ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

আইসিডি নিয়ে বিতর্কে সংসদ সদস্য ও বন্দর চেয়ারম্যান

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০১৭
আইসিডি নিয়ে বিতর্কে সংসদ সদস্য ও বন্দর চেয়ারম্যান আইসিডি নিয়ে বিতর্কে সংসদ সদস্য ও বন্দর চেয়ারম্যান

চট্টগ্রাম: নতুন দু’টি ইনল্যান্ড কন্টেইনার ডিপোর (আইসিডি) অনুমোদন নিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছেন সংসদ সদস্য শামসুল হক চৌধুরী এবং বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম খালেদ ইকবাল।

একই বিষয়ে অপর তিন জন সংসদ সদস্য শামসুল হকের পক্ষে অবস্থান নিয়ে বন্দর চেয়ারম্যানের প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছেন। এছাড়া বে-টার্মিনালের ভূমি অধিগ্রহণ নিয়ে সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিমের সঙ্গে বিতর্কে জড়ান বন্দর চেয়ারম্যান।

রোববার দুপুরে বন্দর প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে বন্দর উপদেষ্টা কমিটির ১২ তম সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন নৌমন্ত্রী শাজাহান খান।

সভার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন নৌমন্ত্রী। এরপর বক্তব্য রাখেন নৌ সচিব সচিব মো.আবদুস সামাদ। পরে বন্দরের হ্যান্ডলিং কার্যক্রম তুলে ধরে বক্তব্য দেন বন্দর চেয়ারম্যান।

তিনি বলেন, বন্দরের আইসিডি নীতিমালায় ২০ কিলোমিটারের মধ্যে অফডক করার কথা বলা হয়েছে। অন্যদিকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বলেছে ২০ কিলোমিটারের মধ্যে করতে। আইসিডিগুলোকে সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো জমি পাওয়া এবং নতুন করে প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে কয়েক বছর সময় লাগবে। বন্দরের প্রবৃদ্ধি যে হারে বাড়তে তাতে ৬ থেকে ১ বছরের মধ্যে কয়েকটি আইসিডি দরকার।

বিগত ২০ বছরে আইসিডি করতে কেউ এগিয়ে আসেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, দুটি প্রতিষ্ঠান অনুমতি চেয়েছে। তারা বিপুল পরিমাণ অর্থায়ন করেছে। এ দুটি প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি দিলে বন্দরের জন্য ভাল হবে।

নতুন দুটি আইসিডির মধ্যে একটি একে খান ও অন্যটি সামিট-ইস্পাহানি যৌথভাবে করেছে বলে জানান বন্দর চেয়ারম্যান।

সংসদ সদস্য শামসুল হক বলেন, বন্দরের ২০ কিলোমিটারের মধ্যে আইসিডি থাকার দরকার নেই। বর্তমানে ১৮টি আইসিডির মধ্যে ডেলিভারি হচ্ছে না। কারণ সেখানে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নেই।

২০ কিলোমিটারের মধ্যে নতুন আইসিডি অনুমতি দেওয়ার প্রয়োজন নেই। কারণ রাস্তায় ট্রাক-লরি দাড়িয়ে থাকে। এতে যানজট সৃষ্টি হয়। মন্ত্রীরা বিমানবন্দরে ঠিকভাবে যেতে পারলেও সাধারণ মানুষ যেতে পারে না। ফ্লাইট মিস করে।

সাগরিকা এলাকায় আইসিডি করা ঠিক হবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, স্টেডিয়ামের কারণে এটি এখন চট্টগ্রামের নাভি হচ্ছে। নগরীকে যানজটমুক্ত করতে হলে আইসিডিমুক্ত করতে হবে।

আইসিডি বিষয়ে শামসুল হকের সঙ্গে একমত পোষণ করে সংসদ সদস্য ফজলে করিম বলেন, বিমানবন্দর সড়কে ইনকনট্রেড কন্টেইনার ডিপুর অনুমোদন ভুল সিদ্ধান্ত। নগরীতে ট্রাক-লরি আসতে পারবে না।

কেবল শুনি কর্ণফুলিতে ড্রেজিং হবে। কিন্তু শুরু হচ্ছে না। অথচ বিদেশে প্রতিবছর ড্রেজিং হয়। বে-টার্মিনালের কাজও শুরু হচ্ছে না। এটা দ্রুত শুরু করা উচিত।

এসময় বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের নিয়মিত ড্রেজিং হচ্ছে। কেবল কেপিটাল ড্রেজিং হচ্ছে না। মামলার কারণে আটকে ছিল। খুব শিগগির শুরু করবো। বে-টার্মিনালের ভূমি অধিগ্রহণের ফাইল ৬ মাস ধরে ভূমি মন্ত্রণালয়ে পড়ে আছে।

১ বছরের মধ্যে নতুন আইসিডি করতে না পারলে বন্দরে জট তৈরি হবে জানিয়ে তিনি বলেন, বাস্তবতা চিন্তা করতে হবে। এতদিন কেউ এগিয়ে আসেনি। এখন দুটি কোম্পানি এসেছে। ইমিডিয়েটলি আমার আইসিডি দরকার।  

শামসুল হক বলেন, বন্দর সীতাকুণ্ড-মিরসরাইতে ইয়ার্ড করছে। পানগাঁও টার্মিনালের জন্য জাহাজ কিনতে পেরেছে। এখানেও কেউ এগিয়ে না এলে বন্দর আইসিডি করবে, অসুবিধা কোথায়।

ফজলে করিম বলেন, ৬ মাস ভূমি মন্ত্রণালয়ে ফাইল পড়ে আছে, আমি এটা বিশ্বাস করি না। কারণ কাজের পেছনে লেগে থাকলে কাজ হবেই। বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, সংসদ সদস্য মহোদয় আমাকে বিশ্বাস করেননি, আমি দুঃখিত।  

উভয়ের মধ্যে বিতর্ক শুরু হলে নৌমন্ত্রী বলেন, ফাইল পাঠানো হয়েছে। ভূমি মন্ত্রণালয়ে একটু সময়ক্ষেপণ হয় সেটা আমরা সবাই জানি। তবে বন্দরের কাজ হয়ে যাবে। আলোচনা করে আমরা একটা সমাধানে আসতে পারবো।

সাগরিকা এলাকায় নতুন আইসিডি অনুমোদন না দেওয়ার দাবি জানান স্থানীয় সংসদ সদস্য দিদারুল আলম। তিনি বলেন, ২০ কিলোমিটারের বাইরে করা হোক। নজরুল ইসলাম বলেন, বন্দরের ২০ কিলোমিটার বাইরে আইসিডি করা হোক। এতে কনসিডার করা ঠিক হবে না।

আমি নই, তারাই অযাচিত হস্তক্ষেপ করছে

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৪ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০১৭ 

এমইউ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad