মিনিট দশেক পরেই এসব প্লেট একটি একটি করে সব মুসল্লির হাতে পৌঁছে দেওয়ার তোড়জোর। মুসল্লিদের কাতারে ধনাঢ্য ব্যবসায়ী যেমন আছেন, তেমনি দিনমজুরের সংখ্যাও কম নয়।
এ দৃশ্য নগরের প্রায় ৩৬০ বছরের ঐতিহ্যবাহী আন্দরকিল্লা শাহি জামে মসজিদের।
শুক্রবার (১৮ মে) বিকেলে মুসল্লিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে ইফতার করতে আসেন আন্দরকিল্লা মসজিদে। তাদের বিশ্বাস বেশি মানুষ একসঙ্গে বসে ইফতার করলে সওয়াব যেমন বেশি পাওয়া যাবে, তেমনি সবাই মিলে আল্লাহর কাছে দোয়া করলে তা কবুল হবেই।
নগরের রেল স্টেশন থেকে ইফতার করতে এসেছিলেন দিনমজুর রাসেল। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, সারাদিন স্টেশন চত্বরে কাজ শেষে বিকেলে মসজিদে এসে আসরের নামাজ আদায় করেছি। এরপর এখানেই সবার সঙ্গে ইফতার করতে বসেছি। ৭ বছর ধরেই আন্দরকিল্লা মসজিদে ইফতার করার কথা জানান রাসেল।
বাশঁখালী থেকে আসা স্কুলশিক্ষক তৌহিদুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, কয়েক বছর ধরেই রমজানে সময় পেলে এখানে আসি। হাজারো মানুষের সঙ্গে বসে ইফতার করতে ভালো লাগে। ইফতারের আগে সবাই মিলে দু’হাত তুলে দোয়া করলে আমার বিশ্বাস সে দোয়া কবুল হবেই।
জানা গেছে, প্রায় এক যুগ আগে আন্দরকিল্লা শাহি মসজিদে মক্কা ও মদিনা শরিফের আদলে মুসল্লিদের জন্য ইফতার আয়োজনের উদ্যোগ নেন মসজিদের খতিব মাওলানা সাইয়্যেদ আনোয়ার হোসাইন তাহির জাবিরী আল মাদানী। এরপর থেকেই আন্দরকিল্লা মুসল্লি পরিষদ ইফতারের সার্বিক দিক পরিচালনা করে। নগরের ধনাঢ্য ব্যক্তিদের অনেকেই সেখানে আর্থিক সাহায্য দেন।
খতিবের সহকারী হাসান মুরাদ বাংলানিউজকে বলেন, হুজুরের তত্ত্বাবধানে ২০০৮ সাল থেকেই বড় আকারে ইফতারের আয়োজন করা হচ্ছে আন্দরকিল্লা শাহি মসজিদে। মক্কা ও মদিনা শরিফের আদলে রোজাদারদের জন্য মসজিদের করিডোরে এ আয়োজন থাকে।
আন্দরকিল্লা মুসল্লি পরিষদের সদস্য শহিদ হোসাইন বাংলানিউজকে বলেন, প্রথম ধাপে প্রায় দেড় হাজার মানুষের ইফতারের আয়োজন করা হয়েছে এবার। রোজার শেষ দিকে তা বাড়িয়ে দুই-তিন হাজার মানুষের জন্য ইফতারের আয়োজন করা হবে।
ইফতার সরবরাহ করতে ১২ জন খাদেম এবং রান্না করতে ১০ জন বাবুর্চি রমজান মাসজুড়ে কাজ করেন বলে জানান তিনি।
৩৬০ বছরের পুরনো মসজিদ, বন্ধ ছিলো ৯৪ বছর
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৫ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০১৮
এমআর/টিসি