে যায়। এবারের বিষয়টি ভিন্ন। টানা বৃষ্টি আর জোয়ার পানি এসে পুরো সড়ক জুড়েই জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। দিন ধরেই সড়কে হাঁটু থেকে কোমর সমান পানি জমে আছে। একদম কমছে না। জোয়ারের সময় পানি আরও বেড়ে যায়। মসজিদে নামাজ আদায় করতে পর্যন্ত যেতে পারছি না। যেহেতু রাস্তায় কোমর সমান পানি। এমনকি অনকে বাসা-বাড়িতে পোনি ঢুকে পড়েছে। তিন দিন ধরে খুব কষ্টে আছি।
সাকিব নামে এক ব্যবসায়ী বাংলানিউজকে বলেন, পুরো সড়কে পানি আর পানি। লোকজন বাসা-বাড়ি থেকে বেরও হতে পারছে না। সড়কে কোমর সমান পানি জমেই আছে। সামনে ঈদ দোকানের জন্য মালামাল কিনে আনতে পারছি না। জলাবদ্ধতার কারণে আমাদের ব্যবসায়িক অনেক ক্ষতি হচ্ছে। বেচাকেনা কমে গেছে। এলাকার পানি নিষ্কাষণে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের কাছে অনুরোধ জানান তিনি।
বৃষ্টি আর জোয়ারের পানিতে জলাবদ্ধাতা দেখা দিয়েছে জানিয়ে ৮ নম্বর শুলকবহর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. মোরশেদ আলম বাংলানিউজকে বলেন, ‘বৈরী আবহাওয়ার কারণে ভারী বর্ষণ হচ্ছে। বৃষ্টি আর জোয়ার পানিতে বাদুরতলা জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। চাকতাই খালের ওপর ৩টি নিচু ব্রিজ ছিলো। যেগুলো পানি চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতো। জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি দিতে সিটি মেয়রের নির্দেশনায় সেই ব্রিজ তিনটি উঁচু করে নির্মাণ করা হচ্ছে। ব্রিজ নির্মাণের কাজ দ্রত সময়ের মধ্যে শেষ করতে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে ইতিমধ্যে বেশ কয়েকবার বলা হয়েছে। নির্মাণকাজ শেষ হলে আশা করি এসব এলাকায় জলাবদ্ধতা অনেকাংশে কমে যাবে। ’
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে জলাবদ্ধতা নিরসনের দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের নয়। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) দায়িত্ব। প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ৫ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প সেনাবাহিনীর মাধ্যমে সিডিএ দেখভাল করছে। সেই অনুসারে বর্ষার আগে চাকতাই ও বির্জাখাল খনন-পরিষ্কার করার জন্য আমি বেশ কয়েকবার সিডিএ চেয়ারম্যানকে অনুরোধ করেছি। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৮ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০১৮
এসবি/টিসি