ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চাইল্ড কেয়ারের ঘটনা তদন্তে আরও ২ কর্মকর্তা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০১৮
চাইল্ড কেয়ারের ঘটনা তদন্তে আরও ২ কর্মকর্তা পুলিশি হস্তক্ষেপে মৃত ছেলের মরদেহ ফেরত দিয়ে চাইল্ড কেয়ার থেকে নিজের কন্যাকে উদ্ধার করেন এ মা

চট্টগ্রাম: বেসরকারি চাইল্ড কেয়ারে রোকসানা আকতারের সন্তানের ভুয়া ডেথ সার্টিফিকেট, রেজিস্ট্রারে কাটাকুটি, পাঁচলাইশ থানায় করা সাধারণ ডায়েরি (জিডি) পর্যালোচনাসহ বিশদ তদন্তে যাচ্ছেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ও সিভিল সার্জন।

বৃহস্পতিবার (১৯ এপ্রিল) গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন সাংবাদিকদের সামনে উপস্থাপনের সময় নানা অসংগতি ধরা পড়লে তাৎক্ষণিক এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

মঙ্গলবার (২৪ এপ্রিল) বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের সম্মেলন কক্ষে পূর্ব নির্ধারিত সংবাদ সম্মেলনে ‘ত্রুটিপূর্ণ’ প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. এএম মজিবুল হক।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ আজিজুর রহমান সিদ্দিকী, তদন্ত কমিটির প্রধান ২৫০ শয্যার আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. অসীম কুমার নাথ প্রমুখ।

চাইল্ড কেয়ারে নবজাতক রেখে মৃত শিশুর মরদেহ ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন তুলে ধরেন ডা. এএম মজিবুল হক।                                             <div class=

ছবি: বাংলানিউজ" src="http://cdn.banglanews24.com/media/imgAll/2016October/bg/p-bg-(3)20180424184301.jpg" style="margin:1px; width:100%" />

প্রাথমিক তদন্তে শিশু চুরির ঘটনা সত্য কিনা, শিশু দুইটির চিকিৎসা যথাযথভাবে সম্পন্ন হয়েছে কিনা, মৃত ছেলে শিশুটি জীবিত মেয়ে শিশুর মায়ের কাছে হস্তান্তরের কারণ, হাসপাতাল পরিচালনার বৈধতা ও কর্তৃপক্ষের ভূমিকা তদন্ত করে দেখা হয়। যাতে চাইল্ড কেয়ার হাসপাতালের এনআইসিইউতে অসতর্কতা ও ভুলের কারণে এ অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটে বলে মন্তব্য করা হয়। একই সঙ্গে চাইল্ড কেয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে রোগী ভর্তি ও অভিভাবকদের সঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্রে আরও সতর্কতা অবলম্বন, এনআইসিইউতে ভর্তি করা শিশুর নির্দিষ্ট রেজিস্ট্রেশন নম্বর যথাযথভাবে সংরক্ষণ ও শিশু শনাক্ত করতে এর সঠিক ব্যবহার, মৃত শিশু অভিভাবকদের কাছে হস্তান্তরের সময় শিশুর নাম, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, ঠিকানা, মৃত্যু সনদপত্র ইত্যাদি যথাযথভাবে যাচাই ও দোষীদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।

বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. এএম মজিবুল হক বলেন, সাংবাদিকদের কাছে সংরক্ষিত নথিপত্র, ভিডিও ফুটেজ, পুলিশি কার্যক্রম ইত্যাদি পর্যালোচনা করে চাইল্ড কেয়ারের ঘটনাটি পুনরায় তদন্ত করা হবে। এবার তদন্ত কমিটির সঙ্গে আমি ও সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ আজিজুর রহমান সিদ্দিকীও থাকব।

ডা. অসীম কুমার নাথ এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, রোকসানা আকতার নামের ওই আমাদের বলেছেন যদি কন্যাশিশুর বদলে দেওয়া মরদেহটি আরেকটি কন্যা শিশুর হতো তবে কখনোই জানা যেত না এত বড় ঘটনাটি। বিষয়টি অনলাইন গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমেও দেখেছি।    

মঙ্গলবার (১৭ এপ্রিল) বেলা ১১টায় ফেনী থেকে আসা রোকসানা আকতার (২১) নামের এক মা’র নবজাতক কন্যাশিশুকে রেখে অপর একটি শিশুর মরদেহ দেওয়া হয়। পরে জানাজার জন্য গোসল করানোর সময় সবাই দেখতে পান সেটি ছেলে শিশু। অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করে শিশুটি নিয়ে আসা হয় চট্টগ্রামে। চাইল্ড কেয়ার কর্তৃপক্ষ ছেলে শিশুটি রোকসানা আকতারের দাবি করে অনড় থাকে। তারপর পাঁচলাইশ থানায় সাধারণ ‍ডায়েরি করেন এ মা। পুলিশ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দফায় দফায় যোগাযোগ করে ওই মাকে জানায়, ডিএনএ টেস্টের পর পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে। একপর্যায়ে বুধবার (১৮ এপ্রিল) ভোরে শিশুর মরদেহ পাঁচলাইশ থানা থেকে ফিরিয়ে নিয়ে আসে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরে আসল কন্যা সন্তান ফেরত দিতে বাধ্য হয় তারা। এরপর উদ্ধার হওয়া শিশুটি জিইসির বেসরকারি রয়েল হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করানো হয়। সেখানে তিন দিন রাখার পর শিশুর পরিবারের আর্থিক অসংগতির বিষয় বিবেচনা করে শনিবার (২১ এপ্রিল) চট্টগ্রামের সিভিল সার্জনের উদ্যোগে চমেকে নিয়ে আসা হয়।   

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০১৮
এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।