ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প ‘চূড়ান্ত’ করবে ৫ সদস্যের কমিটি

আল রাহমান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০১৭
জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প ‘চূড়ান্ত’ করবে ৫ সদস্যের কমিটি বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের দুঃখ জলাবদ্ধতা। ফাইল ছবি

চট্টগ্রাম: বাণিজ্যিক রাজধানীর জলাবদ্ধতা নিরসনে শর্ত সাপেক্ষে একনেকে অনুমোদন পাওয়া ৫৬১৬ কোটি ৫০ লাখ টাকার মেগাপ্রকল্পের কাজ চূড়ান্ত করবে পাঁচ সদস্যের টেকনিক্যাল কমিটি। রোববার (১২ নভেম্বর) স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এ কমিটি গঠিত হয়।  

টেকনিক্যাল কমিটিতে সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার ইন চিফকে আহ্বায়ক, চট্টগ্রাম ওয়াসা, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) প্রতিনিধি, পানি উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রামের প্রধান প্রকৌশলীকে সদস্য ও প্রকল্প পরিচালককে সদস্যসচিব করা হয়।  

বৈঠকে অংশ নেন চসিকের প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, চসিকের পক্ষ থেকে আমরা প্রকল্পের ডিপিপির ১৮টি সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা দিয়েছি। প্রকল্পের মূল লক্ষ্য জলাবদ্ধতা নিরসন।
এর জন্য মুখ্য কাজ কী তা একনেক সভায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্যে সুস্পষ্ট।

প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ভালোভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা বা গবেষণা করে প্রস্তাবিত প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে বলে মনে হয় না। খালের কাদা অপসারণ ও খাল পুনঃখননের জন্য আলাদা আলাদা প্রাক্কলন করা হয়েছে। কিন্তু খাল পুনঃখনন করলেই কাদা অপসারিত হয়, এর জন্য আলাদা প্রাক্কলনের বিষয়টি বোধগম্য নয়। প্রকল্পের মূল কার্যক্রম হবে জোয়ারের পানি যাতে শহরে প্রবেশ করতে না পারে তার ব্যবস্থা করা এবং বৃষ্টির পানি যাতে খালগুলোর মাধ্যমে জলাশয়ে জমা হয় এবং পরবর্তীতে জলাশয়ে জমাকৃত পানি পাম্পের মাধ্যমে বের করে দেওয়া। এ কার্যক্রমসমূহ বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন সংস্থা/বিভাগ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে একটি সমন্বয়ের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে, যা প্রকল্পে পরিলক্ষিত হয়নি।

একনেক সভাতে পানিসম্পদ মন্ত্রী বলেছিলেন, প্রস্তাবিত প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয়ের ৮০ শতাংশই প্রস্তাব করা হয়েছে রিটেইনিং ওয়াল ও জমি অধিগ্রহণ খাতে। যা দিয়ে চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা দূর করা সম্ভব হবে বলে মনে হয় না।

একনেকে গত ৯ আগস্ট ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পটি প্রাথমিক অনুমোদনের শর্ত ছিল ‘রিটেইনিং ওয়াল স্থাপনের বাস্তবতা, ফ্ল্যাড ওয়ালের প্রয়োজনীয়তা, পাড় বাঁধাই, জলাশয়, খাল পুনঃখনন, পাম্প হাউজ, টাইডাল রেগুলেটর ইত্যাদি বিষয়গুলো পরীক্ষা করে এর কার্যক্রমগুলো পুনঃনির্ধারণ করে ডিপিপি পুনর্গঠন করতে হবে। চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা দূর করার লক্ষ্যে যে যে সংস্থা অধিদপ্তর/বিভাগ/মন্ত্রণালয়ের সাথে সমন্বয়ের প্রয়োজন হবে তাদের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ব্যবস্থা করতে হবে। উক্ত পুনর্গঠনের ফলে প্রকল্পের মোট প্রাক্কলিত ব্যয় হ্রাস-বৃদ্ধি হলে ডিপিপি পুনর্গঠন করতে হবে এবং পুনর্গঠিত ডিপিপিতে মাননীয় মন্ত্রী, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন গ্রহণ করতে হবে। ’

সিডিএর প্রকৌশলী আহমেদ মাঈনুদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, নবগঠিত পাঁচ সদস্যের টেকনিক্যাল কমিটি সভা করে প্রকল্পের বিভিন্ন অঙ্গ ও অঙ্গভিত্তিক ব্যয় পর্যালোচনা করে তা বাস্তব সম্মতভাবে নির্ধারণ করবে। চলতি সপ্তাহে বা আগামী সপ্তাহে এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার ইন চিফের নেতৃত্বে কমিটির সভা হবে।

জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প প্রসঙ্গে চসিকের মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন বাংলানিউজকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা চট্টগ্রামের দুঃখ জলাবদ্ধতা নিরসনে আন্তরিক। এখন আমাদের আন্তরিকতা দেখাতে হবে। প্রতিরক্ষা দেয়াল, খাল পাড়ে রাস্তা নির্মাণ, বন্যার পানি সংরক্ষণাগার, আরসিসি গার্ডার ব্রিজ খাতে ব্যয় সাশ্রয়ের সুযোগ রয়েছে। আবার নগরীর একপাশ জলাবদ্ধতা মুক্ত রেখে আরেকপাশ অরক্ষিত রাখা হলে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে। তাই আমরা গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রস্তাব রেখেছি। আশা করি, প্রকল্পটি পুনর্গঠন হলে এসব গুরুত্ব পাবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০১৭

এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।