ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

লেবানন থেকে ৪ বছর পর ফিরল 'আলী হায়দার-নির্মূল'

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৪২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৮
লেবানন থেকে ৪ বছর পর ফিরল 'আলী হায়দার-নির্মূল' লেবানন থেকে ৪ বছর পর ফিরল নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ 'আলী হায়দার-নির্মূল'। ছবি: সোহেল সরওয়‍ার, বাংলানিউজ

চট্টগ্রাম: লেবাননের ভূ-মধ্যসাগরে ৪ বছর দায়িত্ব পালন শেষে ফিরল বাংলাদেশ নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ 'আলী হায়দার' ও 'নির্মূল'। মাল্টিন্যাশনাল মেরিটাইম টাস্কফোর্সের আওতায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের কার্যক্রম শেষে জাহাজ দুটি রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে নগরীর নেভাল জেটিতে এসে পৌঁছে।

২০১৪ সালের মে মাসে নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ দুটি লেবানন যায়।  জাতীয় সংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের দায়িত্ব পালন শেষে লেবানন থেকে বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন ৭ জানুয়ারি।

প্রায় ১৪ হাজার কিলোমিটার সমুদ্রপথ পাড়ি দিয়ে যুদ্ধজাহাজ দুটি বাংলাদেশে এসে পৌঁছে।  

নেভাল জেটিতে পৌঁছলে যুদ্ধজাহাজ দুটি ও জাহাজে থাকা নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ও সদস্যদের আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানান নৌবাহিনীর চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চলের কমান্ডার, রিয়ার অ্যাডমিরাল এম আবু আশরাফ।

 

এ সময় নৌবাহিনীর চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চলের আঞ্চলিক কমান্ডার, উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও জাহাজে থাকা কর্মকর্তা ও নাবিকদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

নৌবাহিনী সূত্রে জানা যায়, জাতিসংঘ মিশনে যোগদানের পর থেকে যুদ্ধজাহাজ দুটি লেবানিজ জলসীমায় মেরিটাইম ইন্টারডিকশন অপারেশন, সন্দেহজনক জাহাজ ও এয়ারক্রাফটের ওপর নজরদারি, দুর্ঘটনাকবলিত জাহাজে উদ্ধার তৎপরতা এবং লেবানিজ নৌবাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে।

লেবাননে থাকাকালীন ৪ বছরে নৌবাহিনীর ১১৪০ জন সদস্য অত্যন্ত দক্ষতা, পেশাদারিত্ব, আন্তরিকতা ও শৃঙ্খলার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন।  

লেবাননের স্থিতিশীলতা ও জলসীমার নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় গত বছরের ২১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত ব্যানকন-৮ এর মেডেল প্যারেডে জাহাজ দুটির ২৭০ জন নৌ সদস্যকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা পদক দেওয়া হয়।

জাহাজ ২টি আন্তর্জাতিক মেরিটাইম টাস্কফোর্সের অধীনে উন্নত বিশ্বের অন্যান্য দেশের জাহাজের সঙ্গে নিয়মিত শান্তিরক্ষা টহল ও বিভিন্ন আভিযানিক কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে। এতে অন্যান্য দেশের নৌবাহিনী সম্পর্কে ধারণা লাভের পাশাপাশি জাহাজের কর্মকর্তা ও নাবিকদের পেশাগত দক্ষতা বেড়েছে।  এ ছাড়া যুদ্ধজাহাজ দুটি ভূ-মধ্যসাগরে সাফল্যের সঙ্গে আন্তর্জাতিক দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে। পাশাপাশি মিশন কার্যক্রমে অংশ নিয়ে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে।

রিয়ার অ্যাডমিরাল এম আবু আশরাফ সাংবাদিকদের জানান, লেবাননে ২০১০ সালে বাংলাদেশ থেকে নৌবাহিনীর সদস্যরা প্রথম জাতিসংঘ মিশনে যান। এরই অংশ হিসেবে লেবাননের ভূ-মধ্যসাগরে ২০১৪ সালে পাঠানো হয়েছিল নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ আলী হায়দার ও নির্মূল। মাল্টিন্যাশনাল মেরিটাইম টাস্কফোর্সের আওতায় জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে সাতটি যুদ্ধজাহাজ পাঠানো হয়েছিল। ব্রাজিল, জার্মানি, তুরস্ক, গ্রিস, ইন্দোনেশিয়া থেকে একটি করে এবং বাংলাদেশ থেকে দুইটি যুদ্ধজাহাজ লেবাননের ভূ-মধ্যসাগরে দায়িত্ব পালন করেছে। নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ আলী হায়দারের ক্যাপ্টেন আফজাল ও কমান্ডার ইসতিয়াকের নেতৃত্বে নৌবাহিনীর সদস্যরা জীবনবাজি রেখে লেবাননের ভূ-মধ্যসাগরে বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রত্যাবর্তনের আগে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের কর্মকর্তারা নৌবাহিনীর কর্মকর্তা-সদস্যদের ও যুদ্ধজাহাজ দুইটির প্রশংসা করেন। যা দেশের ভাবমূর্তিকে একধাপ এগিয়ে নিয়ে গেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১১২৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৮

এসবি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।