ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

ওসি যখন গায়ক

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৭
ওসি যখন গায়ক সংগীত পরিবেশন করছেন ওসি প্রণব চৌধুরী। ছবি: বাংলানিউজ

চট্টগ্রাম: ‘প্রতিশ্রুতিমান সংগীত শিল্পী প্রনব চৌধুরীর মিউজিক ভিডিও ‘সুমনা’র মোড়ক উম্মোচন ১৭ ডিসেম্বর। এতে আপনি আপনারা সবান্ধব আমন্ত্রিত।’-মিউজিক ভিডিও প্রকাশের প্রাক্কালে গায়ক তার আমন্ত্রণপত্রের প্রথম পাতাতেই বড় হরফে লিখেছেন এই দুটি লাইন।

স্বাভাবিকই তো। গানের জগতের একজন নতুন ‘তারা’ এভাবেই তো দর্শকদের আমন্ত্রণ জানাবেন নিজের শুভক্ষণে।

কিন্তু অস্বাভাবিক বলতে শুধু গায়কের পরিচয়। প্রনব চৌধুরী যে, পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)।

বর্তমানে নগরীর বাকলিয়া থানা এলাকা সামলানোর দায়িত্ব যার হাতে। পুলিশের চাকরির ঘোর ব্যস্ততার মাঝেও সময় বের করে এই ওসি কৈশোরের প্রেম গানকে রূপান্তর দিয়েছেন রেকর্ডে।

তাই ওসিকে দর্শকরা দেখবে এবার পুলিশের সেই চেনা পোশাকে নয়, নয় অস্ত্র হাতেও। পর্দায় দর্শকরা দেখবেন সুরে ঝড় তোলা পুরদস্তুর একজন গায়ক হিসেবেই।

সংগীত পরিবারের সন্তান প্রনব চৌধুরী। ছোটকাল থেকেই ঘরে গান-বাজনার চলন ছিল বেশ। ছোটকালে তাই প্রনব চৌধুরী গায়কই হতে চাইতেন বেশি করে। তবে ২০০০ সালে পুলিশে ঢুকে সেই সম্ভাবনার যেন অকাল মৃত্যু ঘটল। কিন্তু এতোবছর পর সেই হারিয়ে যাওয়া গানের সত্তার পুনর্জন্ম হলো যেন ?

তার ভাষায়, ছোটকাল থেকেই গানচর্চা করতাম। বড় হয়ে গায়ক হবো এমনটাই ছিল চিরস্বপ্ন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়েও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে জড়িত ছিলাম গানকে ভালোবেসে। কিন্তু ২০০০ সালে যোগ দেই পুলিশে। এরপর সেভাবে আর গানের চর্চা হয়ে ওঠেনি ব্যস্ততায়।

আজ এতোবছর পর হঠাৎ মিউজিক ভিডিও বের করার কথা মাথায় কিভাবে আসলো এমন প্রশ্নে নগর পুলিশ কমিশনার মো. ইকবাল বাহারকেই কৃতীত্ব দিলেন এই পুলিশ কর্মকর্তা। বলেন, নগর পুলিশের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নিয়মিত গান গাওয়া হয়। তা দেখে কমিশনার স্যার উৎসাহ দিলেন। সেই শুরু। গত তিন-চারমাস ধরে সময় বের করে গানে সময় দিয়েছি। ’

মিউজিক ভিডিওর নাম সুমনা। এই সুমনাটা কে? প্রশ্নটা মুখ থেকে ফেলতেই হাসলেন প্রনব চৌধুরী। মুখে সেই হাসি নিয়েই বললেন আমি কিছু জানি না, সব গীতিকার জানেন। তবে সত্যি হলো-সুমনাটা কেউ নন। গানের প্রয়োজনে এই চরিত্রের নাম দেওয়া।

তিনি বলেন, প্রথমে মূলত একটি গানই রেকর্ড করেছি। ধারাবাহিকভাবে আরও গান আসবে। গানটি লিখেছেন প্রকাশ চন্দ্র শীল। মিউজিক ডিরেক্টর অসীম চন্দ্র আর মিউজিক মাস্টার ছিলেন পুলক। সবকিছু আয়োজন করেছে পিসফুল মিউজিশিয়ানস্ টিম।

এই গানের চর্চা চাকরিতে সমস্যা সৃষ্টি করে না তো-এমন প্রশ্নে কিছুটা সিরিয়াস প্রনব চৌধুরীর উত্তর-আমার জীবনে চাকরিটাই মেইন। চাকরির ফাঁকে নিজের জন্য যে সময়টা থাকে-সেই সময়টাই মূলত গানে দেই আমি। চাকরি আমার পেশা, গানটা আমার শুধুই নেশা। ’

রোববার (১৭ ডিসেম্বর) বিকেলে থিয়েটার ইনস্টিটিউটের গ্যালারি হলে প্রনব চৌধুরীর মিউজিক ভিডিওর মোড়ক উম্মোচন করা হবে। এতে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন ও পুলিশ কমিশনারসহ অন্যান্য অতিথিদের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।

প্রনব চৌধুরীর সঙ্গে আলোচনা একেবারেই শেষের দিকে। এমন সময় গানের দুটি লাইন গেয়ে শোনাবেন কী-বলতেই ফোনের ওপার থেকে ভেসে আসল-‘রাত সে তো কথা রাখেনি, ভোর হলে যাবে সুদূরে। কথা দিলাম, কোনদিনও যাবো না তোমায় ছেড়ে। ’
কাকে ছেড়ে না যাবার কথা বললেন ওসি প্রনব চৌধুরী?

এই রহস্য কি পুলিশি তদন্তের পর বেরিয়ে আসার মতো বেরিয়ে আসবে একদিন, নাকি কিছু ঘটনার রহস্য যেমন উম্মোচন না কোনোদিন-সেভাবেই থেকে যাবে?

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৭
টিএইচ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad