মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) সকাল ও বিকালে পৃথক বৈঠকে মেয়র উভয় দেশের রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, গুরুত্বের দিক থেকে চট্টগ্রাম একটি গুরুত্বপূর্ণ নগরী। চট্টগ্রামে সমুদ্রবন্দরসহ ব্যবসা-বাণিজ্যের অপার সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি বলেন, ৬০ বর্গমাইলের চট্টগ্রাম মহানগরীতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। এ নগরীর নাগরিকদের জীবনমান অনেকাংশে উন্নত।
সিটি মেয়র বলেন, নগরবাসীর স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষার অধিকার, পরিচ্ছন্ন পরিবেশ, উন্নয়ন ও আলোকিত নগরীর ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে সিটি করপোরেশন দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, জলবায়ুর প্রভাবের কারণে বর্ষা মৌসুমে নগরজীবনে দুর্ভোগ নেমে আসে। এ সময় নগরীর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক ও অস্বাভাবিক জোয়ারে প্লাবিত হয়। এ ছাড়াও অবিরাম বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢল নগর জীবনের স্বাভাবিক গতি বাধাগ্রস্ত করে।
মেয়র নির্বাচনী অঙ্গীকার ও নগরবাসীর সেবার স্বার্থে নগরীকে মেগাসিটির আদলে ক্লিন ও গ্রিন সিটিতে পরিণত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে জানা। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সব অঙ্গীকার ও পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে।
চট্টগ্রামে শান্তি বিরাজমান উল্লেখ করে মেয়র বলেন, এখানে জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের অপতৎপরতা নিয়ন্ত্রিত। রাজনৈতিকভাবেও চট্টগ্রামে শান্তি বিরাজমান। তার কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কোনো বিরোধ নেই। রোহিঙ্গা ইস্যুতে চট্টগ্রাম নগরে তেমন কোনো প্রভাব পরেনি। তবে দীর্ঘ মেয়াদে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে অবস্থান করলে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। চট্টগ্রাম বন্দরের বহুমাত্রিক ব্যবহার বাড়ানো গেলে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে আরও গতিশীল হবে আশাবাদ জানিয়ে মেয়র বলেন, ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বেড়েছে এবং এ বন্দরের বহুমাত্রিক ব্যবহার চলছে।
রাষ্ট্রদূত মার্শা স্টিফেন ব্লুম বার্নিকাট বলেন, চট্টগ্রামে এসে তিনি অভিভূত। সিটি মেয়র স্বল্পতম সময়ের মধ্যে গৃহীত পরিকল্পনাগুলো তুলে ধরেছেন।
রাষ্ট্রদূত বার্নিকাট বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারও প্রশংসা করেন।
রাষ্ট্রদূত সিটি করপোরেশন পরিচালনার ক্ষেত্রে অর্থের উৎস কী জানতে চাইলে মেয়র জানান, নগরবাসীর হোল্ডিং ট্যাক্সের ওপর ভিত্তি করে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন পরিচালিত হয়। উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ছাড়া কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন-ভাতা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র পরিচালনা করাসহ নানা খাতে মাসে প্রায় ২০ কোটি টাকা খরচ করা হয়।
থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত পানপিমন সুবন্নাপংসে পাহাড়ধস রোধে থাইল্যান্ডের রাজপুত্রের প্রকল্পের অধীনে চট্টগ্রামে ভূমিক্ষয় রোধে ঘাস লাগানোর বিষয়ে মেয়রের অভিমত জানতে চান।
মেয়র পত্রের মাধ্যমে প্রস্তাব রাষ্ট্রদূতকে অবহিত করবেন বলে জানান।
এ ছাড়াও রাষ্ট্রদূত চট্টগ্রামে সেপ্টেম্বরে বাণিজ্য মেলা আয়োজন এবং বিদ্যুৎ ও সার উৎপাদনের বিষয়গুলো প্রস্তাব আকারে উপস্থাপন করেন। মেয়র এ প্রস্তাবগুলো বিবেচনার আশ্বাস দেন।
মেয়র দুই রাষ্ট্রদূতকে করপোরেশনের মনোগ্রাম খচিত ক্রেস্ট উপহার দেন এবং ফুলেল শুভেচ্ছায় বরণ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১৮
এআর/টিসি