ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

রোহিঙ্গাদের বাঙালি বললে ৩০ কোটি বাঙালি সোচ্চার হবে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬২২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৭
রোহিঙ্গাদের বাঙালি বললে ৩০ কোটি বাঙালি সোচ্চার হবে মানববন্ধনে বক্তব্য দিচ্ছেন ড. হাছান মাহমুদ

চট্টগ্রাম: রোহিঙ্গাদের বাঙালি আখ্যা দেওয়ার অপচেষ্টা চলছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, যারা রোহিঙ্গাদের বাঙালি আখ্যা দেন তাদের অনুরোধ জানাব দয়া করে, রোহিঙ্গাদের বাঙালি আখ্যা দেবেন না। এ আখ্যা দিলে শুধু বাংলাদেশের ১৬ কোটি বাঙালি নয়, পৃথিবীর ৩০ কোটি বাঙালি সোচ্চার হবে।

সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে চট্টগ্রামের সম্মিলিত বৌদ্ধ জনসাধারণের ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অং সান সু চির যাচাই-বাছাই করে রোহিঙ্গা ফেরতের বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে হাছান মাহমুদ বলেন, সব রোহিঙ্গাকে ফেরত নিয়ে যেতে হবে।

যাচাই-বাছাই করার কিছু নেই। প্রত্যেক রোহিঙ্গাকে ফেরত নিয়ে যেতে হবে।
১৯৭৮ সাল থেকে শুরু করে যেসব রোহিঙ্গা এদেশে আশ্রয় নিয়েছে তাদেরও বাংলাদেশ থেকে ফেরত নিতে হবে। যাচাই-বাছাইয়ের নামে কালক্ষেপণ, কিছু রোহিঙ্গা এদেশে রেখে যাওয়া আমরা মেনে নিতে পারি না।          

তিনি বলেন, শুধু রোহিঙ্গাদের ফেরত নিয়ে গেলে হবে না। মিয়ানমারের সেনাপ্রধানসহ যেসব সেনা কর্মকর্তা হত্যাকাণ্ডে জড়িত তাদের বিচার করতে হবে। আফ্রিকায় যেভাবে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়েছে।  

সাবেক মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, মিয়ানমারে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। সেখানে নারী ও শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে। নিরাপরাধ মানুষকে শুধু গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে না, আগুনে ছুঁড়ে মেরে ছোট্ট শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে। একবিংশ শতাব্দীতে এমন মানবতাবিরোধী অপরাধ বিশ্ব সম্প্রদায় মেনে নিতে পারে না।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের আশ্রয়ের জন্য দুয়ার খুলে দিয়েছে। কিন্তু দীর্ঘদিন আশ্রয় দেওয়া সম্ভব নয়। জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী মিয়ানমারে সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। বাংলাদেশের কূটনৈতিক তৎপরতার কারণে, শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি, জাতিসংঘসহ বিশ্ব নেতৃবৃন্দ মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন। সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। এটি অন্য কোনো দেশের কূটনৈতিক তৎপরতার কারণে নয়। এটি শেখ হাসিনার সরকারের কূটনৈতিক তৎপরতার কারণেই।

হাছান মাহমুদ বলেন, নোবেলজয়ী মিয়ানমার নেত্রী অং সান সু চি রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকাকালীন যে ঘটনা ঘটছে, যেভাবে মুসলিমদের হত্যা করা হয়েছে, শতাধিক হিন্দুকে হত্যা করা হয়েছে। হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। এটি একটি জাতিকে, ধ্বংস করার, নির্মূল করার লক্ষ্যে করা হয়েছে।

তিনি বলেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ইতিহাস হাজার বছরের পুরনো। মিয়ানমার স্বাধীনতা লাভের পর প্রথম মন্ত্রিসভায় রোহিঙ্গারা ছিলেন। যুগ যুগ ধরে, বছরের পর বছর ধরে পার্লামেন্টে রোহিঙ্গারা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০১০ সালেও দুজন রোহিঙ্গা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।   

বাংলাদেশ বৌদ্ধ কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ নেতা স্বজন কুমার তালুকদারের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বৌদ্ধ ধর্মীয় গুরু বিমল জ্যোতি মহাস্থবির, ধর্মসেন মহাস্থবির, জ্ঞানবরণ থের, এস লোকজিৎ থের, দিপংকর ভিক্ষু, বিজয় লক্ষ্মী মহাস্থবির, অজিত বরণ বড়ুয়া, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও রাঙ্গুনিয়া পৌর মেয়র শাহজাহান শিকদার, রাঙ্গুনিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী শাহ, কৃষকলীগ নেতা শফিকুল ইসলাম, তরিৎ কান্তি দে, বিপ্লব শিকদার, এমরুল করিম রাশেদ, ছাত্রলীগ নেতা নুরুল আলম, মিথুন বড়ুয়া, প্রকৌশলী প্রদীপ বড়ুয়া, মৃগাংক প্রসাদ বড়ুয়া প্রমুখ।

লায়ার অব দ্যা ইয়ার রিজভী: হাছান মাহমুদ

বাংলাদেশ সময়: ১২২২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৭

এআর/আইএসএ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad