ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

ব্যবস্থাপত্রে ভেজাল ওষুধ লেখেন ১৮ ডাক্তার

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০১৮
ব্যবস্থাপত্রে ভেজাল ওষুধ লেখেন ১৮ ডাক্তার অ্যাকুরা ফার্মা বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠানের ভেজাল ওষুধ

চট্টগ্রাম: নগরীতে একটি ভেজাল ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের অফিস ও গুদামে অভিযান চালিয়েছে নগর গোয়েন্দা পুলিশ। এসময় অ্যাকুরা ফার্মা বাংলাদেশ নামে ওই প্রতিষ্ঠানের মালিক সাইদুল ইসলামকে (৩৮) আটক করা হয়েছে।

সূত্রমতে, আটক সাইদুল জানিয়েছেন বন্দরনগরীর বেশ কয়েকজন স্বনামধন্য চিকিৎসক মাসে মাত্র ১০-২০ হাজার টাকার বিনিময়ে এসব ভেজাল ওষুধ রোগীদের সেবনের জন্য ব্যবস্থাপত্রে নির্দেশনা দেন।  এসব চিকিৎসকের মধ্যে ১৮ জনের নাম সাইদুল প্রকাশ করেছেন।

  

১৮ চিকিৎসক হলেন- এম এ রউফ, আলী আজগর, চন্দন কুমার, আশীষ কুমার চৌধুরী, সাকলিন, ফরহাদ আলী রাজু, রিপন দে, আবরার হাসান, শিমুল কুমার, মহিউদ্দিন সিকদার, আরমান, জসিম, অসীম বড়ুয়া, তৌহিদুল আলম, আব্দুর রব, সাদিক হোসেন, অনিক চৌধুরী এবং রাজীব চৌধুরী।

কয়েকজন চিকিৎসকের নাম পাওয়ার কথা স্বীকার করলেও এ বিষয়ে কোন তথ্য দিতে রাজি হননি অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (এডিসি-কাউন্টার টেরোরজিম) পলাশ কান্তি নাথ।

নগরীর খুলশী থানার লালখান বাজারের পশ্চিম হাইলেভেল রোডে জনৈক তাহেরের বিল্ডিংয়ের নিচতলায় অ্যাকুরা ফার্মার অফিস ও গুদাম।   বুধবার (১৭ জানুয়ারি) ভোরে সেখানে অভিযান চালায় নগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি টিম।   সেখান থেকে বিভিন্ন ধরনের  ওষুধসহ কয়েক হাজার কৌটা উদ্ধার করা হয়, যার মধ্যে ফুড সাপ্লিমেন্ট, ভিটামিন ও শক্তিবর্ধক ওষুধ আছে।

এডিসি পলাশ কান্তি নাথ বাংলানিউজকে বলেন, ভারত এবং চীন থেকে অবৈধভাবে ওষুধগুলো আনা হয়।   এরপর সেগুলো ১০ থেকে ৩০টি করে কৌটায় ভরে বিভিন্ন নাম দিয়ে লেবেল লাগানো হয়।   প্রতিটি কৌটার দাম কমপক্ষে এক হাজার টাকা।   এসব ওষুধ নির্দিষ্ট দোকানের মাধ্যমে বিক্রি করা হয়।   কোনো ধরনের অনুমোদন ছাড়াই তারা কাজটি করছিল।

সূত্রমতে, সচরাচর সব দোকানে এসব ভেজাল ওষুধ পাওয়া যায় না।

শুধুমাত্র হাজারী গলিতে কয়েকটি পাইকারি ওষুধের দোকানে পাওয়া যায়।   আর যে চিকিৎসক ব্যবস্থাপত্রে এসব ওষুধ লিখেন, তার চেম্বারের আশপাশের ফার্মেসিতে পাওয়া যায়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে নগর গোয়েন্দা পুলিশের একজন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, আটক সাইদুল জানিয়েছেন, প্রত্যেক সিনিয়র চিকিৎসককে মাসে তারা ২০ হাজার টাকা করে দেন।   পাড়ায়, গলিতে যাদের চেম্বার আছে সেসব ডাক্তারদের ১০-১৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়।   এর বিনিময়ে তারা এসব ওষুধের নাম প্রেসক্রিপশনে লিখেন।

আটক সাইদুলের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫ (গ) ধারায় খুলশী থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

অভিযানে আরও ছিলেন নগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক আফতাব হোসেন ও রাজেশ বড়ুয়া, উপ-পরিদর্শক শিবেন বিশ্বাস, মো. আব্দুল্লাহ, সঞ্জয় গুহ, রাছিব খাঁন এবং ছাদেক মোহাম্মদ নাজমুল হক।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০১৮

আরডিজি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।