ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

বৃষ্টির পানিতে ভিজে ঢাকা গেলেন সুবর্ণ ট্রেনের যাত্রীরা

মো.মহিউদ্দিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯২৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০১৭
বৃষ্টির পানিতে ভিজে ঢাকা গেলেন সুবর্ণ ট্রেনের যাত্রীরা বৃষ্টির পানিতে ভিজে ঢাকা গেলেন সুবর্ণ ট্রেনের যাত্রীরা, ছবি: সংগৃহিত

চট্টগ্রাম: ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে সবচেয়ে জনপ্রিয় ট্রেন সুবর্ণ এক্সপ্রেস। সময়ানুবর্তিতা এবং ভাল সেবার কারণে চালুর পর থেকে এখনও পর্যন্ত জনপ্রিয়তায় ছেদ পড়েনি বিরতিহীন এ ট্রেনের। অথচ শনিবার (২১ অক্টোবর) সকালে চট্টগ্রাম ছেড়ে যাওয়া এই ট্রেনের দুটি বগির যাত্রীদের বৃষ্টির পানিতে ভিজে চরম অস্বস্তি নিয়ে ঢাকা যেতে হয়েছে। অনেকে নিজ আসনে বসতেও পারেননি।

প্রথম শ্রেণির ট্রেনে এ ধরনের অব্যবস্থাপনা নিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগী যাত্রীরা। তারা বলছেন, সংশ্লিষ্ট বিভাগের গাফিলতির কারণেই জনপ্রিয় ট্রেনের ভ্রমণ আরামদায়ক হচ্ছে না।

সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা গেছেন চট্টগ্রাম বন্দরের সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) মো. জাফর আলম। বৃষ্টির পানিতে আসনে বসতে না পারা ও লাগেজ ভিজে যাওয়ার প্রত্যক্ষদর্শী তিনি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, ‘সারাদেশে বৃষ্টি চলছে। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকামূখি সুবর্ণ এক্সপ্রেসের 'চ' ও 'ছ' কোচের যাত্রীগণও উপভোগ করছেন মাথার উপর বৃষ্টি। সুবর্ণবিন্দু জলে স্নাত যাত্রীগণ পূণ্যলাভ করছেন। এই সুবর্ণ সুযোগ বঞ্চিত যাত্রীরা প্রতিবাদ করবে বলে সংগঠিত হচ্ছে। টিকেটের সাথে নাস্তার মতো ছাতা ফ্রি দেবার বিষয়ে আলোচনা চলছে। ’

শনিবার বেলা ১২টায় কথা হয় জাফর আলমের সঙ্গে। তখন সুবর্ণ এক্সপ্রেস পৌঁছেছে ঢাকা বিমানবন্দর স্টেশনে। জানতে চাইলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘চ’ ও ‘ছ’ বগির জানলা ফাটা থাকায় পানি ঢুকছে। এছাড়া ছাদ থেকেও পানি পড়ছে। ফলে অনেক দুই বগির যাত্রীরা নিজ আসনে বসতে পারেনি। মালপত্র সরিয়ে আসন থেকে সরে গিয়ে বিভিন্ন স্থানে দাঁড়িয়ে রয়েছে।

সুবর্ণ ট্রেনের দুটি বগিতে যাত্রীদের মাথার উপর বৃষ্টির পানি

বেশ কয়েকজন যাত্রী বিষয়টি ট্রেন পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের জানালেও কোন ব্যবস্থা নিতে পারেনি তারা।  

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, রেলের ইঞ্জিন ও কোচ মেরামত এবং রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব যান্ত্রিক বিভাগের। যান্ত্রিক বিভাগের তদারকির অভাবে যাত্রীরা এ ধরনের পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) আবদুল হাই। তিনি বাংলানিউজকে বিষয়টি আমাকে এখনো জানানো হয়নি। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বগি দুটির জানলার কাঁচ ফিটিংস যথাযথ না হওয়ায় বৃষ্টির ঢুকে পড়েছে। পানি গড়িয়ে যাত্রীদের আসনে চলে যায়। এতে অনেক যাত্রীকে উঠে দাঁড়িয়ে ঢাকা যেতে হয়েছে। এছাড়া ছাদ বেয়ে পানি পড়ায় লাগেজে পানি পড়েছে। লাগেজগুলো সরিয়ে যাত্রীরা বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যায়।  

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলী মনজুরুল আলম চৌধুরীর মোবাইলে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

যান্ত্রিক বিভাগের তদারকির অভাবের বিষয়টি স্বীকার জিএম মো.আবদুল হাই বলেন, সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণের অভাব রয়েছে। এ বিষয়ে যান্ত্রিক বিভাগের ব্যাখ্যা তলব করা হবে।

রেল সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রেলের উন্নয়নে সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিচ্ছে। কিন্তু সঠিক পরিকল্পনার অভাবে এসব টাকা ব্যবহার হচ্ছে না। ফলে রেলের যে উন্নয়ন হওয়ার কথা তা হচ্ছে না।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৬ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০১৭

এমইউ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।