হাঁড়ির আকার বুঝে দইয়ের দাম। কোনোটা ২৫০ টাকা।
নগরের চকবাজার গোলজার মোড়ে মহিষের দধিঘরের চিত্র এটি। ষাটোর্ধ্ব মোহাম্মদ মোস্তফা ৩৩ বছর ধরে ওই দোকানে দই বিক্রি করছেন।
রমজানে দইয়ের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় মোস্তফার দোকানে বিক্রিও বেশি। বিয়েশাদি মিলে যদিও সারা বছরই দইয়ের চাহিদা থাকে। এখন গড়ে প্রতিদিন ৮০-৯০ হাঁড়ি দই বিক্রি হচ্ছে।
মোহাম্মদ মোস্তফা বাংলানিউজকে জানান, দক্ষিণ হাতিয়ায় তার নিজস্ব মহিষের খামার আছে। সেখান থেকে সংগ্রহ করে ৩৩ বছর ধরে হাঁড়িতে ভরে দই বিক্রি করছেন।
দই কিনতে আসা একজন মোস্তফাকে বললেন, ‘দেখবেন দইটা যেন ভাল হয়!’
এ কথা বলার পর মোস্তফা মাঝারি হাঁড়িটা নিয়ে চামচ দিয়ে নেড়ে দিলেন। হেসে উঠলেন ওই ভদ্রলোক। বিস্ময় সুরে বললেন, ‘করেন কী!’
দোকানি নির্বিকার মুখে দইয়ের হাঁড়ি চামচ দিয়ে নাড়তে নাড়তে বললেন, ‘ভাই, হাতিয়ার মহিষের দই। এক ফোঁটা পানিও পাবেন না। ’
দই কিনতে আসা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আবুল কাশেম বলেন, ‘এই দইয়ের দোকান ও মানুষটিকে (মোস্তফা) চেনেন না এরকম মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। অত্যন্ত ভালো মানের দই। আমি প্রায় ৫ বছর ধরে আংকেল (মোস্তফা) থেকে দই কিনছি। এক হাঁড়ি খাসা দই কিনে ৭ দিন রেখে খাওয়া যায়। ’
গোলজার মোড়ের বাসিন্দা নয়ন কান্তি কর। তিনিও এ দোকান থেকে দই কিনতে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘স্বাদের বিচারে হাতিয়ার এ দই অনন্য। ’
মো্হাম্মদ মোস্তফা বাংলানিউজকে বলেন, এ দোকানের বয়স এখন ৩৩ বছর। কেমন জানি মায়া লেগে গেছে। লাভের জন্য না, মানুষের ভালোবাসা ও কিছু পরিচিত মুখের কারণে এ পেশা ছাড়তে পারছি না। তাদের ভালো মানের দই দিতে পারলে শান্তি লাগে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪০ ঘণ্টা, মে ২১, ২০১৮
জেইউ/টিসি