ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

সশস্ত্র বাহিনীর সফলতা সরকারের আস্থার কারণে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০১৭
সশস্ত্র বাহিনীর সফলতা সরকারের আস্থার কারণে গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনসহ তিন বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সশস্ত্র বাহিনী দিবসের কেক কাটেন।

চট্টগ্রাম: সশস্ত্র বাহিনীর যা কিছু অর্জন ও সফলতা এসেছে তা সম্ভব হয়েছে সশস্ত্র বাহিনীর ওপর সরকারের আস্থা ও প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা এবং বেসামরিক প্রশাসনের আন্তরিক সহযোগিতার মাধ্যমে।

সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম সেনানিবাসের ইবিআরসি প্যারেড গ্রাউন্ডে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে জিওসি ২৪ পদাতিক ডিভিশন ও এরিয়া কমান্ডার চট্টগ্রাম মেজর জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর কবির তালুকদার এসইউপি, এডব্লিউসি, পিএসসি এসব কথা বলেন।

জেনারেল অফিসার কমান্ডিং ও এরিয়া কমান্ডার চট্টগ্রাম এরিয়া, কমান্ডার চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চল এবং এয়ার অধিনায়ক বিমানবাহিনী ঘাঁটি জহুরুল হকের পক্ষ থেকে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

সেনানিবাসে সশস্ত্র বাহিনী দিবসে তিন বাহিনীর চট্টগ্রামের ঊধ্র্বতন কর্মকর্তারা

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য দিদারুল আলম, বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুল মান্নান, সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, রাজনীতিক, মুক্তিযোদ্ধা, কূটনীতিক ও সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর কর্মকর্তা, অবসরপ্রাপ্ত সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাদের শুভেচ্ছা জানান মেজর জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর কবির তালুকদার, কমান্ডার চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চল রিয়ার অ্যাডমিরাল এম আবু আশরাফ বিএসপি, এনসিপি, পিএসসি এবং এয়ার অফিসার কমান্ডিং এয়ার কমডোর মোরশেদ হাসান সিদ্দিকী পিএসসি, জিডি (পি)। গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনসহ তিন বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সশস্ত্র বাহিনী দিবসের কেক কাটেন।

মেজর জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর কবির তালুকদার বলেন, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে এদেশের আপামর জনতা সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে একিভূত হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল প্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতার জন্য। জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে তারই সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনীর সামগ্রিক উন্নয়ন ও আধুনিকায়নে সর্বদাই সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান করেছেন। এ লক্ষ্য অর্জনে ফোর্সেস গোল ২০৩০ এর আওতাধীন বাহিনীগুলোর জনবল বৃদ্ধি, কমান্ড সম্প্রসারণ, আধুনিক প্রযুক্তির যুদ্ধ সরঞ্জাম সংযুক্তি, উন্নত আবাসন ব্যবস্থা ও কল্যাণ ইত্যাদি কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এ উন্নয়ন কার্যক্রমের আওতায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে বিভিন্ন ইউনিট, ব্রিগেড ও ডিভিশনের প্রতিষ্ঠাসহ আধুনিক সমর সরঞ্জাম সংযুক্ত করা হয়েছে। আমাদের সাঁজোয়া, গোলন্দাজ ও পদাতিক বাহিনীতে নতুন নতুন যুদ্ধ সরঞ্জাম সংযোজন এবং যুগোপযোগী প্রশিক্ষণ পরিকল্পনা প্রণয়ণের মাধ্যমে সেনাবাহিনী তথা দেশের প্রতিরক্ষার সক্ষমতা বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে।

  বক্তব্য দেন মেজর জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর কবির তালুকদার

তিনি বলেন, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সারফেস ফ্লিটকে আরও শক্তিশালী ও যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে সংযোজিত হয়েছে গণচীন থেকে কেনা দুটি করবেট ‘বানৌজা প্রত্যয়’ ও ‘বানৌজা স্বাধীনতা’। এ জাহাজ দুটি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর অন্যতম বৃহৎ যুদ্ধজাহাজ যাতে রয়েছে বহুমুখী আক্রমণ মোকাবেলার জন্য সর্বাধুনিক ব্যবহার। এ ছাড়া গণচীনে নির্মিত বানৌজা ‘নবযাত্রা’ ও ‘জয়যাত্রা’ নামে দুটি সাবমেরিন সংযোজিত হয়েছে। যা সমুদ্রের তলদেশে যুদ্ধের সক্ষমতা বহুলাংশে বৃদ্ধি করেছে। শিগগির নৌবহরে আরও দুটি মেরিটাইম পেট্রল এয়ারক্রাফট এবং দুটি অত্যাধুনিক সমরক্ষমতার হেলিকপ্টার সংযোজনের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। অপরদিকে জাহাজ নির্মাণে স্বনির্ভরতা অর্জনের লক্ষ্যে খুলনা শিপইয়ার্ডে যুদ্ধজাহাজ নির্মাণ অব্যাহত রয়েছে। চট্টগ্রামের নৌবাহিনী ঈসা খাঁ ঘাটি চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙর ও অভ্যন্তরীণ নদীপথে সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ অপারেশনসহ বিভিন্ন ধরনের স্যালভেজ কার্যক্রম পরিচালনা ও ইলিশ রক্ষার মাধ্যমে জাতীয় মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

মেজর জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর কবির তালুকদার বলেন, বিমানবাহিনীর একমাত্র কম্পোজিট ঘাঁটি জহুরুল হক। এ ঘাঁটি থেকেই বিমানবাহিনী যুগপতভাবে যুদ্ধবিমান, হেলিকপ্টার ও পরিবহন বিমান উড্ডয়নের মাধ্যমে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের আকাশসীমা এবং বঙ্গোপসাগরের সুবিশাল জলসীমায় প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করা হয়ে থাকে। এ ছাড়া ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপণযোগ্য এফএম-৯০ মিসাইল সিস্টেমের মাধ্যমে দেশের আকাশসীমা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছে। এ ঘাঁটি থেকেই পার্বত্য চট্টগ্রামের দুর্গম অঞ্চলে সেনাবাহিনী ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের বিভিন্ন অপারেশনের ক্লোজ এয়ার সাপোর্ট দেওয়া হয়।

তিনি বলেন, মিয়ানমারে নির্যাতিত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য এ পর্যন্ত ১৩ দেশ থেকে ২৯টি ফ্লাইটে ১ হাজার ৬১ দশমিক ৯০৭ মেট্রিক টন ত্রাণ এসেছে। চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দর দিয়ে আসা এসব ত্রাণ বিমানবাহিনীর ঘাঁটি জহুরুল হক গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে ৪১৫ দশমিক ৯০০ মেট্রিকটন সেনাবাহিনী মাধ্যমে এবং বাকি ত্রাণ অন্যান্য সংস্থার মাধ্যমে কক্সবাজারের বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১২৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০১৭

টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।