রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ভোরে গ্রেফতার হওয়া আইমান জিহাদ, খোকন চৌধুরী এবং তানজিল করিম খান মাহীর কাছ থেকে এসব তথ্য পেয়েছে পুলিশ। তিনজনকে সন্ধ্যায় আদালতে হাজির করা হয়েছে বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (ডিসি-উত্তর) মো.আব্দুল ওয়ারিশ খান।
আটক তিনজনকে থানায় নিয়ে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন ওয়ারিশ।
গত শুক্রবার (১৬ অক্টোবর) নগরীর পাঁচলাইশ থানার ষোলশহর দুই নম্বর গেইট এলাকায় পুলিশের ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে।
সিনিয়র-জুনিয়র বিরোধ এবং প্রতিপক্ষকে শায়েস্তা করার মিশন
সূত্রমতে, ঘটনার দুইদিন আগে বুধবার সিআরবির হল টুয়েন্টিফোরের সামনে ক্যান্টনমেন্ট কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্র ইদ বিন মাহমুদের সঙ্গে একই কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র জোবায়েদের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে জোবায়েদসহ কয়েকজন মিলে মাহমুদকে চড়-থাপ্পড় দেয়। জোবায়েদরা নন্দনকাননের যুবলীগ নামধারী সন্ত্রাসী অমিত মুহুরীর অনুসারী।
মাহমুদ ঘটনাটি তার ‘বড় ভাই’ আইমান জিহাদকে জানায়। জিহাদ জোবায়েদকে ফোন করে মাহমুদকে মারার কারণ জানতে চায়। জোবায়েদ সদুত্তর না দিয়ে তাকে অপমান করে। এরপর আইমান সিআরবি এলাকায় গিয়ে জোবায়েদ ও তার সঙ্গীদের উপর হামলা, প্রয়োজনে খুনের পরিকল্পনা করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন পুলিশ কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্বে মাহমুদ মারধরের শিকার হয়। এর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য আইমান তার ‘বড় ভাই’ ফারুকের কাছ থেকে পিস্তল সংগ্রহ করে। এরপর ১০ জন মিলে সিআরবি এলাকায় যাবার পথে ষোলশহর দুই নম্বর গেইটে পুলিশের মুখোমুখি হয়। ধরা পড়ে যাবার ভয়ে খোকন চৌধুরী ওই পিস্তল থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি করে।
‘খোকন জানিয়েছে, ঘটনার পর সে ষোলশহরের একটি জায়গায় পিস্তলটি রেখে আসে। ফারুককে বিষয়টি জানানোর পর সে পিস্তলটি নিয়ে যায়। তবে আমাদের ধারণা, খোকনই ফারুকের কাছে গিয়ে পিস্তলটি দিয়ে আসে। ’ বলেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা
ফারুক যেভাবে ‘বড় ভাই’
আইমান জিহাদ নিজেকে ছাত্রলীগ নেতা হিসেবে পরিচয় দেয়। ফেসবুকভিত্তিক ডিএক্স বয়েজ নামে একটি গ্রুপ আছে জিহাদসহ কয়েকজনের। এই গ্রুপে কয়েকজন স্কুল-কলেজের ছাত্র এবং আরও কয়েকজন তরুণ আছে। ইদ বিন মাহমুদও একই গ্রুপের। ঘটনায় যারা জড়িত সবাই এই গ্রুপের।
গ্রুপটির নিয়ন্ত্রণে আছে ৮ নম্বর ষোলশহর ওয়ার্ড যুবলীগের নেতা সোলায়মান বাদশা। তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ফারুক। তারা নিয়মিত মোটর সাইকেলে চলাফেরা করে। সোলায়মানের বন্ধু হিসেবে ফারুকও ডিএক্স বয়েজ গ্রুপের অন্যতম নিয়ন্ত্রক বলে জানিয়েছেন কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা।
প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সোহেল হত্যা মামলার আসামি সোলায়মান বাদশা ওমরগণি এমইএস কলেজের ছাত্রসংসদের ভিপি ও নগর যুবলীগের সদস্য ওয়াসিমের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
একই ঘটনায় এর আগে পুলিশ আরও তিনজনকে আটক করেছিল। এরা হল মো.আব্দুল হাকিম অভি (১৯), জোবায়ের হোসেন প্রত্যয় (১৭) এবং মাঈনুদ্দিন ফরিদ প্রকাশ রাকিব (১৭)।
পুলিশের ওপর গুলি, খোকনসহ গ্রেফতার ৩
পুলিশকে গুলি করে খোকন, জড়িতরা যুবলীগ-ছাত্রলীগের
পুলিশকে গুলি, দুই এসএসসি পরীক্ষার্থী আটক
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৮
আরডিজি/টিসি