ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

মেয়াদোত্তীর্ণ জীবনরক্ষার ওষুধে প্রাণ বাঁচানোর অপারেশন !

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৭
মেয়াদোত্তীর্ণ জীবনরক্ষার ওষুধে প্রাণ বাঁচানোর অপারেশন ! মেডিকেল সেন্টারে মেয়াদোত্তীর্ণ জীবনরক্ষার ওষুধে প্রাণ বাঁচানোর অপারেশন !

চট্টগ্রাম: ক্লিনিকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট অপারেশন থিয়েটারেই ব্যবহার করা হচ্ছে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ। যার মধ্যে আছে জীবন রক্ষাকারী ওষুধও। এগুলোর কোনটার মেয়াদ শেষ হয়েছে ৬ মাস আগে, কোনটার আবার একবছর আগেই। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানিয়া মুন নগরীর ও-আর নিজাম রোডে অবস্থিত ‘মেডিকেল সেন্টার’ নামের একটি ক্লিনিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে গিয়ে এই চিত্র দেখতে পান।

মঙ্গলবার দুপুরে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মতে এসব মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ অপারেশনের কাজে ব্যবহৃার করা হলে রোগীর মৃত্যু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এছাড়া ক্লিনিকটির বিরুদ্ধে প্যাথলজিতে মেয়াদোত্তীর্ণ রিঅ্যাজেন্ট ব্যবহার এবং ওষুধ সঠিক তাপমাত্রায় সংরক্ষণ না করার অভিযোগও পাওয়া যায়। সঙ্গে সনদবিহীন অনভিজ্ঞ লোক দিয়ে তো এক্সরে পরীক্ষাতো চলছিলই।

এসব কারণে অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানিয়া মুন এই ক্লিনিকটিকে এক লাখ জরিমানা করেন।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানিয়া মুন বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমরা ক্লিনিকটিতে গিয়ে দেখতে পাই সেখানকার অপারেশন থিয়েটারে ব্যবহার করা হচ্ছে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ। এর মধ্যে জীবন রক্ষাকারী অতি গুরুত্বপূর্ণ ওষুধও অপারেশন থিয়েটারে পাওয়া যায়-যেগুলোর মেয়াদ ছয় মাস থেকে এক বছর আগে শেষ হয়ে গেছে। ’

তিনি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে থাকা মেডিকেল অফিসার এবং সিভিল সার্জন চিটাগাং এর প্রতিনিধি ড. রায়হান জানান, এসব ওষুধ অপারেশনে ব্যবহার করা হলে রোগীর মৃত্যু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া ক্লিনিকটিতে ল্যাবেরটারির পরীক্ষাগারে পরীক্ষানীরিক্ষার কাজে ব্যবহৃত রিঅ্যাজেন্টও মেয়াদোত্তীর্ণ। আমরা সব মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ও রিঅ্যাজেন্ট জব্দ করি। ’জব্দ করা মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ

ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্র আরও জানায়, ফার্মেসিতে যে ওষুধ সংরক্ষণ করা হচ্ছে তা ২৫ ডিগ্রি সেন্ট্রিগ্রেড তাপমাত্রারর নিচে রাখার নির্দেশনা থাকলেও ওষুধগুলো ৩২ থেকে ৩৩ সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রাখা আছে।

ভ্রাম্যমান আদালতের প্রসিকিউটর ড্রাগ সুপার শফিকুর রহমান জানান, এতে ওষুধের গুনাগুণ নষ্ট হয়ে তা বিষাক্ত হয়ে যাবার সম্ভাবনা থেকে যায়। এভাবে ওষুধ রাখা ড্রাগ আইন ১৯৪০ এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

এছাড়াও এক্সরে এবং রেডিওলজি বিভাগে টেকনিশিয়ান হিসেবে যাকে পাওয়া যায়, তার কোন প্রশিক্ষণ বা অভিজ্ঞতা সনদ নেই। সনদবিহীন অনভিজ্ঞ লোক দিয়ে চলছিল এক্সরের মত স্পর্শকাতর পরীক্ষা। সনদবিহীন লোক দিয়ে রেডিওলজিও চালানো হচ্ছিল।

এসব কারণে ক্লিনিকটিকে এক লাখ টাকা জরিমানারর পাশাপাশি সতর্কও করা হয় বলে জানান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানিয়া মুন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৭

টিএইচ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।