ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

ভাসানচরের মালিকানার দাবিতে সন্দ্বীপবাসীদের সমাবেশ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০১৭
ভাসানচরের মালিকানার দাবিতে সন্দ্বীপবাসীদের সমাবেশ ভাসানচরের মালিকানার দাবিতে সন্দ্বীপবাসীদের সমাবেশ

চট্টগ্রাম: সন্দ্বীপের সীমানা ঘিরে জেগে ওঠা চরের মালিকানার দাবি জানিয়েছে দ্বীপবাসীরা। বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) সকালে উপকূলীয় বেঁড়িবাধ এলাকায় ভাসানচরের দাবিতে সমাবেশ ও সাংবাদিক সম্মেলন করেছে সন্দ্বীপ জেগে উঠা ভূমি রক্ষা পরিষদ।

সন্দ্বীপের সারিকাইত ইউনিয়নের উপকূলীয় বেঁড়িবাঁধ এলাকায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে সন্দ্বীপের বিভিন্ন এলাকায় সাধারণ মানুষ, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। পরে সাংবাদিক সম্মেলন করেন পরিষদের নেতারা।

সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সন্দ্বীপ  জেগে উঠা ভূমি রক্ষা পরিষদের আহ্বায়ক ও সন্দ্বীপ মাইটভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের  চেয়ারম্যান লায়ন মিজানুর রহমান।   লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ঠ্যাঙ্গারচর (ভাসানচর) সন্দ্বীপের পাশে জেগে ওঠা চর হলেও  নোয়াখালীর দাবি করা হচ্ছে।

বনবিভাগ-সহ সরকারি একাধিক সংস্থার জরিপে সন্দ্বীপের মাত্র কয়েক কিলোমিটারের মধ্যে জেগে ওঠা চরটি সন্দ্বীপের আদি ইউনিয়ন ন্যায়ামস্তীর অংশ।

তিনি বলেন, নানা কারণে সন্দ্বীপবাসীর দাবি না মেনে  নোয়াখালী জেলার আওতাভুক্ত করা হয়েছে। সন্দ্বীপের আপামর জনগণ অন্যায় এই দাবি  কোনভাবে  মেনে নিচ্ছে না। চলতি বছরের ২৮  ফেব্রুয়ারি  মানববন্ধন-সমাবেশের পাশাপাশি চলমান আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে সন্দ্বীপবাসী তাদের হিস্যা বুঝে নিতে বৃহত্তর আন্দোলনের দিকে যাবে।

লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, বাংলাদেশের মূলভুখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন একটি প্রাচীন জনপদ সন্দ্বীপের  মোট  মৌজা  ছিল ৬০টি। কিন্তু মেঘনার ভাঙনে বর্তমানে ৩৮টি মৌজা অবশিষ্ট রয়েছে। সন্দ্বীপের ১৯টি ইউনিয়নের মধ্যে ন্যায়ামস্তি, ইজ্জতপুর, কাটগড়, বাটাজোড়া সহ ৪টি ইউনিয়ন সম্পূর্ণ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এছাড়া সারিকাইত, মাইটভাঙ্গা, মুছাপুর, আজিমপুর, রহমতপুর, হরিশপুর, কালাপানিয়া ইউনিয়নের আংশিক অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এক সময় সন্দ্বীপের সবচেয়ে বড় ও প্রাচীণ  মৌজা ন্যায়ামস্তি ১৯৫৩ সাল থেকে নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়তে থাকে। সর্বশেষ ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ে  মৌজাটি বিলীন হয়ে যায়।

সাংবাদিক সম্মেলনে উপকূলীয় বন বিভাগের তথ্য-উপাত্ত উত্থাপন করে জানানো হয়, বর্তমান ভাসানচর সন্দ্বীপের সাবেক ন্যায়মস্তির অংশ হিসেবে সন্দ্বীপ রেঞ্জের আওতায় বনায়ন করা হয়। ২০১৪ সালের ৬ জুন ন্যায়ামস্তি সন্দ্বীপ মৌজায় জেগে উঠা চর ভূমির সাত হাজার একর জমি বনায়নের জন্য উপকূলীয় বন বিভাগের পক্ষে ৪ ও ৬ ধারার গেজেট প্রকাশ করা হয়। ওই গেজেট প্রকাশের তিন মাসের মধ্যে ওই জমির সীমানা বা স্বত্ত্ব ঘোষণার ব্যাপারে কোন পক্ষ থেকে দাবি দাখিল করেনি। রেঞ্জ কর্মকর্তারা সন্দ্বীপের বিগত ১০ বছর ধরে ন্যায়ামস্তি চরে (ভাসানচর) বৃক্ষরোপণ করে আসছে। সর্বশেষ ২০০৯ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত  কয়েক দফায় এক হাজার ৫০ একর জমিতে ম্যানগ্রোভ বনায়ন করা হয়।

সাংবাদিক সম্মেলনে মগধরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম আনোয়ার, আজিমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজ, উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক আবুল হোসেন,  সহ-সভাপতি কাজী ফসিউল আলম, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক  রেজাউল করিম বাবুল, যুবলীগের সভাপতি ছিদ্দিকুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মাকসুদুর রহমান, বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নুরুল আনোয়ার হিরণ,  খেলাঘর সভাপতি অনিক কর পাপ্পু, আবাহনী ক্রীড়াচক্রের সফিকুল আজম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১০০ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০১৭

এমইউ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।