ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চট্টগ্রামে ‘হামকা গ্রুপের’ প্রধান মিলন গ্রেফতার

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০১৭
চট্টগ্রামে ‘হামকা গ্রুপের’ প্রধান মিলন গ্রেফতার হামকা গ্রুপের প্রধান গোলাম সরওয়ার মিলন

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম নগরজুড়ে দাপিয়ে বেড়ানো একসময়ের দুর্ধর্ষ ছিনতাইকারী চক্র ‘হামকা গ্রুপের’ প্রধান গোলাম সরওয়ার মিলনকে (৩৬) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।  জুয়ার আসর থেকে বের হয়ে বাসায় ফেরার পথে নগরীর ডবলমুরিং থানা পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে দুর্ধর্ষ এই ছিনতাইকারী।

শনিবার (২১ অক্টোবর) রাত দেড়টার দিকে নগরীর পলোগ্রাউণ্ড সংলগ্ন পোস্তার পাড় এলাকা থেকে মিলনকে আটক করা হয়েছে।   তার কাছে একটি একনলা বন্দুক ও ৫ রাউন্ড কার্তুজ পাওয়া গেছে বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন ডবলমুরিং থানার ওসি একেএম মহিউদ্দিন সেলিম।

ওসি মহিউদ্দিন সেলিম বাংলানিউজকে বলেন, হামকা গ্রুপ ছিনতাইয়ের পাশাপাশি সাইলেন্ট কিলিং করে পুরো নগরীকে একসময় আতঙ্কের নগরীতে পরিণত করেছিল।   মিলন এই গ্রুপের একজন প্রতিষ্ঠাতা এবং নেতা।

  দীর্ঘদিন ধরে মিলন পলাতক ছিল।   ২০১২ সালের পর এবার তাকে আমরা গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি।  

অভিযানে অংশ নেয়া ডবলমুরিং থানার উপ-পরিদর্শক কায়সার হামিদ বাংলানিউজকে জানান, মিলনের বিরুদ্ধে ৩টি অস্ত্র, খুন, ছিনতাই ও নারী নির্যাতনের অভিযোগে ৩টিসহ মোট ৬টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে।   তবে আটকের পর মিলন জানিয়েছে, তার বিরুদ্ধে ১৯টি মামলা আছে।

সূত্রমতে, ২০০৬ সালে গোলাম সরওয়ার মিলন, নূরুল আলম, নান্টুসহ কয়েকজন মিলে হামকা গ্রুপ গঠন করেন।   এর আগে তারা মোগলটুলি এলাকার দুর্ধর্ষ ছিনতাইকারী খোরশেদ, কানা মান্নানদের দলে ছিলেন।  

২০০৭ ও ২০০৮ সালে চট্টগ্রামের মেধাবী ছাত্র শাওন, বিআরটিএ কর্মকর্তা প্রীতি রঞ্জন চাকমা, প্রবাসী রফিক, আইনজীবী দ্বীন মোহাম্মদসহ প্রায় ১১ জন সাইলেন্ট কিলিংয়ের শিকার হন।  

২০১১ সালের ১৯ জুলাই হাটহাজারীতে একটি খুনের চেষ্টার ঘটনায় তিন ছিনতাইকারী ধরা পড়ে।   তাদের স্বীকারোক্তিতে প্রথম হামকা গ্রুপের নাম প্রকাশ হয়।   একের পর এক বের হয় এই হামকা গ্রুপের হাতে খুনের লৌমহর্ষক তথ্য।

প্রথমদিকে নান্টু নামে একজন হামকা গ্রুপের নেতৃত্বে ছিল।  ২০১১ সালে নান্টুকে গ্রেফতারের পর মিলন নেতৃত্বে আসে।  

ওসি একেএম মহিউদ্দিন সেলিম বাংলানিউজকে বলেন, হামকা গ্রুপের সদস্যরা নির্জন স্থানে থেকে ছিনতাইয়ের জন্য টার্গেট করে।   নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে ধরে গলায় গামছা পেঁচিয়ে খুন করে তার টাকাপয়সা, মোবাইল, মালামাল লুট করে লাশ ফেলে দিয়ে চলে যেত।   নির্জন স্থানে লাশ পড়ে থাকায় পরিচয় এবং খুনির সন্ধান করতে পুলিশকে বেগ পেতে হত।  

‘তবে অভিযানে হামকা গ্রুপের বেশ কয়েকজন সদস্য ধরা পড়ার পর তারা সম্প্রতি কৌশল পাল্টে ফেলে।   এখন হামকা গ্রুপের সদস্যরা সিএনজি অটোরিকশার মাধ্যমে ব্যাগ টান দেওয়া, মলম পার্টি ও অজ্ঞান পার্টির মাধ্যমে ছিনতাইয়ে জড়িয়ে পড়ে। ’ বলেন ওসি

নগর গোয়েন্দা পুলিশের সূত্রমতে, নগরীতে সক্রিয় ছিনতাইকারী গ্রুপগুলোকে অস্ত্র সরবরাহ করেন এই মিলন।   ২০১২ সালে জেল থেকে বের হবার পর পুলিশের সঙ্গে গুলি বিনিময়ে মিলন ডান পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছিল।   এরপরও তাকে ধরতে পারেনি পুলিশ।   এর মধ্যে একটি মামলায় তার ১০ বছরের সাজাও হয়।

বাংলাদেশ সময় ১৪৩৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০১৭

আরডিজি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad