ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

এলএনজি নিয়ে মহেশখালীতে ভিড়ল ‘এক্সিলেন্স’

তপন চক্রবর্তী, ব্যুরো এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০১৮
এলএনজি নিয়ে মহেশখালীতে ভিড়ল ‘এক্সিলেন্স’ মাতারবাড়ী উপকূল থেকে তিন কিলোমিটার দূরে জাহাজটি নোঙর করে।

চট্টগ্রাম: দেশে ক্রমবর্ধমান গ্যাসের চাহিদা মেটাতে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির প্রথম চালান নিয়ে কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ীতে ভিড়েছে বিশেষায়িত জাহাজ ‘এক্সিলেন্স’।

মঙ্গলবার (২৪ এপ্রিল) বেলা দুইটায় মাতারবাড়ী উপকূল থেকে তিন কিলোমিটার দূরে জাহাজটি নোঙর করে।

বাংলানিউজকে এসব তথ্য জানান ‘এক্সিলেন্স’র স্থানীয় এজেন্ট সীকম শিপিং লাইন্স লিমিটেডের পরিচালক জহুর আহমেদ।

তিনি জানান, ২৭৭ মিটার লম্বা, ৪৪ মিটার প্রস্থ এবং ১২ দশমিক ৫ মিটার ড্রাফটের (জাহাজের পানির নিচের অংশ) এ জাহাজে রয়েছে ১ লাখ ৩৬ হাজার ঘনমিটার তরল গ্যাস।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে এত বড় জাহাজ আগে আসেনি।

এটি সবচেয়ে বড় বিশেষায়িত জাহাজ। আমেরিকান কোম্পানির জাহাজটি মধ্যপ্রাচ্যের কাতার থেকে এলএনজি নিয়ে বাংলাদেশে আসছে। এরপর এটি ব্যবহৃত হবে ফ্লোটিং স্টোরেজ অ্যান্ড রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিট (এফএসআরইউ) হিসেবে। জাহাজটি উপকূল থেকে দূরে অবস্থান করবে ভাসমান টার্মিনাল হিসেবে। ১৫ বছর বিদেশি প্রতিষ্ঠানটি জাহাজ ভাড়া পাবে। এরপর এটি বাংলাদেশ সরকারের মালিকানায় চলে আসবে।

রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের একজন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে জানান, প্রাকৃতিক গ্যাসকে শীতলকরণ (রেফ্রিজারেশন) প্রযুক্তির মাধ্যমে তাপমাত্রা কমিয়ে মাইনাস ১৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামিয়ে তরলে (এলএনজি) পরিণত করা হয়। ‘এক্সিলেন্স’ ‍জাহাজটিতে এলএনজিকে সমুদ্রের পানির উষ্ণতা ব্যবহার করে আবার প্রাকৃতিক গ্যাসে রূপান্তর করা হবে। এরপর পাইপলাইনের মাধ্যমে চট্টগ্রামসহ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হবে।

এরই মধ্যে মহেশখালী থেকে চট্টগ্রামের আনোয়ারা পর্যন্ত ৩০ ইঞ্চি ব্যাসের ৯১ কিলোমিটার পাইপলাইনের কমিশনিং (গ্যাস ঢুকিয়ে সফল পরীক্ষা) সম্পন্ন করা হয়েছে। এখন আনোয়ারা থেকে সীতাকুণ্ড পর্যন্ত ৪২ ইঞ্চি ব্যাসের আরও ৩০ কিলোমিটার পাইপলাইন নির্মাণের কাজ চলছে।

তিনি জানান, যদি সীতাকুণ্ড পর্যন্ত পাইপলাইন তৈরির কাজ শেষ না হয় তবে আপাতত এলএনজি থেকে পাওয়া গ্যাস শুধু চট্টগ্রামে সরবরাহ দেওয়া হবে।

চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাহবুবুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, চট্টগ্রামের গ্যাসসংকট নিয়ে শতবর্ষী বাণিজ্য সংগঠন চেম্বার বরাবরই সোচ্চার ছিল। বর্তমান সরকার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করেছেন। কার্যকর উদ্যোগ নিয়েছেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে কাতার থেকে জাহাজে এলএনজি গ্যাস আমদানি একটি যুগান্তকারী ঘটনা। এর ফলে শুধু চট্টগ্রাম নয়, সারা দেশের গ্যাসসংকট ক্রমে নিরসন হবে।

তিনি বলেন, গ্যাসের অভাবে অনেক কারখানা যেমন মুখ থুবড়ে পড়েছিল তেমনি অনেকে বিনিয়োগ করেও উৎপাদন ক্ষমতা সংকুচিত করেছিল। এখন তারা নির্বিঘ্নে উৎপাদনে যেতে পারবে। নতুন নতুন আন্তর্জাতিক বাজার সম্প্রসারণ হবে। বৈদেশিক আয় বাড়বে। কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।    

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০১৮
টিসি

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।