ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

লেকসিটির ৫৪৮ প্লটমালিক আশায় বুক বাঁধছেন

আল রাহমান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০১৮
লেকসিটির ৫৪৮ প্লটমালিক আশায় বুক বাঁধছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের লেকসিটি প্রকল্পের বর্তমান অবস্থা। ছবি: বাংলানিউজ

চট্টগ্রাম: এক যুগ পর নতুন আশায় বুক বাঁধছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) লেকসিটি হাউজিং প্রকল্পের ৫৪৮ জন প্লটমালিক।

বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন দায়িত্ব নেওয়ার পর প্লটমালিকদের রেজিস্ট্রি প্রদানের উদ্যোগ নেন। ইতিমধ্যে ‘এ’ ব্লকের প্লটমালিকদের রেজিস্ট্রি হয়েছে।

শিগগির শুরু হচ্ছে ‘বি’ ব্লকের রেজিস্ট্রি। তারপর ‘সি’ ব্লকের রেজিস্ট্রি সম্পন্ন করা হবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বুধবার (১০ জানুয়ারি) বাংলানিউজকে মেয়র বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই লেকসিটি হাউজিং প্রকল্পটির ব্যাপারে আমি সচেতনভাবে কাজ করে আসছি। জায়গাটি নিয়ে বিতর্ক ছিল। অবৈধ দখলদার ছিল। আমি তাদের উচ্ছেদ করেছি। জায়গা ডেভেলপ করেছি। নতুন ভাবে সড়ক নির্মাণ করেছি। সংস্কার করেছি। প্রকল্প পরিচালক গতকাল (মঙ্গলবার) আমাকে জানিয়েছেন, ৯২টি প্লট কম পড়েছে। আমার আমলে লেকসিটি না হলেও সিটি করপোরেশন যেহেতু বরাদ্দ দিয়েছে তাই চেয়ারে যখন আমি আছি দায়িত্ব নিতে হচ্ছে। আমি চেষ্টা করছি। ৯২ জনের জন্য জায়গা সন্ধান করছি। যদি আশপাশে জায়গা পাওয়া না যায় তবে একটা না একটা বিহিত করব।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের লেকসিটি প্রকল্পের বর্তমান অবস্থা।  ছবি: বাংলানিউজ

জটিলতা নিরসন করে দ্রুততম ও যৌক্তিক সময়ের মধ্যে প্লট বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন বলে জানান মেয়র।

২০০৬ সালে ফয়স’লেক কৈবল্যধাম সংলগ্ন পাহাড়ি এলাকায় ৩৫ কোটি টাকায় ৩০ একর জমি কিনে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছিল চসিক। আড়াই কাঠার প্রতিটি প্লট ৫৪ জন ২২ লাখ টাকা করে এবং বাকিরা ১৭ লাখ টাকায় কিনেছিলেন। কিন্তু মেয়র গেছেন, মেয়র এসেছেন কেউ প্লটের বাড়ি তৈরি দূরে থাক মালিকানাও পাননি।

চসিক সূত্রে জানা গেছে, দুই দফায় ৫৪৮ প্লটমালিকের কাছ থেকে প্রায় পৌনে ১০০ কোটি টাকা, পরবর্তীতে উন্নয়ন চার্জ বাবদ ২ লাখ টাকা করে আদায় করলেও এ প্রকল্পের টাকা চসিকের অন্য খাতে ব্যয়, রেলওয়ের সঙ্গে সীমানা বিরোধ, পাহাড়কাটা নিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের আপত্তি, সিডিএর অনুমোদনে দীর্ঘসূত্রতা, প্রকল্পের কাজে গাফেলতি বা উদাসীনতার কারণে বছরের পর বছর প্রকল্পটি মুখ থুবড়ে পড়েছিল।

সরেজমিন দেখা গেছে, লেকসিটি হাউজিং প্রকল্পটি বর্তমানে আনসার পাহারায় রয়েছে। সেখানে বেশকিছু নির্মাণশ্রমিক আড়াই কাঠার প্লটের সীমানা তৈরির কাজ করছেন। বিকেল বেলা স্থানীয় তরুণ-তরুণীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজন বেড়াতে আসছেন লেকসিটি প্রকল্পে। দায়িত্বরত আনসাররা জানান শুক্রবার ও ছুটির দিন বেড়াতে আসা মানুষের ভিড় সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয়।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের লেকসিটি প্রকল্পের বর্তমান অবস্থা।  ছবি: বাংলানিউজ

লেকসিটি হাউজিং সোসাইটি মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আফাজ উল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, বর্তমান মেয়র দায়িত্ব নেওয়ার পর লেকসিটির ‘এ’ ব্লকের রেজিস্ট্রি সম্পন্ন হয়েছে। প্রকল্পের অভ্যন্তরীণ প্রধান সড়কও নির্মিত হয়েছে। সমস্যা হচ্ছে এখনো গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ, টেলিফোন, ইন্টারনেট ইত্যাদি ইউটিলিটি নিশ্চিত করা যায়নি। এসব ছাড়া তো সেখানে বসবাস করা যাবে না।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সারা জীবনের সঞ্চয় দিয়ে আমরা একেকজন প্লট কিনেছি। নিজের বাড়িতে শান্তিতে মরতে চাই। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, এক যুগে অনেক প্লটমালিক মারা গেছেন। যারা নিজের প্লটটি দেখেও যেতে পারেননি। সাড়ে পাঁচশ’ প্লট মালিকের মধ্যে অন্তত সাড়ে চারশ’ মানুষের শেষ সম্বল বলতে গেলে ওই প্লট। তাদের আর কোথাও জমিজমা নেই।           

বাংলাদেশ সময়: ২০১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০১৮

এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।