ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

মৌমাছির ‘মুখ থেকে’ মধু নিয়ে বিক্রি!

তাসনীম হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৭
মৌমাছির ‘মুখ থেকে’ মধু নিয়ে বিক্রি! মৌচাক ঘিরে ধরেছে হাজারো মৌমাছি, পাশে সেখান থেকে সংগ্রহ করা মধু বিক্রি হচ্ছে

চট্টগ্রাম: নগরীর আসকার দীঘির পূর্ব পাড়ের সড়কের ওপর তখন তপ্ত রোদের দাপট। সেই সড়ক লাগোয়া দক্ষিণের ফুটপাতের ওপর দুটো মানুষকে ঘিরে ছোট্ট একটা জটলা। রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তারা সেখানে বসেছেন মধু বিক্রি করতে।

গাছ থেকে সদ্য নেমে আনা ভাঙা মৌচাকে হাজারো শান্ত মৌমাছি জড়িয়ে আছে তখনও। পাশে খড়ের মশাল থেকে সেই সময়ও মৌমাছি দৌড়ানোর ‘দাবাই’ আগুন-ধোঁয়া বেরোচ্ছে সমানে।

বালতি ভরা মধু দেখিয়ে দুই যুবকের একজন মোহাম্মদ ফারুকের পাশের পাহাড়ের দিকে হাত দেখিয়ে হাঁক-‘ এই মাত্র এই পাহাড়ের একটি কাঠাল গাছ থেকে মধুগুলো সংগ্রহ করেছি। একেবারেই খাঁটি।
নিয়ে যান। ঠকবেন না। ’

দুই যুবকের আরেকজনের নাম কামাল উদ্দিন।

তিনি বলেন, পাশের পাহাড়ের একটি কাঁঠাল গাছের প্রায় ২০ হাত উপরে মৌমাছিরা এই মৌচাক তৈরি করেন। সেই পাহাড়ের মালিকানায় থাকা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে আমরা এই মধু সংগ্রহ করি। সবমিলিয়ে ১২ কেজি মধু পাওয়া গেছে সেই মৌচাক থেকে। এর মধ্যে কথা অনুযায়ী ছয় কেজি তাদের দিয়ে দিয়েছি। বাকি ছয় কেজি আমরা বিক্রি করছি। ’  

কামালের এই কথার সত্যতা নিশ্চিত করেন ওই পাহাড়ের মালিকানায় থাকা কর্তৃপক্ষের নিরাপত্তারক্ষীর দায়িত্বে থাকা একজন।

খাঁটি মধু ‘নিশ্চিত’ হয়ে চলতি পথ দিয়ে যাওয়া অনেকেই কিনে নেন মধু। কেজি ৫০০টাকায় তারা বিক্রি করছিলেন সেই মধু।

তাদেরই একজন জহির উদ্দিন। তিনি প্রাইভেটকারে করে সেই পথ দিয়ে যাচ্ছিলেন। পরে জটলা দেখে থামেন। এরপর দেখতে পান বিক্রি হচ্ছে মধু। মধু বিক্রি করছেন

জহির উদ্দিনের কাছ থেকে জানতে চাইলে বলেন, ‘খাঁটি মধু সহজে পাওয়া যায় না। বারবারই খাঁটি মধু বলে বাজার থেকে কিনে ঠকেছি। কিন্তু এদের কথা শুনে এবং পরিস্থিতি দেখে মনে হলো এই মধুটা খাঁটি। তাই এক কেজি কিনে নিলাম। ’

আসা করছি এবার ঠকবো না-যাবার বেলায় হাসতে হাসতে বলে যান জহির।

একজন গৃহবধূকেও সেই মধু কিনতে দেখা গেল।

হালিমা বেগম নামের এই গৃহবধূরও কথাও প্রায়ই জহির উদ্দিনের মতোন। তবে তিনি বাড়তি হিসেবে এক গাদা খাঁটি মধুর উপকারিতা শুনিয়ে গেলেন।

মধু বিক্রেতা ফারুক ও কামাল বাংলানিউজকে জানান তাদের উভয়েরই বাড়ি কুমিল্লায়। তারা বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহ করে বেড়ান। তারপর সেই মধু তারা বিক্রি করেন।

ক্রেতার সঙ্গে দরদাম নিয়ে কিছুটা আপোস করলেও বেজালের সঙ্গে কোনো আপোস করেন না বলে সপাটে জবাব দেন উভয়ই…

বাংলাদেশ সময়: ২১১৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৭

টিএইচ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad
welcome-ad