চসিক সূত্রে জানা গেছে, প্লাস্টিকের বোর্ডে টেকসই ছবিসহ পরিচয়পত্র দেওয়া হবে হকারদের। যাতে নাম, বাবা-মা’র নাম, স্থায়ী ঠিকানা, মোবাইল নম্বার, জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, সমিতির নাম, বসার স্থান, চসিকের সিরিয়াল নম্বর ইত্যাদি থাকবে।
গত নভেম্বরে নগরীর ১২টি স্পটের অধীনে হকারদের তালিকাভুক্ত করেছে চসিক। এর মধ্যে পুরাতন রেল স্টেশন থেকে জিপিও, তিন পোলের মাথা থেকে নিউমার্কেট (জুবিলি রোড), কেসি দে রোড থেকে আন্দরকিল্লা এলাকায় ৩৫১৬ জন, বদ্দারহাট-মুরাদপুর-দুই নম্বর গেট এলাকায় ৪৫৪ জন, অক্সিজেন-বায়েজিদে ১৬৭ জন, কাজীর দেউড়ি, চকবাজার, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ এলাকায় ১৬৯ জন, অলংকার-কর্নেলহাট এলাকায় ৪২২ জন, আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকায় ১২৪৭ জন, স্টিলমিল-কাটগড় এলাকায় ৩৫৯ জন, সিইপিজেড-বন্দরটিলা এলাকায় ৫৩৫ জন, শাহ আমানত সেতু এলাকায় (নতুন ব্রিজ) ৩০৩ জন, জিইসি মোড়ে ৪১৫ জন, ফ্রিপোর্ট-বিশ্বরোড-নিমতল এলাকায় ৪৮৭ জন এবং বকশিরহাট, লালদীঘি, কোর্ট বিল্ডিং, সদরঘাট ও বিআরটিসি এলাকায় ৫২৫ জন হকার রয়েছেন।
সূত্র জানায়, চসিকের সেবা নিশ্চিত ও কর্মীদের দায়িত্বশীল করে তুলতে নতুন করে পরিচয়পত্র দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে চসিকে ৯৪৯৩ কর্মকর্তা-কর্মচারী কাজ করছে। কিন্তু নগর ভবন, রাজস্ব সার্কেল ও মাঠ পর্যায়ের কাউকেই পরিচয়পত্র গলায় ঝোলাতে দেখা যায় না। এর ফলে কারা চসিকের লোক, কারা অতিথি তা বোঝা কঠিন হয়ে পড়েছে। ফলে চসিকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সবাইকে পরিচয়পত্র দেওয়ার এবং তা গলায় ঝোলানো বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব দিয়েছেন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনকে।
বিষয়টি স্বীকার করে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বাংলানিউজকে বলেন, সচিবালয় থেকে শুরু করে প্রায় সব সরকারি-বেসরকারি অফিসে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গলায় পরিচয়পত্র ঝোলানো থাকে। চসিকে বিষয়টি অনুপস্থিত। অবশ্য এটাও ঠিক, কারও কাছে পরিচয়পত্র আছে, আবার কারও কাছে নেই। আমরা সবার জন্য বিষয়টি বাধ্যতামূলক করতে চাই। আমি মনে করি, চসিকের পরিচয়পত্র যখন একজন কর্মী গলায় ঝোলাবেন তখন তিনি সেবার প্রতি আরও আন্তরিক হবেন। প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ও সুনাম বৃদ্ধিতে আরও বেশি আন্তরিক হবেন। আমি নিজেও পরিচয়পত্র গলায় ঝুলিয়ে অফিস করবো।
হকারদের প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, হকারদের শৃঙ্খলায় আনার প্রক্রিয়া শুরুর সময় আমরা বলেছি তাদের পরিচয়পত্র ও একই রঙের ছাতা দেব। পরিচয়পত্র ডিজাইনের কাজ চলছে। শিগগির ছাপা হয়ে যাবে। এরপর বিতরণ শুরু করব।
তিনি বলেন, ইতিমধ্যে ম্যাজিস্ট্রেটের তত্ত্বাবধানে নগরীর হকারদের আমরা জরিপ করেছি। ‘অন দ্যা স্পট’ ভিত্তিতে ৮ হাজার ৬০০ হাজার তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। যদিও একসময় ধারণা করা হতো লক্ষাধিক হকার আছে নগরীতে। আমরা একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ সম্পন্ন করেছি। পর্যায়ক্রমে তাদের নির্ধারিত এলাকায় পুনর্বাসনের পরিকল্পনাও আছে আমার। বিশেষ করে যেখানে আমরা জায়গার সংস্থান করতে পারবো কিংবা জায়গা আছে সেখানে আমরা হকার মার্কেট তৈরি করে ওই এলাকার হকারদের পুনর্বাসন করব।
এক প্রশ্নের উত্তরে মেয়র বলেন, নিউ মার্কেট মোড়ের অমর চাঁদ রোড এলাকায় আমরা প্রায় ১৬ গণ্ডা জায়গার খোঁজ পেয়েছি যা হকারদের পুনর্বাসনের জন্য চসিকের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল। শিগগির আমরা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০১৭
এআর/টিসি