অবৈধ লেভেল ক্রসিংগুলো এলজিইডি, সড়ক ও জনপথ, সিটি করপোরেশন, জেলা পরিষদ, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ, বেসরকারি সংস্থা এবং বেশ কিছু অজানা সংস্থার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
এসব অবৈধ লেভেল ক্রসিংয়ে বার বার দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, রেলের দুটি অঞ্চলে ২ হাজার ৪৯৭ ক্রসিংয়ের মধ্যে পূর্বাঞ্চলে ১ হাজার ২৪৫ এবং পশ্চিমাঞ্চলে ১ হাজার ২৫২।
বৈধ লেভেল ক্রসিংয়ের মধ্যে দুই অঞ্চলে ৪৬৬ টিতে গেইটম্যান থাকলেও ৯৪৬ টিতে গেইটম্যান নেই। এরমধ্যে পূর্বাঞ্চলে ১৮৯ ও পশ্চিমাঞ্চলে ৭৫৭টি।
রেলওয়ে কর্মকর্তারা বলছেন, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা ও স্থানীয়দের বিরোধীতার কারণে এসব ক্রসিং বন্ধ করা যাচ্ছে না। মামলা করেও কোন সুফল পাওয়া যায়নি। বরং বিভিন্ন সময়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হামলার শিকার হয়েছেন।
অবৈধ লেভেল ক্রসিং বন্ধ করতে বেশ কয়েকটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মো. আবদুল হাই।
তিনি জানান, বৈধ এবং অবৈধ লেভেল ক্রসিংয়ে দুর্ঘটনা রোধে বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এরপরও দুর্ঘটনা ঘটছে। বিষয়টি আমলে নিয়ে রেল চলাচল নির্বিঘ্ন করতে এক হাজার অস্থায়ী গেইটম্যান নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। নিয়োগটি সম্পন্ন হলে এসব ক্রসিংয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পরিবহন বিভাগের কয়েকজন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, এসব অবৈধ লেভেল ক্রসিং না থাকলে রেল চলাচল আরো স্বাভাবিক হতো।
রেলওয়ে প্রকৌশল বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, অবৈধ ক্রসিং তুলতে দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে রেলওয়ে। কিন্তু সরকারি-বেসরকারি সংস্থা এবং স্থানীয়দের বিরোধীতার কারণে বন্ধ করা যাচ্ছে না।
উদাহরণ দিয়ে এক কর্মকর্তা জানান, নগরীর ঝাউতলা এলাকায় অবৈধ লেভেল ক্রসিং এ দুর্ঘটনার পর ওই গেইটটি বন্ধের সুপারিশ করেন রেল কর্মকর্তারা। রেলওয়ের এরকম সিদ্ধান্তের পর ক্রসিংটি বন্ধ করা হলেও পরদিন স্থানীয়রা তা না মেনে খুলে দেয়।
সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে পাওয়া তথ্য মতে, এলজিইডি‘র অধীনে ২৫৩টি অবৈধ লেভেল ক্রসিং রয়েছে। সড়ক ও জনপথের ৬, পৌরসভা ৬৫, সিটি করপোরেশন ১৯, ইউনিয়ন পরিষদ ৩২৪, জেলা পরিষদ ১৩, বেসরকারি সংস্থা ৩, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ৩ এবং অন্যান্য সংস্থার অধীনে ৯২টি ক্রসিং রয়েছে।
৩৩ ক্রসিং কার নিয়ন্ত্রণে জানে না রেল:
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে ৮১১টি অবৈধ লেভেল ক্রসিং এর মধ্যে ৩৩টি ক্রসিং কার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে তা জানে না রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
অবৈধ লেভেল ক্রসিং এর তালিকায় দেখা গেছে, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার অধীনে থাকা লেভেল ক্রসিং গুলো নাম উল্লেখ রয়েছে। ৩৩ টি ক্রসিং তালিকায় ‘অজানা সংস্থা’র অধীনে রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, এসব ক্রসিং কাদের নিয়ন্ত্রণে তা জানা যায়নি। ফলে তালিকায় অজানা সংস্থা লেখা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০১৭
এমইউ/টিসি