ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

পুলিশের উপর হামলা, আসলাম চৌধুরীসহ ১২২ জনের বিচার শুরু

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৭
পুলিশের উপর হামলা, আসলাম চৌধুরীসহ ১২২ জনের বিচার শুরু ছবি গুগল থেকে নেওয়া

চট্টগ্রাম: সাত বছর আগে চট্টগ্রাম আদালত চত্বরে পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় দায়ের হওয়া একটি মামলায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীসহ ১২২ নেতাকর্মীর বিচার শুরু হয়েছে। আসামিরা সবাই মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত যুদ্ধাপরাধী সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী ছিলেন।

মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামের মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) একিউএম নাসির উদ্দিন আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।

সিএমএম আগামী ১৮ মার্চ থেকে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের সময় নির্ধারণ করেছেন বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন ওই আদালতের পেশকার নূরে খোদা।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, আসামিদের মধ্যে ৪৮ জন পলাতক এবং ৭৩ জন জামিনে আছেন। কারাগারে থাকা একমাত্র আসামি আসলাম চৌধুরী অভিযোগ গঠনের সময় আদালতে হাজির ছিলেন।

ঘটনার বিবরণ: ২০১১ সালের ১৯ জানুয়ারি রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে ফটিকছড়ি থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলায় জামিন শুনানির জন্য সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির করা হয়।  

সাকা চৌধুরীর জামিন নাকচ হওয়ার পর তার অনুসারীরা আদালত চত্বরে মিছিল-সমাবেশ শুরু করেন। তারা সরকারবিরোধী স্লোগানের পাশাপাশি সাকা চৌধুরীকে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানায়। আদালত চত্বরে সাকার স্ত্রী ফরহাত কাদের চৌধুরী, দুই ছেলে ফজলুল কাদের চৌধুরী ও হুমাম কাদের চৌধুরী এবং মেয়ে ফারজিন কাদের চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

অন্যদিকে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার প্রথম বাদি আবু তাহের উদ্দিন সাত-আটজন অনুসারী নিয়ে আদালত চত্বরে সাকার বিরুদ্ধে মিছিল বের করেন।  এসময় সাকা চৌধুরীর সমর্থকরা মিছিল লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়ে।  একপর্যায়ে তারা তাহেরের দিকে তেড়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এতে কোতোয়ালি থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বাদি তাহেরকে সরিয়ে দেন।

পরে সাকার কয়েকজন সমর্থক পুলিশকে লক্ষ্য করে বোতল ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এরপর পুলিশ আদালত চত্বর থেকে পাঁচজনকে গ্রেফতার ও লাঠিপেটা করে সাকার অনুসারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।  দুপুর পৌনে দুইটার দিকে সাকার স্ত্রী-সন্তানেরা আদালত চত্বর ত্যাগ করেন।

ওইদিনই গ্রেফতার হওয়া পাঁচজনসহ ৫১ জনের নাম উল্লেখ করে কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করে পুলিশ।  

ওই মামলায় দণ্ডবিধির ৩০৭, ৩৩২, ৩৫৩ ও ৩৪ ধারায় দাখিল করা অভিযোগপত্রে পুলিশ ১২২ জনকে আসামি করে।

২০০৯ সালের ২০ নভেম্বর বিকেলে ফটিকছড়ির বিবিরহাট কমিউনিটি সেন্টারে স্থানীয় বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে সাকা চৌধুরী বলেন, ‘১৫ আগস্ট জাতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ দিন। ১৫ আগস্ট না হলে বাংলাদেশের জনগণ ভোটের অধিকার ফিরে পেত না। একদলীয় শাসনব্যবস্থার অবসান হতো না। ’ সম্মেলনে সাকা আওয়ামী লীগকে সতর্ক করে আরও বলেন, ‘প্রয়োজনে ১৫ আগস্ট থেকে শিক্ষা নিতে হবে।  মুজিব হত্যার রায় জাতি মেনে নেয়নি। ’
এ ঘটনায় নগরীর বাদুরতলা শুলকবহরের মো. আবু তাহেরউদ্দিন বাদি হয়ে চট্টগ্রামের আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।  রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা সরকারের অনুমোদন ছাড়া হয় না। তাই ঘটনার ১৩ মাস পর ২০১০ সালের ২১ ডিসেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ফটিকছড়ি থানার তৎকালীন ওসি মো. মফিজউদ্দিন সাকার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৬৩৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৭

আরডিজি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।