এই ছয়টি জেলা হলো-কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, বান্দরবান, ফেনী, খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি। ১৬ সেপ্টেম্বর বিভাগীয় কমিশনার জেলা প্রশাসকদের কাছে এই চিঠি পাঠান।
এতে সকল সম্প্রদায়ের সাধারণ জনগণের মধ্যে রোহিঙ্গা বিষয়ক মানবিক বিপর্যয়ের যথাযথ ঘটনাসমূহ উল্লেখপূর্বক নির্যাতিতদের প্রতি সহমর্মিতার মনোভাব পোষণ ও কোনোরূপ বিশৃঙ্খলতায় না জড়ানোর ব্যাপারে সামগ্রিক সামাজিক জনসচেতনতা গঠনের কথা বলা হয়।
প্রাথমিকভাবে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা সীমান্ত হয়ে বান্দরবান ও কক্সবাজারে প্রবেশ করলেও কেউ কেউ অন্য চার জেলাতেও ছড়িয়ে পড়েছেন।
ছয় জেলার ডিসিকে দেওয়া চিঠিতে বিভাগীয় কমিশনার জানিয়েছেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সঙ্গে মানবিক আচরণ করতে হবে। নির্দিষ্ট ক্যাম্পের বাইরে বিভিন্ন জায়গায় রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পাওয়া গেলে তাদের প্রয়োজনীয় মানবিক সেবা দেওয়ার মাধ্যমে উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে ফেরত পাঠাতে হবে। এক্ষেত্রে তাদের সঙ্গে মানবিক আচরণ করতে হবে।
এদিকে মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিভাগীয় কমিশনারের সম্মেলন কক্ষে মিয়ানমার নাগরিকদের চিহ্নিতকরণ সংক্রান্ত বিভাগীয় কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভাতেও রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রতি মানবিক আচরণ করার বিষয়টি ওঠে এসেছে বিভাগীয় কমিশনারের বক্তব্যে।
এদিন তিনি বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের সতর্ক করে বলেন, কক্সবাজার থেকে ছড়িয়ে পড়ার সময় বিভিন্ন জায়গা থেকে উদ্ধার হওয়া রোহিঙ্গাদের ‘ধরা পড়েছে’ বলা যাবে না। এক্ষেত্রে উদ্ধার শব্দটি ব্যবহার করতে হবে। কারণ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। পুরো দেশ তাদের পাশে আছে। প্রধানমন্ত্রীর এই উদ্যোগ সারা বিশ্বে প্রশংসিত হচ্ছে। আর সরকার তো দেশের ১৬ কোটি মানুষের সেন্টিমেন্টকে পুঁজি করেই রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছে। ’
এছাড়াও রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পাশে দাঁড়াতে এবং সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য আরও নানা উদ্যোগ নিয়েছে বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়।
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য-১৯ সেপ্টেম্বর রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনাসহ মানবিক ত্রাণ সহায়তার কার্যক্রম তদারকির জন্য উপসচিব পর্যায়ের ১০ জন কর্মকর্তা পদায়নের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পত্র প্রেরণ করেছেন বিভাগীয় কমিশনার। এছাড়া ১৭ সেপ্টেম্বর রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মাঝে ত্রাণ বিতরণে যাতে কোনো অনিয়ম না হয় সে লক্ষ্যে কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসককে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দায়িত্ব পালনের জন্য ২৫০ জন অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্স মোতায়েনের সিদ্ধান্ত হয়। পুলিশেল পাশাপাশি বিজিবি, র্যাব ও আনসার সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করবেন। পাঁচ জন ম্যাজিস্ট্রেট সার্বক্ষণিকভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় এবং বর্ডার লাইনে নিয়োজিত রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
অন্যদিকে কক্সবাজার সদর, উখিয়া ও টেকনাফোর খাদ্য বিভাগের গুদামগুলোতে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য প্রাপ্ত অনুদানের মালামাল সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় চিকিৎসা সংক্রান্ত সার্বিক সহযোগিতার জন্য নতুন মেডিকেল টিম গঠন ও বিনামূল্যে ওষুধ সরবরাহ এবং সকল রোহিঙ্গা শিশুকে টিকাদান কর্মসূচির আওতায় নিয়ে আসারও সিদ্ধান্ত হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৭
টিএইচ/আইএসএ/টিসি