ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

ইডিইউর যতো আড্ডাবাজ

চট্টগ্রাম প্রতিদিন ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৫ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০১৮
ইডিইউর যতো আড্ডাবাজ শিক্ষার্থীদের হাসিমাখা ছবিটার ভিতর নিজের ফেলে আসা ক্যাম্পাস জীবনের কথা মনে পড়ে যায়।

চট্টগ্রাম: পড়ালেখা আর আড্ডা। আড্ডা আর পড়ালেখা। দুটোই যেন সমানতালে এগিয়ে চলছে পাহাড়বেষ্টিত সবুজে আঁকা চট্টগ্রামের ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটিতে (ইডিইউতে)। একদিকে ক্লাস, অন্যদিকে পরীক্ষা।

প্রতিদিনের যাপিত ক্যাম্পাস জীবন। সেই সাত সকালে ঘুম থেকে ওঠা।

তারপর পিঠে ব্যাগ ঝুলিয়ে চোখ ঢলতে ঢলতে ক্লাসে ঢোকা। লেকচার শেষ করে ক্যান্টিনে চা সিঙারা।
প্র্যাকটিকাল থাকলে বাড়ি ফিরতে সন্ধ্যে।

ব্যস্তময় এতো কিছুর মাঝেও থেমে নেই আড্ডাবাজদের আড্ডা। তারুণ্যমুখর ইডিইউতে এসব আড্ডাবাজরা যেমন মেধাবী, তেমনি তাদের ঝুলিতে রয়েছে অনেক সাফল্য। চলুন দেখি আসি এসব আড্ডারুরা কোথায় কী করছেন।

পড়ুয়াদের আড্ডা: ইডিইউর দ্বি-তল লাইব্রেরিতে গেলে চোখে পড়বে এসব আড্ডাবাজদের। তাদের আড্ডার বিষয় থাকে পড়ালেখা। কোন স্যার কেমন পড়াচ্ছেন, কোন বইটি ভালো, স্কলারশীপ নিয়ে কীভাবে পড়তে যাওয়া যাবে-এসব বিষয় সারাক্ষণ ঘুরপাক খায় তাদের মননে কিংবা চিন্তায়।

অবশ্য পরীক্ষা শুরু হলে নিয়মিত পড়–য়াদের পাশে লাইব্রেরিতে আড্ডাবাজদের সংখ্যা বেড়ে যায়। তখন পুরো টেবিল জুড়েই থাকে বই আর বই।

ক্লাসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আড্ডা দিতে ভালো লাগে।  ওয়ারদা হাবিবা নামের একজন ছাত্রী বলেন, লাইব্রেরিতে বসে পড়ালেখা করার মজাই আলাদা। চারিদিকে সুনসান নীরবতা। মনোযোগ যেন বইয়ের পাতায় খেলে যায়।

সংস্কৃতিকর্মীদের আড্ডা: স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস কিংবা পয়লা বৈশাখে ইডিইউর কালচারাল ক্লাবের সদস্যরা সারাক্ষণই মাতিয়ে রাখেন সবাইকে। অন্যদিকে ডিবেট ক্লাবের সদস্যরা মেতে থাকেন যুক্তি-তর্ক নিয়ে। ট্রাম্পের নির্বাচন, ক্যাটরিনা-সালমানের সর্ম্পক, যানজট কোন কিছুই বাদ যায় না তাদের কথার ঝাপি থেকে। সোশ্যাল সার্ভিস ক্লাবের সদস্যদের দৌড়ঝাপ থাকে বছরজুড়ে। স্পোর্টস ক্লাবের খেলোয়ারদের কথা না হয় বাদ-ই দিলাম।

এদের সবারই আড্ডা ক্যাম্পাসের এমফি থিয়েটারে। কখনও জটলা হয়ে, আবার কখনও প্রাণখুলে হাসি দিয়ে তাঁরা জমজমাট করে রাখেন  ক্যাম্পাসকে।

কালচারাল ক্লাবের কনভেনার সাফা ইকবাল বলেন, সংস্কৃতি প্রেমীদের আড্ডা হয় মূলত অনুষ্ঠানকে ঘিরে। রিহার্সেল হয় সারাদিন। আমাদের  বেশির ভাগ সদস্যদের কথা হয় গান, নাটক আর সিনেমা নিয়ে।   

ক্যান্টিনে গানের আড্ডা: ইডিইউর ক্যান্টিনে ঢুকলেই শোনা যাবে ‘হাসতে দেখো, গাইতে দেখো’  জনপ্রিয় সব গান থেকে পুরনো দিনের ‘কফি হাউজের আড্ডা’ পর্যন্ত।   ভাবছেন কারা করেন এসব গান? এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী আছেন যারা বাসা থেকে বের হওয়ার সময় সঙ্গে করে গিটার কিংবা হারমোনিয়াম আনতে ভুল করেন না।

ব্যস্ চলে দিনভর আড্ডবাজি। গানেই মুক্তি, গানেই আনন্দ। কেউ কেউ তাদের আড়ালে বলে থাকেন ‘গানবাজ’। গান গেয়ে কারো থাকে প্রেয়সীর মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা, কারো নিজের বুকের ভিতর জমিয়ে রাখা নীল কষ্ট উড়িয়ে দেওয়ার বাসনা।  

এস এম উল্লাহ ফারহান নামের একজন শিক্ষার্থী বলেন, গান আর পড়ালেখা নিয়েই চলছে জীবন। সব সংগীত প্রিয় বন্ধুরা একসঙ্গে হলে আড্ডাটা দারুণ হয়!’

শিক্ষকদের আড্ডা: শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শিক্ষকরাও আড্ডা দিতে কম যান না। ইতিমধ্যে সেরা আড্ডাবাজের খেতাব পেয়ে গেছেন বেশ কয়েকজন শিক্ষক। ম্যাডামদের আড্ডার বিষয় বস্তুর বেশির ভাগই থাকে বিদেশ জীবন। অন্যদিকে স্যারদের আড্ডার একটাই কথা ‘এতো কাজ করি, বাজার করার সময়  কোথায়!’

তবে ইডিইউর প্রতিষ্ঠাতা ভাইস চেয়ারম্যান সাঈদ আল নোমানকে কাছে পেলে আড্ডা যেন বর্ষায় অন্যরুপ ধারণ করে। তখন আড্ডার বিষয়বস্তু হয়  বিদেশে স্কলারশীপ, কনফারেন্স কিংবা ইডিইউর আগামি দিনের কার্যক্রম নিয়ে।

অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ড. মোহাম্মদ রকিবুল কবির বলেন, ক্লাসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আড্ডা দিতে ভালো লাগে। শিক্ষার্থীদের হাসিমাখা ছবিটার ভিতর নিজের ফেলে আসা ক্যাম্পাস জীবনের কথা মনে পড়ে যায়।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৬ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০১৮

এসবি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।