ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

২২৬৮০ কেজি মাছের ডিম সংগ্রহ হালদায়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৪২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০১৮
২২৬৮০ কেজি মাছের ডিম সংগ্রহ হালদায় হালদা নদীর বিস্তীর্ণ এলাকায় ডিম ছেড়েছে রুই-কাতলা-মৃগেল মাছ। সেই ডিম নৌকায় চড়ে সংগ্রহ করছেন বংশ পরম্পরায় অভিজ্ঞ জেলেরা। ছবি: সোহেল সরওয়ার

চট্টগ্রাম: প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদী থেকে এবার ২২ হাজার ৬৮০ কেজির বেশি রুই, কাতলা, মৃগেল ও কালবাউশের তাজা ডিম সংগ্রহ করা হয়েছে।

শুক্রবার (২০ এপ্রিল) সকাল আটটা পর্যন্ত ৪০৫টি ছোট নৌকায় ১ হাজার বংশ পরম্পরায় অভিজ্ঞ জেলে এসব ডিম সংগ্রহ করেছেন। বৃহস্পতিবার (১৯ এপ্রিল) দিনগত রাত আড়াইটা থেকে তারা টর্চলাইট, চার্জলাইট জ্বালিয়ে, বিশেষভাবে তৈরি জাল দিয়ে হাটহাজারী ও রাউজান সীমান্তের ১২-১৪ কিলোমিটার এলাকা থেকে এসব ডিম সংগ্রহ করেন।

বাংলানিউজকে এসব তথ্য জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও হালদা নদী রক্ষা কমিটির সভাপতি ড. মনজুরুল কিবরীয়া।

 হালদা নদীর বিস্তীর্ণ এলাকায় ডিম ছেড়েছে রুই-কাতলা-মৃগেল মাছ।                                             <div class=

সেই ডিম নৌকায় চড়ে সংগ্রহ করছেন বংশ পরম্পরায় অভিজ্ঞ জেলেরা। ছবি: সোহেল সরওয়ার" src="http://cdn.banglanews24.com/media/imgAll/2016October/bg/GBG20180420174045.jpg" style="margin-bottom:5px; margin-top:5px; width:100%" />

চবির শিক্ষার্থী, ডিম সংগ্রহকারী, উপজেলা প্রশাসন, পল্লি কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ), আইডিএফসহ বিভিন্ন সূত্রের ভিত্তিতে প্রতিবছরের মতো এবারও তিনি ডিম সংগ্রহের এসব তথ্য সংগ্রহ করেছেন।      

বিগত ১০ বছরের মধ্যে এবার রেকর্ডসংখ্যক ডিম সংগ্রহ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার (১৯ এপ্রিল) ভোররাতে ভারী বৃষ্টি হয়েছিল। এরপর বিকেলে নমুনা ডিম ছেড়ে মা-মাছগুলো পরিবেশ উপযোগী কিনা দেখেছে। মধ্যরাতে মৌসুমের প্রথম ডিম ছাড়ে মাছগুলো।

মনজুরুল কিবরীয়া জানান, আবহাওয়াসহ সব কিছু ঠিক থাকলে ২২ হাজার ৬৮০ কেজি ডিম থেকে আনুমানিক ৩৭৮ কেজি রেণু তৈরি হবে। এক কেজি রেণুতে চার-পাঁচ লাখ পোনা হবে। পরিমাণমতো পানিসহ এক কেজি রেণু গত বছর সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা বিক্রি হয়েছিল। এ হিসাবে এবার যে ডিম হয়েছে চার দিন পর সেগুলোর দাম হবে প্রায় পৌনে চার কোটি টাকা। এরপর পোনাগুলো কেজি দরে বিক্রি হবে। যত বড় হবে তখন সেগুলো প্রতিশ’, প্রতিটি হিসেবে বিক্রি হবে। সব মিলে অর্থনীতিতে কয়েক হাজার কোটি টাকার জোগান আসে হালদার মাছের ডিম থেকে।  

এবার ভালো ডিম সংগ্রহের বেশ কিছু দিক চিহ্নিত করেছেন এ গবেষক। এর মধ্যে অন্যান্য বছর কালবৈশাখী ঝড়, প্রচণ্ড বজ্রপাত, তীব্র স্রোত আর ভারী বৃষ্টি উপেক্ষা করে ডিম সংগ্রহ করতে হতো। এবার আবহাওয়া অনুকূল ছিল। শান্ত পরিবেশে ডিম সংগ্রহের কাজটা হয়েছে। এ ছাড়া বছরজুড়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের তত্ত্বাবধানে সরকারের নানা উদ্যোগ, সচেতনতামূলক কার্যক্রম, প্রণোদনা ছিল। পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থা পিকেএসএফ এবং আইডিএফ হালদাপারের মানুষকে সচেতন করেছে, ডিম সংগ্রহকারীসহ জেলেদের নানা ভাবে সহযোগিতা করেছে। তিনটি স্পিড বোট দিয়েছে হালদায় অভিযান পরিচালনার জন্য। বোটগুলো প্রচুর অবৈধ জাল জব্দ করা, বালু তোলার ড্রেজার তাড়ানোসহ নজরদারির নানা কাজে লেগেছে।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, হালদা বিশ্বের একমাত্র নদী যেখান থেকে প্রাকৃতিক পরিবেশে রুই-কাতলা-মৃগেলের ডিম সংগ্রহ করেন জেলেরা। এখানে রয়েছে বিপন্ন প্রজাতির ডলফিনসহ নানা জলজ প্রাণী।

হালদায় ডিম ছেড়েছে রুই-কাতলা

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০১৮

এআর/টিসি

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।