ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

মহিউদ্দিন ভাই থাকলে জনসভা নগরেই হতো: লতিফ

আল রাহমান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০১৮
মহিউদ্দিন ভাই থাকলে জনসভা নগরেই হতো: লতিফ চশমা হিল মহিউদ্দিন চৌধুরীর ত্রৈমাসিক ফাতেহায় সংসদ সদস্য এমএ লতিফ কথা বলেন ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের সঙ্গে

চট্টগ্রাম: ‘চট্টলবীর’ খ্যাত মহানগর আওয়ামী লীগের প্রয়াত সভাপতি, সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী বেঁচে থাকলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভা চট্টগ্রামে শহরেই হতো বলে মন্তব্য করেছেন বন্দর আসনের সংসদ সদস্য এমএ লতিফ।   

রোববার (১৮ মার্চ) দুপুরে ষোলশহর দুই নম্বর গেটের চশমা হিল মহিউদ্দিন চৌধুরীর ত্রৈমাসিক ফাতেহায় এসে সাংবাদিকদের কাছে এ মন্তব্য করেন তিনি।

এমএ লতিফ মহিউদ্দিন চৌধুরীর দুই ছেলের প্রশংসা করে বলেন, মহিউদ্দিন ভাইয়ের ছেলে নওফেল ও সালেহীন সুশিক্ষিত।

তাদের আচার-ব্যবহার মার্জিত। তারা ভালো ছেলে।
তারা কাউকে অমর্যাদা করবে না। কাউকে খাটো করে দেখবে না। যাদের জ্ঞানের পরিধি থাকে না তারা আন্ডারমাইন্ড করে।

একসময় মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধ স্রোতের রাজনীতিতে থাকা এমএ লতিফ এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, আগেও মহিউদ্দিন ভাইয়ের বাসায় এসেছি। তার কবর জেয়ারত করেছি। জীবদ্দশায় হয়তো গ্রুপিংয়ের কারণে আমার আসা-যাওয়া কমে যায় সেটি অসত্য নয়। মহিউদ্দিন চৌধুরী ভাইয়ের চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগে যে অবদান, ত্যাগ, ভূমিকা সেটি চট্টগ্রামের অন্য কোনো আওয়ামী রাজনীতিকের আছে বলে আমি মনে করি না। তার প্রতি আমার শ্রদ্ধা ছিল। যদিও গ্রুপিংয়ের কারণে আমি দূরে ছিলাম।

প্রধানমন্ত্রীর জনসভা চট্টগ্রাম মহানগরে না হওয়ায় সংসদ সদস্য হিসেবে মর্মাহত হয়েছেন জানিয়ে এমএ লতিফ বলেন, চট্টগ্রাম শহর থেকে পটিয়ার দূরত্ব বেশি নয়। ১৫ মাইল দূরে। নেত্রীর জনসভায় ১০০ মাইল দূর থেকে মানুষ আসবে এটা স্বাভাবিক। এগুলো আবেগের বিষয়। সিটির বাইরে জনসভা হওয়াটা আমরা যারা সিটিতে রাজনীতি করছি তাদের ব্যর্থতা। মহিউদ্দিন চৌধুরী বেঁচে থাকলে হয়তো এটা হতো না। নেত্রীকে রাজি করাতেন শহরে জনসভা করতে। সেটি যদি কক্সবাজারে হতো তাহলে ভিন্ন কথা। এখন মাত্র ১৫ মাইল দূরে। শহর থেকে যাওয়াও কঠিন। ব্রিজের কাছে যানজটের কারণে হাজার হাজার মানুষ বঞ্চিত হবে। তারা জনসভায় যোগদান করতে পারবে না। নেত্রীর জনসভা সবসময় সিটিতে হয়েছে। এবারই ব্যতিক্রম।       

এমএ লতিফ বলেন, আমাকে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা ট্রেডবডি থেকে রাজনীতিতে এনেছেন। আমি আসার পর পার্টির রীতিনীতি, পলিটিক্যাল কৌশল একজন ব্যবসায়ী হিসেবে যা দেখেছি, একজন সমাজকর্মী হিসেবে যা দেখেছি রাজনীতির জন্য আরও কিছু অভিজ্ঞতার দরকার ছিল। সেক্ষেত্রে আমার সীমাবদ্ধতা ছিল। সেই কারণে হয়তো পুরোপুরিভাবে কোনটি ভালো, কোনটি মন্দ, কোনটি সত্য, কোনটি অসত্য আমার কাছে পরিষ্কার হয়নি সেই সময়। রাজনীতির মাঠে ৯ বছর পার করেছি। এখন আমি মনে করি, রাজনীতির মাঠে-ময়দানে, রাজনীতির অভ্যন্তরেও রাজনীতি থাকে। এখন সেটি আমার কাছে পরিষ্কার।

তিনি বলেন, আমি মনে করি স্বাধীনতার পক্ষের মানুষের মধ্যে যারা বিভাজন সৃষ্টি করতে চায়, দল-উপদল গঠন করে দলের শক্তি এবং ভাবমূর্তি দুটোই বিনষ্ট করে তারা একান্তই নিজেকে জাহির করার জন্য, নিজেকে তুলে ধরার জন্য, বড় করে দেখানোর জন্য দল, দলের স্বার্থ, আদর্শ সব কিছু জলাঞ্জলি দেয়। এটি আমার স্টাডি। আমি শেখ হাসিনার একজন কর্মী এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কর্মী হিসেবে আমার মূল কাজ দলের ভাবমূর্তি বাড়ানো। যে কারণে আমি সবসময় সাধারণ মানুষের স্বার্থ, প্রত্যাশাকে জোর দিই।

তিনি বলেন, আমি মনে করি, দলের আদর্শ, উদ্দেশ্য উপলব্ধি করে জনগণের আস্থা অর্জন করাটা আমার দলের জন্য জরুরি। দলের ইমেজ ধরে রাখাটাও আমার জন্য জরুরি। কোনো ব্যক্তিবিশেষ দলের ভাবমূর্তি ছাড়া রাজনীতিতে কোনো দিন টিকে থাকবে না। ‍মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পাবে না। আমার দলের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হলে তার বেনিফিট আমি পাব, বেনিফিশিয়ারি আমি হবো। জনগণ একজন গণমুখী মানুষ পেলে, অন্যদলের মানুষও এ দলের আদর্শে-উদ্দেশ্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে যায়।

২০১৭ সালের ১৪ ডিসেম্বর দিবাগত রাত তিনটার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর মেহেদিবাগে বেসরকারি ম্যাক্স হাসপাতালে এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০১৮

এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।