সিএমপির কর্মকর্তারা ফের এই প্রশিক্ষণের সুযোগ পাবেন কি না তা নিয়েও দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।
সূত্রমতে, গত ১২ নভেম্বর থেকে জর্ডানে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের অ্যান্টি টেরোরিজম অ্যাসিস্ট্যান্সের (এটিএ) তত্তাবধানে সন্ত্রাস দমন বিষয়ক এই প্রশিক্ষণ শুরু হওয়ার কথা ছিল।
প্রশিক্ষণে যেতে না পারার বিষয়ে পলাশ কান্তি নাথ বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের অনেকের পাসপোর্ট ছিল না। আগে এনওসি দিলে পাসপোর্ট হয়ে যেত। এখন জিও লাগছে। জিও পাবার পর আমরা দুইদিনের সরকারি ছুটির ফাঁদে পড়ে গিয়েছিলাম।
‘এরপরও সাতদিনের মধ্যে পাসপোর্ট পেয়ে আমরা জমা দিয়েছিলাম। কিন্তু ইউএস অ্যাম্বেসি জানিয়েছে, মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় সিএমপির জন্য নির্ধারিত প্রশিক্ষণ কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে। ’
সূত্রমতে, গত আগস্টের শেষদিকে পুলিশ সদর দফতর থেকে সিএমপির ২৪ কর্মকর্তার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিয়ে তাদের প্রশিক্ষণের জন্য জর্ডানে যাবার অনুমতি চাওয়া হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে। প্রায় দুই মাস পর গত ১৬ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ অনুমতি দিয়ে সরকারি আদেশ জারি করে।
১৭ অক্টোবর সিএমপির কর্মকর্তারা সরকারি আদেশ যুক্ত করে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন। ২৩ অক্টোবর পাসপোর্টে পান তারা। ২৪ অক্টোবর পাসপোর্টের স্ক্যান কপি ইমেইলে ওয়াশিংটনে স্টেট ডিপার্টমেন্টের কাছে পাঠানো হয়। ফিরতি মেইলে স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে প্রশিক্ষণ স্থগিতের বিষয়টি জানানো হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রশিক্ষণ টিমের এক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আদেশটা যদি এক সপ্তাহ আগে আসত, তাহলেও আমরা যেতে পারতাম। মার্কিন দূতাবাস থেকে আমাদের বারবার অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু জিও’র জন্য অপেক্ষায় আমাদের সময় শেষ হয়ে গেছে।
সূত্রমতে, সিএমপি প্রশিক্ষণের জন্য তিনজন বদলি কর্মকর্তাসহ ২৭ জন নির্ধারণ করেছিল। এর মধ্যে ২৫ জন সিএমপিতে কর্মরত এবং বাকি দুজনকে খাগড়াছড়ি জেলা পুলিশ থেকে নেওয়া হয়েছিল। ২৪ জনের মধ্যে কেউ তাৎক্ষণিকভাবে যেতে অপারগ হলে বদলি কর্মকর্তাদের দিয়ে পূরণ করা হত।
স্পেশাল উইপন্স অ্যান্ড ট্যাকটিক্স (সোয়াট) এবং কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সদস্যদের প্রশিক্ষণার্থী হিসেবে নির্ধারণ করেছিল সিএমপি। ২৪ জনের মধ্যে আছে ২ জন অতিরিক্ত উপ-কমিশনার, ৪ জন সহকারি পুলিশ কমিশনার, ৪ জন পরিদর্শক, ১২ জন উপ-পরিদর্শক (এসআই) এবং ২ জন সার্জেন্ট।
৩২ দিনের কর্মসূচিতে সাধারণ পুলিশের পক্ষে যেসব অভিযান ঝুঁকিপূর্ণ সেই ধরনের কঠিন অভিযান, ভিআইপি কেউ জিম্মি কিংবা অপহরণের শিকার হলে, বড় ধরনের কোনো হামলা হলে, ভয়ংকর সন্ত্রাসী গ্রেফতারের বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভিজ্ঞ কর্মকর্তারা প্রশিক্ষণ দিতেন। গ্লোক-১৭ পিস্তল ও এম-৪ রাইফেল হ্যান্ডলিং, ডায়নামিক এসল্ট, ভেহিকেল এসল্ট, টেকনিক্যাল প্ল্যানিং, ডাইভারশনালি টেকনিকও ছিল এই প্রশিক্ষণের অন্তর্ভুক্ত।
সিএমপির পর জানুয়ারিতে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি) এবং ফেব্রুয়ারিতে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) কর্মকর্তাদের এই প্রশিক্ষণে যাওয়ার কথা আছে।
এডিসি পলাশ কান্তি নাথ বাংলানিউজকে বলেন, এসএমপি এবং আরএমপির প্রশিক্ষণ শেষ হওয়ার পর হয়ত আবারো সিএমপিকে ডাকবে। ডাকতে পারে, আবার না-ও ডাকতে পারে। আমাদের শুধু স্থগিতের বিষয়টি বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১৭
আরডিজি/টিসি