ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

নগরে নবান্নের ছোয়া, দর্শক মাতালেন ফকির শাহাব্বুদ্দিন

চট্টগ্রাম প্রতিদিন ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭২৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৭
নগরে নবান্নের ছোয়া, দর্শক মাতালেন ফকির শাহাব্বুদ্দিন গাইছেন ফকির শাহাবুদ্দিন

চট্টগ্রাম: মাঠজুড়ে নতুন চালের পিঠাপুলি, মুড়ি মুড়কির ছোট্ট দোকান। গ্রাম বাংলার প্রতিচ্ছবিকে তুলে আনার চেষ্টা ক্ষুদ্র পরিসরে। কুলো, চালন, কাস্তে, ধানের শীষ, পাটি দিয়ে সাজানো মঞ্চ। মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) শিশুমেলার আয়োজনে নগরীর এনায়েত বাজার মহিলা কলেজ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়েছে নবান্ন উৎসব।

নাচে গানে মুখরিত নবান্ন উৎসব সত্যিই যেন গ্রামবাংলার এক টুকরো ছবি। যা অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত করে তোলে।

মূলত গ্রামবাংলার আবহমান কৃষিজ ও সংস্কৃতিকে শহুরে প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে ‘আজি নবান্ন উৎসবে নবীন গানে, আয়রে সবে ছুটে প্রাণের টানে’ এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে শিশুমেলা তৃতীয়বারের মতো এ নবান্ন উৎসবের আয়োজন করে।

প্রতিবারের মত এবারও উৎসবের উদ্বোধন করেন তিন প্রান্তিক কৃষক।

তাঁরা হলেন-সাতকানিয়া থেকে আসা কৃষক মোহাম্মদ আইয়ুব, নজির আহমেদ ও স্বপন দাশ।

উৎসব উদযাপন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ কিউ এম সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে উৎসব প্রধান অতিথি ছিলেন গীতিকার ও সুরকার সৈয়দ মহিউদ্দিন।

আবৃত্তিশিল্পী আয়েশা হক শিমুর সঞ্চালনায় উৎসবে বক্তব্য রাখেন শিশুমেলার সভাপতি অধ্যক্ষ রীতা দত্ত, এনায়েত বাজার মহিলা কলেজ পরিচালনা পরিষদের সদস্য জামশেদুল আলম চৌধুরী, পরিষদের কো-চেয়ারম্যান কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন, সদস্য সচিব রত্নাকর দাশ টুনু এবং প্রধান সমন্বয়কারী রুবেল দাশ প্রিন্স।

প্রতিবছর ডিসি হিলে নবান্ন উৎসবের আয়োজন করা হলেও সম্প্রতি প্রশাসন ডিসি হিলে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় ভেন্যু পরিবর্তন করা হয়েছে জানিয়েছে আয়োজক কমিটি।

উ‍ৎসবে বক্তারা বলেন, নবান্ন হলো আমাদের বাংলার সংস্কৃতির একটা প্রধান অংশ। ঘরে ঘরে ওঠে নতুন ধান। হাসি ফোটে কৃষকের মুখে। অগ্রহায়ণের শুরুতে গ্রামে গেলে দেখা যাবে সেখানে উৎসব আয়োজন চলছে। নতুন চাউলের পিঠা বানিয়ে পাড়াপ্রতিবেশীদের পিঠা খাওয়ানোর উৎসব। একভাবে বলা যায়, এই হলো সম্প্রীতির উৎসব।

বক্তারা সম্প্রতি প্রশাসনের পক্ষ থেকে ডিসি হিলে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় ক্ষোভপ্রকাশ করেন। তারা বলেন, আমরা জানি বর্তমান সরকার মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি। অথচ একের পর এক সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের ওপর নিষেধাজ্ঞা নেমে আসছে। যেখানে জোট বেঁধে অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর সময় এসছে, সেখানে অনুষ্ঠান করার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া কোনভাবেই কাম্য নয়। আশা রাখি আগামীতে এই নবান্ন উৎসব আবারো ডিসি হিল প্রাঙ্গণেই অনুষ্ঠিত হবে।

সাংস্কৃতিক পর্বে সুরাঙ্গন বিদ্যাপীঠ, তারুণ্যের উচ্ছ্বাস, সঞ্চারী নৃত্যকলা কেন্দ্রের শিল্পীরা অংশ নেন। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের বার্তা নিয়ে লোকগান পরিবেশন করেন দেশের জনপ্রিয় শিল্পী ফকির শাহাবুদ্দিন। তিনি একে একে গেয়ে যান ‘একদিন মাটির ভিতরে হবে ঘর’, ‘গাওয়ার উপর চলে গাড়ি’, ‘ও জেডা ফইরার বাপ’, ‘আমায় এতো দুঃখ দিলা বন্ধুরে’, ‘আমারে আসিবার কথা কইয়া’ সহ আরও বেশ কিছু জনপ্রিয় গান।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৭

এসবি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।