ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

সন্দ্বীপে ‘ঝুঁকি’ রোধে জেলা পরিষদের জেটি

সুবল বড়ুয়া, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০১৭
সন্দ্বীপে ‘ঝুঁকি’ রোধে জেলা পরিষদের জেটি সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া ঘাট। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম: জলবায়ুর পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে যাত্রীদের উঠা-নামার ঝুঁকি রোধে সন্দ্বীপের গুপ্তছড়ায় জেটি নির্মাণ ও খাল পুনঃখননের উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ।

এর প্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় জেটি নির্মাণ ও খাল পুনঃখননে প্রয়োজনীয় ড্রয়িং, ডিজাইন এবং প্রাক্কলন প্রস্তুত ও কারিগরি সহায়তার জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরকে (এলজিইডি) নিদের্শনা দিয়েছেন।
 
জেলা পরিষদের সচিব শাব্বির ইকবাল বাংলানিউজকে জানান, সীতাকুণ্ডের কুমিরা থেকে প্রায় ১৬ কিলোমিটার সাগর পাড়ি দিয়ে সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া ঘাটে যেতে হয়।
ছোট-বড় নৌযানের পাশাপাশি লঞ্চের মাধ্যমে এ সন্দ্বীপ চ্যানেলে প্রতিদিন হাজারো যাত্রী পারাপার করেন। সীতাকুণ্ডের কুমিরায় জেটি থাকায় যাত্রীদের কোনো সমস্যা পোহাতে হয় না।
কিন্তু সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া ঘাটে জেটি না থাকায় যাত্রীদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। যাত্রীদের কাদা মাড়িয়েই পাড়ে উঠতে হয়। বিশেষ করে ভাটার সময় সাগরের পানি অনেক কমে যায়। যাত্রীদের প্রায় দেড় থেকে দুই’শ গজ কাদা মাড়িয়ে পাড়ে আসতে হয়। এ সময় যাত্রীদের দুর্ভোগের সীমা থাকে না।
 
এসব বিষয়কে সামনে রেখে চলতি বছরের ৪ জুলাই জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুস সালামের আবেদনের প্রেক্ষিতে ২২ আগস্ট স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মো. জাহিদ হোসেন এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলীকে জেটি নির্মাণের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের জন্য নির্দেশনা দেন।
 
এর আগে অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ সীতাকুণ্ডের কুমিরায় এবং সন্দ্বীপ চ্যানেলে প্রায় ২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে দুই পাশে প্রায় দুই কিলোমিটার দীর্ঘ জেটি নির্মাণ করে দেয়। যা ২০১২ সালের ২৭ ডিসেম্বর উদ্বোধন করেন নৌমন্ত্রী শাজাহান খান। এরমধ্যে যাত্রীরা কুমিরা অংশের জেটি ব্যবহার করতে পারলেও গুপ্তছড়া ঘাটটি ব্যবহার করতে পারতে পারছে না বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
 
পরবর্তীতে জেলা পরিষদের তত্ত্বাবধানে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের আওতায় কুমিরা অংশে প্রায় ২ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে আরও একটি জেটি নির্মাণ করা হয়। যেটি যাত্রীদের উঠা-নামার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। কিন্তু সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া ঘাটে প্রয়োজনীয় স্থানে জেটি না থাকায় যাত্রীদের দুর্ভোগের শেষ নেই।
 
এদিকে, সন্দ্বীপ চ্যানেলে পারাপারের সুবিধার্থে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে জেটি নির্মাণের জন্য আবেদন করা হয়েছে জানিয়ে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুস সালাম বাংলানিউজকে জানান, কুমিরা থেকে যাত্রীরা নির্বিঘ্নে লঞ্চসহ নৌযানে উঠতে পারলেও সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া ঘাটে তা সম্ভব হচ্ছে না। তার কারণ গুপ্তছড়া ঘাটে সঠিক স্থানে জেটি নেই। লঞ্চ থেকে নেমে যাত্রীরা লালবোটে ওঠেন। পরে কাদা মাড়িয়ে অনেক ঝুঁকি নিয়ে পাড়ে ওঠেন। এমনকি অসুস্থ ও বয়োবৃদ্ধ লোকজনকে কাঁধে করে পাড়ে তুলতে হয়। ওই এলাকার স্থানীয়দের অনেক দিনের দাবির প্রেক্ষিতে এবং ঝুঁকি রোধে মন্ত্রণালয়ে জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ডের আওতায় জেটি নির্মাণের জন্য আবেদন করেছি। এ বিষয়ে ইতিমধ্যে এলজিইডিকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগে নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যাতায়াতের সুবিধার্থে প্রয়োজনে জেলা পরিষদের নিজস্ব অর্থায়নে এ জেটি নির্মাণ করা হবে বলেও জানান তিনি।
  
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০১৭
 
এসবি/টিসি
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।