বিষয়টি নিশ্চিত করে পাঁচলাইশ থানার এসআই মো. আজিজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘নবজাতক চুরির অভিযোগে পিপলস হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, ভূক্তভোগী পরিবারের সাথে কথা বলেছি। সকালে এক মায়ের জমজ নবজাতক জন্ম হলেও একটি ছিলো মৃত।
এর আগে মঙ্গলবার (২২ মে) ভোরে নগরের পুরাতন চান্দগাঁও থানা এলাকার মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসীর স্ত্রী আমেনার (২৬) প্রসব বেদনা শুরু হলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পূর্ব পাশে বেসরকারি পিপলস হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
পরে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে সিজিরিয়ানের মাধ্যমে দু‘টি জমজ নবজাতক জন্মগ্রহণ করে। এরমধ্যে একটি ছেলে, আরেকটি মেয়ে। কিন্তু জন্মের পর হাসপাতাল থেকে জানানো হলো মেয়ে শিশুটি জীবিত হলেও ছেলে সন্তানটি মৃত। জীবিত অবস্থায় মেয়ে শিশুটিকে দেওয়া হলেও মৃত ছেলে শিশুটির মুখ মা’কে না দেখিয়ে হাসপাতালের আয়া ডাস্টবিনে ফেলে দিয়েছিলো।
পরে জন্মদাত্রী মা যখন মৃত ছেলে সন্তানটির মুখ দেখতে চান, তখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গড়িমসি করেন। পরবর্তী ভূক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা পাঁচলাইশ থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন।
থানার এসআই মো. আজিজুর রহমান বলেন, ‘অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা পিপলস হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও ভূক্তভোগী পরিবারের সঙ্গে আলোচনায় বসি এবং হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করি। সেখানে হাসপাতালের আয়া নবজাতকটি ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়ার তথ্য ওঠে আসে। ’
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের ডেপুটি গর্ভনর আমিনুল হক বাবু বাংলানিউজক বলেন, একটি ঘটনা হওয়ার পর প্রয়োজনীয় শাস্তিকর ব্যবস্থা না নিলে আর একটি ঘটনার জন্ম দেয়। সম্প্রতি চট্টগ্রামের হাসপাতালগুলোতে একের পর এক নৈরাজ্য আমরা দেখতে পাচ্ছি। চাইল্ড কেয়ার হাসপাতালে বাচ্চা বদলের ঘটনার এখনো রেশ কাটেনি। আমি মনে করি হাসপাতালগুলোতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের কড়া নজরদারি বাড়ানো দরকার। একই সাথে হাসপাতালে মালিকপক্ষের উদ্যোগে কর্মরত ডাক্তার এবং নার্স ও আয়াদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা জরুরি বলেও মত প্রকাশ করেন তিনি।
পিপলস হাসপাতালের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. আহাদ বাংলানিউজকে বলেন, ‘বিশেষজ্ঞ একজন চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে হাসপাতালে এক প্রসূতি ভর্তি হয়েছিলেন। পরে সিজারিয়ানের মাধ্যমে জমজ নবজাতক জন্মগ্রহণ করে। তবে জন্মজাত নবজাতকের মধ্যে মেয়ে শিশুটি জীবিত হলেও ছেলে শিশুটি মৃত এবং অর্ধ-গলিত। ’
মৃত ছেলেটি পরিবারকে জানানো হয়েছিলো দাবি করে ডা. আহাত বলেন, ‘হাসপাতালের আয়া পরিবারকে জানিয়ে মৃত নবজাতকটি ডাস্টবিনে ফেলে দিয়েছিলো। যেটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও জানে না। পরে পরিবারের অভিযোগে নবজাতকের মরদেহ উদ্ধার করে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। ’
তবে মৃত মরদেহটি ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়া অযৌক্তিক বলে মন্তব্য করে আমিনুল হক বাবু বলেন, ‘নবজাতকের মরা মুখটি মা’কে দেখানোর পর পরবর্তী কার্যক্রম পরিবারই নিতো। হাসপাতাল থেকে কেন মরদেহটি ডাস্টবিনে ফেলা হবে। যেটি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।
জমজ নবজাতকের একটি ‘নিখোঁজ’ পিপলস হাসপাতালে
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫০ ঘণ্টা, মে ২১, ২০১৮
এসবি/টিসি