ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

রাজনৈতিক নেতৃত্বের ওপর হিংসাত্মক আক্রমণ কেন?

রমেন দাশগুপ্ত, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১৮
রাজনৈতিক নেতৃত্বের ওপর হিংসাত্মক আক্রমণ কেন? ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি। ছবি: সোহেল সরওয়ার, বাংলানিউজ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে: বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ রাজনৈতিক নেতাদের নির্মম হত্যাকাণ্ডের কথা তুলে ধরে ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি বলেছেন, এই ভূখণ্ডে রাজনৈতিক নেতৃত্বের ওপর বারবার হিংসাত্মক আক্রমণ কেন?

মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্মানসূচক ডি-লিট ডিগ্রি গ্রহণের পর তিনি এ প্রশ্ন রাখেন।

বাংলাদেশ স্বাধীনের সাড়ে তিন বছরের মাথায় বঙ্গবন্ধুকে হত্যা জাতির জন্য বড় আঘাত উল্লেখ করে প্রণব মুখার্জি বলেন, অকথ্য নির্যাতন, লাঞ্ছনা, মৃত্যু সহ্য করে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে।

এ স্বাধীনতায় নেতৃত্ব দিয়েছেন সর্বকালের সর্বযুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বাঙালি শেখ মুজিবুর রহমান।   আমরা যেমন ১৯৪৮ সালের ৩০ জানুয়ারি আততায়ীর গুলিতে ভারতের জাতির জনক মহাত্মা গান্ধিকে ভারতের মানুষ, পৃথিবীর মানুষের কাছ থেকে হারিয়েছি তেমনি ভাবে শেখ মুজিবুর রহমান ভোরে একদল ঘাতকের নৃশংস আক্রমণের শিকার।

তিনি বলেন, একটি সদ্য স্বাধীন দেশ।  অসংখ্য সমস্যা ছিল।  দেশ গড়ার সমস্যা। দেশকে এগিয়ে নেওয়ার সমস্যা। দারিদ্র্য ও বেকারত্ব দূর করার সমস্যা। সেই সমস্যার সঙ্গে সঙ্গে একটি জাতিকে প্রায় জন্মলগ্নের মুহূর্তে একটি জাতিকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হলো। পৃথিবীর কোনো দেশে এ নজির খুব বেশি নেই।  আমেরিকা স্বাধীনতা লাভের বহু বছর পর আব্রাহম লিংকন নিহত হয়েছিলেন।  

তিনি বলেন, ভারত ও বাংলাদেশে স্বাধীনতার পরপরই জাতির পিতাদের হত্যা করা হলো।  এর পেছনে সামাজিক, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট কাজ করেছে আমি জানি না।  সমাজতত্ত্ববিদ, ইতিহাসবিদ ও পণ্ডিতদের কাছে নিবেদন করব, ব্রহ্ম দেশে (মিয়ানমার) অংসান সুচির পিতা জেনারেল অংসানকে ব্রাশ ফায়ারে নিহত হলেন।  ১৯৬০ সালে শ্রীলংকার প্রধানমন্ত্রী নিহত হলেন।  ১৯৪৮ সালে মহাত্মা গান্ধী নিহত হলেন।  ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিহত হলেন।  ৩ নভেম্বর যারা মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করেছিলেন তারা নিহত হলেন জেলখানার ভেতরে।  পাকিস্তানে জিয়াউল হক নিহত হলেন।  জুলফিকার আলী ভুট্টোকে ফাঁসি দেওয়া হলো।  এই যে বিপুলসংখ্যক রাজনৈতিক হত্যা এর কারণ কী।  এ অঞ্চলের মানুষকে জানতে হবে।

প্রণব মুখার্জি বলেন, ব্রক্ষ্মদেশে দীর্ঘদিন ধরে সামরিক শাসন চলেছে। এখন অবশ্য গণতন্ত্র আছে। কিন্তু মাঝে মাঝেই সামরিক শাসন আসে। তিনি প্রশ্ন রাখেন, 'কোন সামাজিক অর্থনৈতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সৈন্যরা ব্যারাক থেকে বের হয়ে আসে?

প্রণব মুখার্জি বলেন, এ বিপুল রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের কারণ কী, এর পেছনে কোন রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট আছে তা আমাদের জানতে হবে।

এসব কারণ জানতে গবেষণার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ববিদ ও ইতিহাসবিদদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, রাস্তা কোন দিক জানতে পারলে সেদিকে চলতে পারব। চলাটা সহজ হয়ে যাবে।

ভারত ও বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পথে রয়েছে জানিয়ে প্রণব মুখার্জি বলেন, আজ এ মাটিতে দাঁড়িয়ে উপলব্ধি করছি গণতন্ত্রের মধ্য দিয়ে দেশ উন্নয়নের পথে এগিয়ে যায়। বিশ্বব্যাংকের এক রিপোর্টে দেখেছি বাংলাদেশ অন্যতম এগিয়ে যাওয়া দেশের স্বীকৃতি পেয়েছে।  

চবির সম্মানসূচক ডি-লিট ডিগ্রি গ্রহণ প্রণব মুখার্জির

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রণব মুখার্জি

প্রণব মুখার্জি চট্টগ্রামে

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১৮
আরডিজি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad