ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

ছুটির পরও ‘খোলা’ থাকে যে বিদ্যালয়

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০১৮
ছুটির পরও ‘খোলা’ থাকে যে বিদ্যালয় অরক্ষিত বিদ্যালয় ভবনটি একদিকে বখাটের আ্ড্ডাস্থল, অন্যদিকে যখন-তখন নারীদের আনাগোনাও রয়েছে। ছবি: বাংলানিউজ

চট্টগ্রাম: চারতলা ভবনজুড়ে সকাল-বিকাল চলে পাঠদান। এরপর বাজে ছুটির ঘণ্টা। কিন্তু সরকারি বিদ্যালয়টি বন্ধ হয় না। প্রায় সব কক্ষের দরজা-জানালা খোলাই থাকে। এ সুযোগে স্থানীয় লোকজন আর বখাটেদের আড্ডাস্থল হয়ে ওঠে ভবনটি।

পশ্চিম বাকলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চিত্রটা এমন। নগরের চকবাজারের কাঁচাবাজার ঘেঁষে বিদ্যালয়টির অবস্থান।

পাশে রয়েছে শ’খানেক সেমিপাকা ঘর। তারা একেবারে নিজের সম্পত্তি মনে করে বিদ্যালয়টির কক্ষ ব্যবহার করছেন।
এমনকি টয়লেট করতেও যান সেখানে। পানির কল ছেড়ে যখন-তখন পানিও সংগ্রহ করেন।

সম্প্রতি সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা গেছে, প্রধান ফটকের দরজা বলতে গেলে বন্ধই হয় না। নিচতলায় রয়েছে ৬টি কক্ষ। প্রথম দিকের তিনটি কক্ষ ওয়াশরুম ও শৌচাগার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। বড় একটি কক্ষে চলে পঞ্চম শ্রেণির পাঠদান। এ চারটি কক্ষ খোলা। শুধু বন্ধ রয়েছে পরিত্যক্ত ও গুদাম হিসেবে ব্যবহার করা কক্ষটি।

দারোয়ানের গাফিলতি ও অব্যবস্থাপনায় ক্ষুব্ধ অভিভাবকেরা।  ছবি: বাংলানিউজ

সেখানে ঘণ্টা দেড়েক দাঁড়িয়ে দেখা যায়, পাশের ভাড়া বাসায় থাকা নারীরা শৌচাগারের পানির কল থেকে কলসি পূর্ণ করছেন। একজনের নেওয়া শেষ হলে আরেকজন গিয়ে পানি পূর্ণ করে বাসায় নিয়ে যাচ্ছেন।

বিদ্যালয়ের এমন অব্যবস্থাপনার কারণে ক্ষোভ ঝাড়ছেন অভিভাবকেরা। তাদের অভিযোগ, স্কুল কর্তৃপক্ষের সচেতনতার অভাব ও অবহেলার কারণে বিদ্যালয়টির এ অবস্থা।

পাশের বড়মিয়া মসজিদের বাসিন্দা জানে আলম। তার এক ছেলে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে ওই বিদ্যালয়ে।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আশপাশের লোকজনের অনুষ্ঠানের জন্য বিদ্যালয় ভবনটি প্রায় সময় ব্যবহার করে। প্রতিদিন রাত পর্যন্ত সেখানে আড্ডা চলে। কেউ কেউ থাকেনও। এমনকি পাঠদান চলাকালেও শ্রেণিকক্ষের পাশঘেঁষে লোকজনকে ধূমপান করতে, আড্ডা দিতে দেখি।

স্কুলের পাশে ভাড়া নিয়ে থাকা আরেক অভিভাবক মাকসুদুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, ‘স্কুলের পাশে সেমিপাকায় ভাড়া থাকা লোকজন পানি নেয় বিদ্যালয়ের পানির কল থেকেই। ওয়াশরুমে গোসল করা থেকে শুরু করে টয়লেটও করেন পাশে থাকা লোকজন। ’

পশ্চিম বাকলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সমর সেন বাংলানিউজকে বলেন, ‘বিদ্যালয়টি পাহারা দেন দুলাল নামে এক দারোয়ান। হয়তো সে ব্যবহার করছে। ’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিদ্যালয়ে পাঠদানের সময় শেষ হলে বন্ধ করে দেওয়ার কথা, তারপরও আমি বিষয়টি খতিয়ে দেখব। আসলে আমার নজরে পড়েনি বিষয়টি। ’

চাঁন্দগাও থানার শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, ‘মাঝেমধ্যে আমরা বিদ্যালয়ে অডিট করতে যাই। কিন্তু এরমধ্যে যাওয়া হয়নি। আমি বিষয়টি দেখবো। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০১৮
জেইউ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad