ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

কলমের খোঁচায় ১০ বছরের শিক্ষাজীবন নষ্ট হয়ে যাবে?

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৮
কলমের খোঁচায় ১০ বছরের শিক্ষাজীবন নষ্ট হয়ে যাবে? কলমের খোঁচায় ১০ বছরের শিক্ষাজীবন নষ্ট হয়ে যাবে? প্রশ্ন ইমাম হোসেনের

চট্টগ্রাম: ‘কলমের এক খোঁচায় আমার ১০ বছরের শিক্ষাজীবন কি এভাবে নষ্ট হয়ে যাবে? প্রশ্নপত্রে পেন্সিলের ফোঁটা দেওয়ার সামান্য অভিযোগে ম্যাজিস্ট্রেট আমাকে এতবড় শাস্তি দিবে কল্পনাও করিনি।’    

মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে ‘অন্যায়ভাবে বহিষ্কৃত মেধাবি এসএসসি পরীক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত অভিভাবক’র ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বহিষ্কৃত পরীক্ষার্থী ইমাম হোসেন এসব আক্ষেপের কথা জানায়।

ইমাম হোসেন নগরীর সেন্ট প্ল্যাসিডস স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছিল।

সে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ ইউনুছের ছেলে।

বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) এসএসসি পরীক্ষা চলাকালীন নগরীর চট্টগ্রাম সরকারি মুসলিম হাইস্কুল কেন্দ্রে অসদুপায় অবলম্বনের দায়ে তিন পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রমিজ আলম।

পরে বহিষ্কারাদেশকে কেন্দ্র করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা বিক্ষোভ করেন। এসময় ৪ অভিভাবককে আটক করা হয়।

সেদিনের ঘটনা তুলে ধরে ইমাম হোসেন বলে, ‘বৃহস্পতিবার পরীক্ষা শুরু হওয়ার ১০ মিনিটের মধ্যে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রমিজ আলম আমাদের রুমে আসেন।  তিনি আমার খাতা, উত্তরপত্র ও প্রশ্নপত্র দেখেন। এ সময় তিনি আমার নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নে পেন্সিলের ফোঁটা দেখে, কেন দিয়েছি তা জানতে চান। তখন আমি উত্তরপত্রে বৃত্ত ভরাটের পাশাপাশি প্রশ্নে ফোঁটা দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করি। উত্তর ভুল না হওয়ার জন্য এবং বাসায় গিয়ে যাতে কয়টি উত্তর সঠিক হয়েছে, তা দেখতে এ ফোঁটা দিয়েছি বলে জানাই ম্যাজিস্ট্রেটকে। কিন্তু ম্যাজিস্ট্রেট এসব কথা শুনেও আমার পরীক্ষার খাতা ও উত্তরপত্র নিয়ে নিতে রুমে দায়িত্বে থাকা স্যারকে নির্দেশ দেন। এসময় আমি মনে করেছি, হয়তো ৫-১০ মিনিটের জন্য খাতা নিয়ে রেখেছেন। কিন্তু পরীক্ষার আধঘণ্টা পার হলেও আমার খাতা দেওয়া হয়নি। পরে ম্যাজিস্ট্রেট এসে আমার প্রবেশপত্র নিয়ে আমাকে বহিষ্কার করে দেন। ’

কান্নাজড়িত কণ্ঠে ইমাম হোসেন বলে, ‘পরীক্ষার খাতা দিয়ে দিতে আমি স্যারকে খুব রিকোয়েস্ট করেছি। কিন্তু স্যারেরা দেননি। তখনই আমার মন ভেঙে যায়। প্রশ্নপত্রে সামান্য ভুলের জন্য ম্যাজিস্ট্রেটের কলমের এক খোঁচায় আমার ১০ বছরের শিক্ষাজীবন নষ্ট করে দিয়েছে। আমাকে যে বহিষ্কার করবে, তা আমি কল্পনাও করিনি। কেননা, আমরা তো প্রতিটি পরীক্ষায় বৃত্ত ভরাটের আগে নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নে দাগ দিই। যাতে ভুল না হয়। এভাবে নয়টি পরীক্ষা দিয়েছি। এ অভিযোগে আমাদের বহিষ্কার করলে তো প্রথম দিনই বহিষ্কার করা যেত। এত দিন করলো না কেন?

‘একই দিন ১১০ রুমে কদম মোবারক স্কুলের এক পরীক্ষার্থীকে এরূপ পেন্সিলের দাগ পাওয়ায় খাতা নিয়ে নিয়েছিলেন ওই ম্যাজিস্ট্রেট। কিন্তু পাঁচ মিনিট পর নিজে এসে খাতা দিয়ে দিয়েছিলেন ম্যাজিস্ট্রেট। আমার ক্ষেত্রে কেন এরূপ শাস্তি দেওয়া হলো? আমি কি দোষ করেছি? শিক্ষাজীবন ফিরে পেতে চাই। ’

পরীক্ষার্থী বহিষ্কারের ঘটনা বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি

বাংলাদেশ সময়: ২২৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৮

এসবি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।