ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

গণপূর্তমন্ত্রীর বক্তব্যে চসিকের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৮
গণপূর্তমন্ত্রীর বক্তব্যে চসিকের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন

চট্টগ্রাম: গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের বক্তব্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) উজ্জ্বল ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন চসিকের ৪০ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও ১৪ সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলররা।

রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে তারা এ কথা জানান। এর আগে শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) আখতারুজ্জামান চৌধুরী ফ্লাইওভারের নিচে সৌন্দর্যবর্ধন কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী চট্টগ্রাম নোংরা শহরে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন।

  

বিবৃতিতে কাউন্সিলররা বলেন, মন্ত্রীর মন্তব্যে সরকার ও চসিক সর্বসাধারনের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। মন্ত্রী চট্টগ্রামের কৃতী সন্তান।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্যের দায়িত্বের আগে তিনি চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বেও ছিলেন। এ ছাড়াও তিনি জননেত্রী শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভায় ইতিপূর্বে মন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। চসিক এলাকায় তার নিজস্ব বাড়িঘর রয়েছে। বর্তমান মেয়রও চট্টগ্রামের কৃতী সন্তান এবং চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

কাউন্সিলররা বলেন, মন্ত্রী চসিকের ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার কার্যক্রম নিয়ে যে নগ্ন সমালোচনা করেছেন তা সম্পূর্ন মিথ্যা,ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। চট্টগ্রামবাসী মন্ত্রীর এ ধরনের বক্তব্যে বিস্মিত, হতবাক ও হতাশায় নিমজ্জিত হয়েছেন। চট্টগ্রাম নগরী আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বর্তমানে অনেক বেশি পরিচ্ছন্ন ও পরিবেশবান্ধব। দায়িত্বশীল একজন মন্ত্রীর নির্বাচিত মেয়রের বিরুদ্ধে এ ধরনের বক্তব্যে সরকারের সামগ্রিক উন্নয়ন কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করবে।

তারা বলেন, বর্তমান মেয়রের একান্ত ইচ্ছায় এখন ‍নগরীতে রাতে ময়লা-আবর্জনা অপসারণের কাজ চলছে। প্রতিদিন চসিক প্রায় ২ হাজার টন ময়লা-আবর্জনা অপসারণ করে থাকে। ফলে এখন আর নগরবাসী ও নগরীর কর্মজীবী নাগরিকদের ভোরবেলা ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধ সইতে হয় না। বর্তমান মেয়র  ৪১ ওয়ার্ডে ১৭১৪ জন অতিরিক্ত সেবক নিয়োগ দিয়েছেন। ৭৭৫টি ভ্যানগাড়ির মাধ্যমে আবর্জনা অপসারণ করা হচ্ছে। ডোর টু ডোর ময়লা আবর্জনা সংগ্রহের জন্য ৯ লাখ  ছোট বিন ও ৪ হাজার বড় ঘরে ঘরে সরবরাহ করা হয়েছে। এছাড়াও পুরো নগরীকে দুর্গন্ধমুক্ত নগরীতে পরিণত করার লক্ষ্যে ১৩৭৫টি কংক্রিট ডাস্টবিন থেকে ৭৭৫টি অপসারণ করে ওই জায়গায সৌন্দর্যবর্ধন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ফুলের বাগান করা হয়েছে। এছাড়া ডোর টু ডোর ময়লা আবর্জনা সংগ্রহের জন্য বিকেলে তিনটা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে।

কাউন্সিলররা বলেন, মন্ত্রী জাতিসংঘ পার্কের মালিকানা নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন তাও সঠিক নয়। পার্কটির জায়গার পরিমাণ ২ দশমিক ১৩৯৪ একর। এর মধ্যে সিঅ্যান্ডবি ১৯৬৫ সালে তৎকালীন চট্টগ্রাম পৌরসভার কাছে হস্তান্তর করে। হস্তান্তরের পর দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন উক্ত পার্কের ১ দশমিক ০৩ একর জায়গা ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করে পার্কের রক্ষণাবেক্ষণ কার্য সম্পাদন করে আসছে। বাকি ১ দশমিক ১০ একর জায়গা সড়ক ও জনপথের নামে বলে জানা যায়। ১ দশমিক ০৩ একর পৌরসভা তথা চসিকের নামে বিএস নামজারি খতিয়ান চূড়ান্ত আছে।

তারা বলেন, মন্ত্রী আগ্রাবাদের কর্ণফুলী শিশুপার্ক নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা-ও সঠিক। কর্ণফুলী শিশুপার্কের ৮ দশমিক ৮৬ একর জায়গা ১৯৯২ সালের ২১ মে গণপূর্ত অধিদপ্তর চসিককে হস্তান্তর করে। চসিক ২৫ বছর চূক্তি মেয়াদে ইজারা দেয়। বিগত মেয়র মরহুম এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর সময়ে ইজারা চূক্তি সই হয়।

বিবৃতিতে চসিকের বিরুদ্ধে অসত্য ও বিভ্রান্তিকর বানোয়াট অপপ্রচার থেকে বিরত থাকা এবং বিরোধিতার খাতিরে বিরোধিতা না করার জন্য অনুরোধও জানানো হয়।

বিবৃতিতে সই করেন প্যানেল মেয়র চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, জোবাইরা নার্গিস খান, নেছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু, তৌফিক আহমদ চৌধুরী, মোহাম্মদ সাহেদ ইকবাল বাবু, কফিল উদ্দিন খান, মো. সাইফুদ্দিন খালেদ, মোহাম্মদ আজম, এম আশরাফুল আলম, মোহাম্মদ মোবারক আলী, মো. মোরশেদ আলম, মো. জহুর আলম জসিম, মোরশেদ আকতার চৌধুরী, মো. ছাবের আহমদ, মো. হোসেন হিরন, এএফ কবির আহমদ মানিক, মো. গিয়াস উদ্দিন, সাইয়েদ গোলাম হায়দার মিন্টু, একেএম জাফরুল ইসলাম, মো. হারুন উর রশিদ, মো. ইয়াছিন চৌধুরী আশু, শৈবাল দাশ সুমন, মো. সলিম উল্লাহ, মোহাম্মদ জাবেদ, নাজমুল হক ডিউক, এইচএম এরশাদুল্লাহ, মো. আবুল হাসেম, এইচএম সোহেল, মো. আবদুল কাদের, গোলাম মোহাম্মদ জোবায়ের, মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী, তারেক সোলায়মান সেলিম, জহর লাল হাজারী, হাসান মুরাদ বিপ্লব, মো. ইসলাইল বালী, নুরুল হক, মো. শফিউল আলম, গোলাম মোহাম্মদ চৌধুরী, জিয়াউল হক সুমন, মো. জয়নাল আবেদীন, ছালেহ আহমদ চৌধুরী, সৈয়দা কাশপিয়া নাহরিন, জেসমিন পারভিন জেসি, আবিদা আজাদ, মনোয়ারা বেগম মনি, ফারজানা পারভিন, আঞ্জুমান আরা বেগম, নিলু নাগ, ফারহানা জাবেদ, জেসমিনা খানম, ফেরদৌসী আকবর, আফরোজা কালাম, লুৎফুন্নেসা দোভাষ বেবী ও শাহানুর বেগম।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৮

এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।