এককথায় স্বপ্নপুরি হবে কাজীর দেউড়ির সেই আউটার স্টেডিয়াম। যেটি এখন অবহেলা-অনাদরে আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে।
স্থপতি জেরিনা হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, তিনটি ধাপে কাজ হবে আউটার স্টেডিয়ামের। প্রথম ধাপে ফুটপাতের কাজ হবে। আমরা ফুটপাতে একটি লেন রাখব মানুষ যাতে দ্রুতগতিতে বাসস্টপেজে আসা-যাওয়া করতে পারেন। আরেকটি থাকবে ধীর গতিতে চলাচলের জন্য। এর মধ্যে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য হলুদ রঙের বোতাম টাইলসের একটি লেন থাকবে। যাতে তারা নিজেরাই চলাফেরা করতে পারে। বয়স্করা যাতে চলতি পথে জিরোতে পারেন, রোদ-বৃষ্টিতে যাতে পথচারীরা আশ্রয় নিতে পারে সে জন্য ছাউনি থাকবে। গাড়ি ড্রপ আউটের জন্য নির্দিষ্ট স্থান থাকবে। ছোট-বড়-মাঝারি আকারের প্রচুর গাছ থাকবে।
তিনি বলেন, বর্তমানে যে বিশ্রী রকমের গণশৌচাগার আছে মোড়ে তা সরিয়ে নেওয়া হবে। কারণ রাস্তার মোড়টা দৃশ্যমান করতে হবে। আমরা মোড়ে চার ফুটের ব্যাসের একটি স্মৃতিস্তম্ভ করবো। যেখানে লাইটিং হবে। শৌচাগারটি উত্তরপাশে সার্কিট হাউসের ফটকের সামনের সড়কের দক্ষিণ পাশে যে গ্যালারি হবে তার নিচে দেওয়া হবে। যা বাইর থেকে দেখা যাবে না। এগুলো দ্বিতীয় ধাপের কাজে থাকবে।
এ ধাপে মাঠের কাজ হবে। ক্রিকেটের জন্য বর্তমানে যে নেট প্র্যাকটিসের ব্যবস্থা আছে তা থাকবে। জগিং ট্র্যাক থাকবে। ব্যায়ামের জন্য কিছু স্থায়ী জায়গাসহ নির্ধারিত কর্নার থাকবে। চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার চাহিদা অনুযায়ী কিছু চেঞ্জ রুম, লকার রুম, অফিস রুম থাকবে। এমএ আজিজ স্টেডিয়াম, সার্কিট হাউস, রেডিসন ব্লু চিটাগাং বে ভিউ মিলে শহরের প্রাণকেন্দ্র আউটার স্টেডিয়াম। তাই দেশি-বিদেশি ট্যুরিস্টদের জন্য একটি তথ্যকেন্দ্র (কিউ) রাখতে চাই। যাতে বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্র, দর্শনীয় স্থান, হোটেল-মোটেল, পরিবহন সংস্থার পুস্তিকা থাকবে। ট্যুরিস্টরা কোথায় যাবে, কোথায় খাবে, কোথায় থাকবে এসব ধারণা পাবে।
স্থপতি জেরিনা হোসেন বলেন, মাঠের কাজটি এমনভাবে করা হবে যাতে বৃষ্টির পানি জমে না থাকে। এটি অনেক ব্যয়বহুল। প্রথমত সুইমিং পুলের যে স্থাপনা তার লেবেলের সঙ্গে মিল রেখে আমাদের কাজগুলো করতে হবে। এখানে আমরা অনেক তথ্য উপস্থাপনের সুযোগ পাব। একটি ২০-৫০ জনের উপযোগী মুক্তমঞ্চ রাখব। এ ছাড়া এ মাঠে প্র্যাকটিস করে যারা জাতীয় তারকা হয়েছেন। কাজীর দেউড়ি নামকরণের ইতিহাস। মুক্তিযুদ্ধের সময় এখানে সার্কিট হাউসে যে এক দিন পর পতাকা উড়েছিল সেই ইতিহাসসহ অনেক কিছু তুলে ধরতে পারব।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এটি খেলার মাঠ। আমরা সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। জরিপ করেছি। এখন মাঠের যে অবস্থা তা খুবই করুণ। একদিকে আবর্জনার ভাগাড়। একদিকে বাঁশের স্তূপ। ধোপাদের কাপড় শুকানোর কর্মচাঞ্চল্য। মাঠের ভেতর ট্রাকের সারি। ড্রাইভিং সেন্টারের গাড়ির অবাধ চলাচল। আবার হাজারো শিশু-কিশোরের হইচই। শত শত মানুষের দাঁড়িয়ে উপভোগ। জীর্ণশীর্ণ ব্যস্ত টয়লেট। সবই দেখেছি আমরা। সেই জায়গায় এখন আমরা একটি স্বপ্নপুরি সাজাতে চাই।
চসিকের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ একেএম রেজাউল করিম বাংলানিউজকে বলেন, চসিকের পক্ষ থেকে স্থপতি জেরিনা হোসেনকে আউটার স্টেডিয়ামের নকশা করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তার টিম নকশা প্রায় চূড়ান্ত করেছেন। এখন সংযোজন-বিয়োজন চলছে। মেয়র মহোদয়ের চূড়ান্ত অনুমোদন পেলে আমরা ধাপে ধাপে বাস্তবায়নকাজ শুরু করবো।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৭
এআর/টিসি