সাধারণ আম গাছে ফাগুনে আসবে মুকুল। কিন্তু এ পৌষেই আম-গুটি-মুকুলে ভরপুর কিছু আমগাছ।
পাহাড়তলীর এ গবেষণাকেন্দ্রে ড. মাহাবুবুল আলমের নেতৃত্বে বিজ্ঞানীরা ‘বারি আম-১১’ নামের বারোমাসি জাতটি উদ্ভাবন করেন।
কেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বাদল বাংলানিউজকে জানান, সংগ্রহ ও মূল্যায়নের মাধ্যমে চার বছর গবেষণা করে আমের জাতটি উদ্ভাবিত হয়েছে। জাতীয় বীজ বোর্ড ‘বারি আম-১১’ নামে এটিকে মুক্তায়িত করেছে। বর্তমানে এ কেন্দ্র ‘বারি আম-১১’র ১০০টি মাতৃগাছ সৃজন করা হয়েছে। যেখান থেকে কলমের সাহায্যে চারা তৈরি করে চাষি পর্যায়ে প্রতিটি ১৫০ টাকায় সরবরাহ করা হচ্ছে। মাতৃগাছগুলো লাগানো হয়েছে ২০১৪ ও ২০১৫ সালে।
তিনি জানান, এ আমগাছের বিশেষত্ব হচ্ছে বছরব্যাপী ফুল ও ফল দেয়। এর মধ্যে তিনটি মৌসুমে ফুল ও ফল বেশি হয়। অক্টোবর-নভেম্বরে আসা ফুল থেকে ফেব্রুয়ারি-মার্চে ফল আহরণ করা যায়। ফেব্রুয়ারি-মার্চে আসা ফুল থেকে মে-জুনে এবং এপ্রিল-মে মাসে আসা ফুল থেকে আগস্ট সেপ্টেম্বরে ফল আহরণ করা যায়।
কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এএসএম হারুনর রশীদ জানান, নতুন জাতটির আম মাঝারি আকারের হয়। ফল গুচ্ছাকারে থাকে। প্রতি গুচ্ছে পাঁচ-ছয়টি ফল থাকে। একেকটি ফলের গড় ওজন ৩০০-৩৫০ গ্রাম। চার-পাঁচ বছরের একটি গাছে প্রতিবার ফল আহরণের সময় ছোট-বড় ৬০-৭০টি ফল থাকে। বছরে প্রায় ৪০-৫০ কেজি ফল পাওয়া যায়।
তিনি জানান, ফল পাকা অবস্থায় হলুদ রঙের হয়। এতে মিষ্টতা (টিএসএস) ১৮ দশমিক ৫৫ শতাংশ। ভক্ষণযোগ্য অংশ ৭৮-৮০ শতাংশ।
এক প্রশ্নের উত্তরে মো. মনিরুজ্জামান বাদল বলেন, আমরা এটি সারা দেশে ছড়িয়ে দিচ্ছি। এ দেশের মানুষের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তায় এ জাতটি ভূমিকা রাখবে। চাষিদের অমৌসুমে বেশি দামে আম বিক্রি করে লাভবান হতে সাহায্য করবে।
তিনি জানান, সব ফলের সেরা ফল আম। তাই আমকে ফলের রাজা বলা হয়। আমের উৎপত্তিস্থল হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ায়। প্রায় ৪০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে আম উৎপাদিত হচ্ছে। দেশের সব জেলাতে আম হলেও রাজশাহী, চাপাই বিখ্যাত। ইদানীং পাহাড়ি এলাকায় আম্রপালিসহ বিভিন্ন জাতের আমচাষ জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। অনেকে ছাদে, বাড়ির পাশে, রাস্তার ধারে উন্নত জাতের আমের কলম চারা রোপণ করছেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৮১৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৭
এআর/টিসি