চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের ৬৪ নম্বর শয্যায় এ চিত্র দেখা গেছে।
নুরুল হক ও জমির হোসেন বাংলানিউজকে জানান, গুরা মিয়াকে মিয়ানমারের স্থানীয় সন্ত্রাসীরা ধারাল ছোরা দিয়ে গলায় কোপ দিয়েছে।
সৈয়দ হোসেনের ছেলে গুরা মিয়া বাংলানিউজকে বলল, এ দুজনকে আমি আগে চিনতাম না। যখন সন্ত্রাসীদের কোপের পর মরার মতো পড়ে ছিলাম তখন উনারা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে। সেই থেকে পরিচয়।
সে জানায়, তারা দুই বোন এক ভাই। পরিস্থিতি ভালো হবে মনে করে তারা মিয়ানমারে পড়ে ছিল। অন্যরা আসছিল না বলে তারাও পালিয়ে আসেনি। একদিন হামলা করে সেনাবাহিনী। বলল, বাংলাদেশে চলে যা। পরদিন হামলা করল স্থানীয় সন্ত্রাসীরা। এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে। প্রথম কোপটি বসায় আমার গলায়। আমি দৌড়ে পালাতে চেষ্টা করি। কোপ লাগে কানের পাশ দিয়ে ঘাড়ে। বাঁচব মনে হয়নি।
পড়াশোনা করেছে কিনা জানতে চাইলে বলে, ‘দুঃখ গরি খাই। ’
বুচিডংয়ের নুরুল হক। পেশায় গরু ব্যবসায়ী। বলেন, আমাদের নিজবাড়ি থেকে ৩০-৩৫ মাইল দূরে (ভেতরে) ওয়াইসিল্লা পাড়ায় গুরা মিয়ার (১৬) বাড়ি। ওরা ঢালুতে। আমরা উপরে। ওদের আসতে হয় আমাদের গ্রামের ওপর দিয়ে। আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঢালার মুখ থেকে তাকে উদ্ধার করে এনেছি।
মংডু এলাকার জমির হোসেন জানান, কোরবানির দিন আমরা সীমান্ত পার হই। ক্যাম্পে শুনতে পাই ১০-১২ জনকে কুপিয়েছে। এর মধ্যে একটি কিশোরও আছে। ঢালার মুখে সে বেঁচে আছে। আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম তাকে উদ্ধার করব। বাচ্চাটির পরান বাঁচাতে পারলে আল্লাহর কাছে প্রতিদান পাব। এরপর কয়েকজন কামলাসহ দল ভারী করে আবার গেলাম ওপারে।
গুরা মিয়ার ছবি কক্সবাজার হাসপাতালে থাকার সময় একজনকে বলে ফেসবুকে দিয়েছি। সেখানে লিখতে বলেছি, ছেলেটি কক্সবাজার হাসপাতালের চারতলায় আছে। মা-বাবা ও স্বজন থাকলে যেন আমাদের মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করেন।
তিনি বলেন, ডাক্তার বলেছেন গুরা মিয়া সুস্থ হবে। কিন্তু সময় লাগবে। এদিকে আমরা দুজন মানুষের খাবার কিনে খাওয়া, গুরা মিয়ার পথ্য এসবে অনেক টাকা পুঁজি হারিয়েছি। অনেকেই সাহায্য করেছেন। এক্স-রে করানো হয়েছে। আমরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি নুরুল হক ক্যাম্পে ফিরে যাবে। আমি থাকব রোগীর পাশে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০১৭
এআর/টিসি