নাসিরাবাদ আবাসিক এলাকায় আসওয়াদের প্র্যাকটিস হলে কথা হলো তানিমের সঙ্গে। বোয়ালখালীর গোমদণ্ডীর এ ছেলেটি রেনেসাঁ ও সোলসে ছিলেন।
আসওয়াদের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ মহসিন, মান্না ও আনোয়ার। এর মধ্যে মোহাম্মদ মহসিন অকপটে বললেন, তানিম ভাই হচ্ছেন বেজ গিটারের তারকা। তাকে পেয়ে আমরা বড় পরিসরে শো করার সাহস পাচ্ছি। আমাদের বিশ্বাস, এবার আসওয়াদ অনেক দূর এগোতে পারবে। আধ্যাত্মিক গানের নতুন যে ধারা আমরা সৃষ্টি করতে চেয়েছি সেটি এবার পূর্ণতা পাবে।
এ সময় হাসতে হাসতে তানিম বলেলেন, ব্যান্ড হচ্ছে একটি টিমওয়ার্ক। সবাই মিলে ব্যান্ড। এত দিন ঢাকায় ছিলাম। এখন স্ত্রী-কন্যাসহ চট্টগ্রামে চলে এসেছি। আসওয়াদের সঙ্গে থাকতে পারাটা আমার জন্যও গৌরবের। নিজের শহরে বাকিটা জীবন কাটাতে চাই। বাজাতে বাজাতেই মরতে চাই।
তিনি বলেন, আসওয়াদের সপ্তম অ্যালবাম হবে বাঙালির কালজয়ী একেকটি সময়কে ধারণ করে। ইনস্ট্রমেন্টালি ‘একবার বিদায় দে মা ঘুরে আসি’ গানটি যখন বাজানো হবে তখন একটি সময় শ্রোতাদের চোখের সামনে ভাসবে। তেমনি ‘সেই তুমি কেন এত’, ‘মুখরিত জীবন’, ‘নীল মণিহার’ ইত্যাদি। ‘সুলতানে হিন্দ ইয়া গরিবে নেওয়াজ’সহ ছয়টি গান রেডি করে ফেলেছি আমরা।
তানিম কার কাছে শিখেছিলেন গিটার? এ প্রশ্নের জবাবে বলেন, মুনীর ভাই এ মাইনর, ই মাইনর চিনিয়ে দিয়েছিলেন। মহসিন ভাইয়ের একটি একোয়াস্টিক গিটার ছিল। চর্চার মধ্য দিয়ে একপর্যায়ে হাতে উঠে এলো গিটারের সুর। একসময় ব্যান্ডের সদস্যরাই জোর করে গিটার বাজাতে বলতেন। মহসিন ভাইয়ের জন্য গিটারে সুর তুলে আনতাম। এভাবে বেজ গিটারের প্রেমে পড়ে যাই। এ হিসেবে আমার ‘ওস্তাদ’ মহসিন ভাইও!
স্মৃতি হাতড়ে মোহাম্মদ মহসিন বললেন, ষষ্ঠ শ্রেণিতে আমার গান শেখা। ১৯৮৮ সালে ‘ওশান’ ব্যান্ড গঠন করি। তানিম, আজাদ, পান্থ, জয় ছিলেন। মজার বিষয় হলো তখন জেমস, পার্থ, আইয়ুব বাচ্চুসহ সবাই একটাই ইনস্ট্রুমেন্ট শেয়ার করতেন। একে খানের ছেলের একটা সিলভার কালার ড্রাম ছিল। উনাদের ছত্রছায়ায় থাকতাম আমরা। ১৯৯১ সালে ওশানের অ্যালবাম করি পার্থ বড়ুয়ার তত্ত্বাবধানে। আমি ও মুনীর রাশেদ আমেরিকা চলে যাই। পান্থ, আজাদ, তানিম জয়েন করল সোলসে। আমার এখনো মনে আছে, সিঙ্গাপুর থেকে লাল রঙের একটি বেজ গিটার এনেছিলেন পার্থ দা। সেটি আমি কিনেছিলাম কিস্তিতে।
আবার সুফি গান প্রসঙ্গ। মোহাম্মদ মহসিন বললেন, আসওয়াদের মূল লক্ষ ভিন্ন আঙ্গিকে সুফি সংগীতকে মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া। যাতে মানুষ চিরাচরিত ধ্যান-ধারণা থেকে বেরিয়ে এসে গানে গানে সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করতে পারে। আমরা ফোক সুরের মতো গান করি, কিন্তু ফোক না। আমরা প্রেমের গান করি, সেই প্রেম আল্লাহর সঙ্গে। আমাদের ইনস্ট্রুমেন্ট হিসেবে ড্রাম, কি-বোর্ড, গিটারের পাশাপাশি থাকে স্যাক্সোফোন। আমাদের গান দিয়ে আমরা কিশোর-তরুণ থেকে শুরু করে সব বয়সী শ্রোতাদের আকৃষ্ট করতে চাই। তাদের পবিত্র মনে গানে গানে সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক করে দিতে চাই।
এ সময় সামনে ছোটদের ড্রামস সেট দেখিয়ে বললেন, ‘ওই ড্রাম বাজায় আমার ভাতিজা আয়াজ আনোয়ার। আমাদের কি-বোর্ড বাজায় নবম শ্রেণির ছাত্র সফল। ’
সুফি ব্যান্ড আসওয়াদের 'বিধি' উন্মোচন করলেন সুফি মিজান
বাংলাদেশ সময়: ১৫০৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০১৭
এআর/টিসি