শিক্ষাবোর্ডের তদন্তে এ জালিয়াত চক্রে নগরীর বেশ কিছু স্কুলের নাম উঠে এসেছে। যেখানে প্রতিষ্ঠান প্রধান ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জড়িত থাকার অভিযোগ পেয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, নবম শ্রেণিতে যেসব শিক্ষার্থী ফেল করে, তারাই এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে জালিয়াত চক্রের শরণাপন্ন হয়।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০১৮ সালের এসএসসি পরীক্ষায় এবার প্রায় ১ লাখ ৩৩ হাজার শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে ফরমপূরণ করেছে। এরমধ্যে টিসির মাধ্যমে প্রায় ৬০০ শিক্ষার্থী ফরমপূরণ করেছে। পরবর্তীতে ২০১৫ সালের ন্যায় টিসি জালিয়াতির পুনরাবৃত্তি না হওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের টিসি যাচাই-বাছাইয়ে নামে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষ।
তদন্তে বেশ কিছু স্কুলের নাম উঠে এসেছে। যেখানে নগরীর খাজা গরীবে নেওয়াজ উচ্চ বিদ্যালয়, হালিশহরের হাউজিং সোসাইটি স্কুল, নৌ-বাহিনী স্কুল অ্যান্ড কলেজ, পিএইচ আমিন একাডেমিসহ আরও কয়েকটি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষর জাল করে নবম শ্রেণিতে অন্য স্কুলে এসে ভর্তি হয়েছে। পরবর্তীতে ওই শিক্ষার্থীরা দশম শ্রেণিতে এসে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে ফরমপূরণ করে।
শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. মাহবুব হাসান বাংলানিউজকে জানান, এসব টিসি যাচাই-বাছাই করার জন্য বোর্ডের উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (মাধ্যমিক) প্রসেনজিৎ পালকে প্রধান করে ৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। টিসি নিয়ে যারা এক স্কুল থেকে অন্য স্কুলে ভর্তি হয়েছে, তাদের টিসিগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। সেখানে বেশ কয়েকটি স্কুলের প্রায় ৬০ শিক্ষার্থীর টিসিতে অসঙ্গতি পাওয়া গেছে।
টিসি যাচাই-বাছাই কমিটির প্রধান প্রসেনজিৎ পাল বাংলানিউজকে জানান, ৬০০ শিক্ষার্থী এবার টিসি নিয়ে এক স্কুল থেকে অন্য স্কুলে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে পরবর্তীতে দশম শ্রেণিতে উঠে এসএসসি পরীক্ষার অংশ নিতে ফরমপূরণ করেছে। এরমধ্যে বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৬০ শিক্ষার্থীর টিসিতে অসঙ্গতি পাওয়া গেছে। যেখানে ৩০টি প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষর জাল করা এবং অন্য টিসিগুলো অসম্পূর্ণ ও বোর্ডের নির্দেশনার বাইরে দেওয়া। এরমধ্যে নগরীর বাকলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ৪০ শিক্ষার্থী, হাসনাহেনা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৯ শিক্ষার্থী এবং কামাল উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে ১১ শিক্ষার্থী রয়েছে।
তিনি আরও জানান, তদন্তে বেশ কিছু বিষয় উঠে এসেছে। যেখানে কাজ করছে একটি জালিয়াত চক্র। শিগগিরই শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষকে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে।
শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক শাহেদা ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, টিসি জালিয়াতিতে অভিযুক্ত স্কুলগুলোর বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। অভিযোগের সত্যতা পেলেই স্কুলগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জালিয়াতির প্রমাণ পেলেই ওই সব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরে (মাউশি) পাঠদান বাতিলের সুপারিশ করারও ইঙ্গিত দেন শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান।
বাংলাদেশ সময়: ২২০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০১৮
এসবি/টিসি