ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

গৃহহীন ২৫৭ পরিবারের স্বপ্ন পূরণ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৯, ২০১৭
গৃহহীন ২৫৭ পরিবারের স্বপ্ন পূরণ এ পর্যন্ত মহেশখালীর ২৫৭টি পরিবার পেয়েছে এ ধরনের টিনের ঘর, পাবে আরও ১২৪৩টি। ছবি: বাংলানিউজ 

কক্সবাজার: তিন সন্তানের জনক মোহাম্মদ ইসহাক স্বল্প আয়ের দিনমজুর, নুন আনতে পান্তা ফুরায় তার। দানে পাওয়া দশ শতকের ভিটেতে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় গড়া পাতার ছাউনির কুড়েঘরে রোদ-বৃষ্টিতে পুড়ে কোনোমতে বাস করতো তার পরিবার। 

আজ সেই ভিটেতেই চকচকে টিনের ঘর! সরকারের ‘নিজ জমিতেই গৃহ নির্মাণ’ দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রকল্পের আওতায় নির্মিত হয়েছে বাড়িটি। থাকার স্থায়ী জায়গা পেয়ে নতুন স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন ইসহাক।

ছেলে-মেয়েরা বড় হয়ে একদিন মানুষের মতো মানুষ হবে- এ আশা নিয়েই এখন তার পথচলা।

৪২ বছরের যুবক ইসহাক কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার কালারমারছড়া ইউনিয়নের ছারারলামা গ্রামের মৃত রাজা মিয়ার ছেলে।

 

সরেজমিনে গেলে ইসহাক বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমার একটি ঘর হবে, তা কল্পনাও করিনি। দীর্ঘদিনের সমস্যার নিরসন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া এই ঘর আমার জীবনের স্মৃতি হয়ে থাকবে’।

‘এই ঘর পেতে এক টাকাও খরচ হয়নি। পাশের লোকজনও দেখতে আসছেন, কিভাবে ঘরটি তৈরি করা হচ্ছে। এখন সন্তানদের লেখাপড়া শিখিয়ে শিক্ষিত করতে চাই’।

শুধু ইসহাকই নন, জমি আছে ঘর নাই- মহেশখালীর এমন ২৫৭টি পরিবার পেয়েছে নতুন বাড়ি।  

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শফিউল আলম সাকিব জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া ২৫৭টি ঘর নির্মাণের কাজ আগামী ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হবে। এর মধ্যে মাতারবাড়ি ইউনিয়নে ৩৬টি, কালারমারছড়ায় ৩২টি, মহেশখালী পৌরসভায় ৪৯টি, ধলঘাটায় ১০টি, শাপলাপুরে ২৬টি, হোয়ানকে ১৩টি, কুতুবজুমে ৫৭টি, বড় মহেশখালীতে ২৪টি ও ছোট মহেশখালীতে ২০টি ঘর নির্মিত হচ্ছে। প্রতিটি বাড়ির জন্য এক লাখ টাকা করে মোট ব্যয় হয়েছে ২ কোটি ৫৭ লাখ টাকা।

পরের পর্যায়ে উপজেলায় আরও ১ হাজার ২৪৩টি ঘর নির্মাণ করা হবে বলেও জানান তিনি।  

কালারমারছড়া ইউনিয়নের আধারঘোনা গ্রামের গুনু মেম্বার বলেন, ‘জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া এই ঘর। দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িত থাকলেও কোনো সময় সরকারি সহায়তা পাইনি। সংসদ সদস্য আশেক
উল্লাহ রফিক আমার ভিটায় ভাঙা ঘর দেখে আমার নাম তালিকাভুক্ত করেছেন। তার প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানাই’।  

ঘর পেয়ে আত্মহারা মাতারবাড়ি ইউনিয়নের মগডেইল গ্রামের বুচা মিয়াও। তিনি বলেন, ‘আজ কিছু বলার নেই। কোনো বিনিময় ছাড়া একটি ঘর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে যা হয়নি, তিনি তা করেছেন’।  

‘ভালো কোনো ঘরে জীবনে ঘুমাতে পারিনি। মাথা গোজার ঠাঁই করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এখন অন্তত একটি ঘরে বাকি জীবন কাটাতে পারবো’।

মাতারবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মাস্টার মোহাম্মদ উল্লাহ জানান, হতদরিদ্র লোকজন কোনো খরচ ছাড়াই ঘর পাচ্ছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল কালাম জানিয়েছেন, নির্মাণ কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হচ্ছে। এটি হতদরিদ্রদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প।

কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া) আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গৃহীত প্রকল্পটি দ্রুততার সঙ্গে বাস্তবায়িত হচ্ছে। অন্য সরকার যা করেনি, তিনি করে দেখাচ্ছেন। এ প্রকল্প চলমান থাকবে। হতদরিদ্র ও গৃহহীন সব মানুষই ঘর পাবেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৩১৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০১৭
টিটি/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad