ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

ঢাকা থেকে আপনাদের স্লোগান শুনতে আসিনি: মওদুদ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০২ ঘণ্টা, মার্চ ১৫, ২০১৮
ঢাকা থেকে আপনাদের স্লোগান শুনতে আসিনি: মওদুদ ঢাকা থেকে আপনাদের স্লোগান শুনতে আসিনি, ছবি: উজ্জ্বল ধর, বাংলানিউজ

চট্টগ্রাম: ‘ঢাকা থেকে আমরা আপনাদের স্লোগান শুনতে আসিনি। আপনাদের কিছু কথা শোনার জন্য আর আমাদের কিছু কথা বলার জন্য আজকের জনসভায় এসেছি।’

বক্তব্য চলাকালীন সময়ে উশৃঙ্খল নেতাকর্মীদের স্লোগানে বিরক্ত হয়ে কথাগুলো বলেছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ। কেবল মওদুদ নয় বৃহস্পতিবারের জনসভায় কেন্দ্রিয় সব নেতাকেই স্লোগান থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ জানাতে হয়েছে বক্তব্যের শুরুতে।

 

এমনকি দলের মহাসচিব মির্জা ইসলাম আলমগীরকে বক্তব্যের শুরুতে কর্মীদের উশৃঙ্খল আচরণে বক্তব্য না দিয়ে চলে যাওয়ার হুমকি দিতে হয়েছে। এক পর্যায়ে তিনি ডায়াস থেকে আসনে চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন।

পরে নেতাদের অনুরোধে বক্তব্য শুরু করেন।

বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে নগরীর নুর আহম্মদ সড়কে জনসভার আয়োজন করে নগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জনসভায় বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, মির্জা আব্বাস, ড. মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

বিকেল ৩টায় সভা শুরুর পর থেকেই নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল আসতে শুরু করে। জনসভায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ছাড়া অন্য কারও নামে স্লোগান ও পোস্টার-ব্যানার প্রদর্শন না করার নির্দেশনা থাকলেও তা মানেনি কেউ।

নগর বিএনপির সভাপতি ডা.শাহাদাত হোসেন, সিনিয়র সহসভাপতি আবু সুফিয়ান, সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, গ্রেফতার মিরসরাই উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল আমীনের পোস্টার ও ব্যানার প্রদর্শন করেছে তাদের সমর্থকরা। অন্যদিকে মিছিল নিয়ে সবাই মঞ্চের সামনে অবস্থান নিতে চাইলে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

বিরক্ত মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন

নগর বিএনপির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক বারবার স্লোগান বন্ধ রাখা এবং পোস্টার ব্যানার নামিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু সেদিকে কেউ কর্ণপাত করেনি। এছাড়া স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী একাধিকবার তার আসন থেকে উঠে সুশঙ্খল আচরণের নির্দেশ দিয়েছেন। এতেও কোন কাজ হয়নি। বরং মঞ্চের পূর্ব পাশে সংবাদ কর্মীদের জন্য রাখা আসনে বিএনপি কর্মীরা হুমড়ি খেয়ে পড়লে সেখান থেকে সাংবাদিকরা চলে যেতে বাধ্য হন।

সভা চলাকালীন সময়ে উশৃ্ঙ্খল কর্মীদের একাধিকবার সতর্ক করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ। দলের শীর্ষ নেতাদের নির্দেশনাকেও বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়েছে তারা।

প্রধান অতিথির বক্তব্যের শুরুতে কর্মীদের শান্ত হতে বলেন মির্জা ফখরুল। এক পর্যায়ে তিনি বলেন,‘যদি কিছু কথা আমাকে বলতে দিতে চাও তাহলে দয়া করে চুপ করেন। না হলে আমি নেমে চলে যাই। এভাবে তো বক্তব্য রাখা যায় না। দয়া করে তোমরা একটু চুপ করো। ’ এরপরও শান্ত না হলে ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন,‘কী শুরু করেছো তোমরা এখানে। ’

পরে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, প্রিয় ভাইয়েরা, শোনেন। এভাবে বিশৃঙ্খল অবস্থায় কখনো যুদ্ধ জয় করা যায় না। কখনো কোন বিজয় অর্জন করা যায় না। শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে, ত্যাগের মধ্য দিয়ে, নেতৃত্বের প্রতি আনুগত্য রেখেই যুদ্ধে জয় করা সম্ভব, বিজয় অর্জন সম্ভব।

‘আজকে সমস্ত দেশ সংকটে, বিপদে, আজকে আমার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। দেশমাতাকে কারাগারে বন্দি করা হয়েছে। আমার ভাইদেরকে প্রতিদিন গ্রেফতার করে কারাগারের অন্ধকারে নিক্ষেপ করা হচ্ছে। আমার ভাইদেরকে পিটিয়ে, নির্যাতন করে হত্যা করা হচ্ছে। আমরা যদি এই সময় নিজেদেরকে ঐক্যবদ্ধ না করি, শৃঙ্খলাবদ্ধ না করি তাহলে কিন্তু আমরা বিজয় অজর্ন করতে পারবো না। ’ এ বক্তব্য চলাকালীন সময়ে পুনরায় উশৃঙ্খল হয়ে পড়ে কর্মীরা। এসময় তিনি বিরক্ত হয়ে বলেন, এভাবে বক্তব্য দেওয়া সম্ভব না।

বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, মার্চ ১৫, ২০১৮

এমইউ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।