ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ মে ২০২৪, ০১ জিলকদ ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

তারবিহীন পেসমেকার বসাল চট্টগ্রামের ‘ফরটিস এসকর্টস’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৭
তারবিহীন পেসমেকার বসাল চট্টগ্রামের ‘ফরটিস এসকর্টস’ ফরটিস সম্মেলন কক্ষে ব্রিফিংয়ে বক্তারা। ছবি: উজ্জ্বল ধর-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: সফলভাবে হৃদযন্ত্রে তারবিহীন (লিডলেস) পেসমেকার স্থাপন করেছে বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের বিশেষায়িত হাসপাতাল ‘এএফসি হেলথ ফরটিস এসকর্টস হার্ট ইনস্টিটিউট’। দিল্লির ফরটিস এসকর্টসের শাখা হিসেবে হৃদরোগীদের ২৪ ঘণ্টা বিশ্বমানের সেবা দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।   

মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ৮৪ বছরের পুরুষ রোগীর হৃদযন্ত্রে যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি মেডট্রনিক ব্রান্ডের অত্যাধুনিক স্বয়ংক্রিয় ক্যাপসুলের মতো দেখতে ডিভাইসটি প্রতিস্থাপন করা হয়। বর্তমানে রোগী সুস্থ আছেন।

এটি চট্টগ্রামের প্রথম কোনো বেসরকারি হাসপাতালে তারবিহীন পেসমেকার স্থাপন। সারা দেশে এটি তৃতীয়।

এর আগে অ্যাপোলোতে প্রথম এবং চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দ্বিতীয় রোগীর হৃদযন্ত্রে তারবিহীন পেসমেকার বসানো হয়েছিল।  

বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) নগরীর ওআর নিজাম সড়কের শেভরন ভবনের ফরটিস সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এসব তথ্য জানান চিফ কনসালটেন্ট অ্যান্ড ক্যাথল্যাব ডিরেক্টর ডা. এএম শফিক ও চিফ কার্ডিয়াক সার্জন ডা. মির্জা আবুল কালাম মহিউদ্দিন।

ডা. এএম শফিক বলেন, অপারেশন থিয়েটারে প্রায় এক ঘণ্টার মধ্যে ছোট্ট একটি ছিদ্র করে হার্টের চেম্বারের মধ্যে তারবিহীন পেসমেকারটি প্রতিস্থাপন করা হয়। হৃদস্পন্দন ৬০ এর নিচে নামলে এটি সক্রিয় হয়। টেকনিক্যালিও সহজ। সাধারণ পেসমেকার বুকের ত্বকের (চামড়া) নিচে মাংসপেশির ওপর বসানো হয়। সেখান থেকে তার (লিড) দিয়ে রক্তনালির ভেতর দিয়ে হৃদযন্ত্রের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়। এক্ষেত্রে ইনফেকশনের ঝুঁকি থাকে।
পেসমেকার
ইলেকট্রিক্যাল ব্লকের ক্ষেত্রে পালসের গতি কমে যায়। আমাদের রোগী দুই বছর শয্যাশায়ী। কাটা-ছেঁড়া ছাড়া তারবিহীন পেসমেকার প্রতিস্থাপন ঝুঁকিমুক্ত।   

ব্রিফিংয়ের সময় উপস্থিত ছিলেন কার্ডিওলজির সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. তারিক বিন রশিদ, কনসালটেন্ট ডা. সাইফুর রহমান সোহেল, ডা. মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, ডা. মাহবুব আহসান, কার্ডিয়াক এনসথেসিওলজিস্ট ডা. এএম মেজবাউর রহমান, ফ্যাসিলিটি ডিরেক্টর বিনোদ সিং, মার্কেটিং ম্যানেজার আবুল মহসিন মোহাম্মদ ইকবাল, অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার আফতাব উদ্দিন প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে ফরটিস হাসপাতালের সিরিয়াস রোগীদের দিল্লি ফরটিস এসকর্টস গাইড করে থাকে। চট্টগ্রামের ফরটিস হাসপাতালে ১০ শয্যার সিসিইউ, ১২ শয্যার মেইল ব্লক, ১০ শয্যার ফিমেল ব্লক, ৬ শয্যার আইসিইউ, ১টি ভিভিআইপি কেবিনসহ অর্ধশতাধিক হৃদরোগী রাখার ব্যবস্থা রয়েছে। হৃদরোগীদের সুবিধার্থে রাখা হয়েছে ৬ শয্যার ডায়ালাইসিস ইউনিট। এখানকার অপারেশন থিয়েটারটি ইতালির এন্টি ব্যাকটেরিয়াল উপকরণ দিয়ে সাজানো হয়েছে। রয়েছে দুটি ক্যাথল্যাব, হার্ট ব্লক শনাক্তে দেশের একমাত্র আইএফআর, চট্টগ্রামের প্রথম ফোর ডি ইকো মেশিন এবং ২৪ ঘণ্টা এনজিওগ্রাম ও এনজিওপ্লাস্টি সুবিধা।

ডা. এএম শফিক বলেন, হার্টের চিকিৎসায় আমরা সিঙ্গাপুর থেকে দূরে নই। বরং সিঙ্গাপুরের পুরোনো হাসপাতালগুলোর চেয়ে টেকনোলজিতে আমরা এগিয়ে।   

এর আগে ১৩ আগস্ট চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগ মিরসরাই উপজেলার নাহেরপুর চৌধুরী বাড়ির গিয়াস উদ্দিন চৌধুরীর হৃদপিণ্ডে আমেরিকান মেডট্রনিক ব্রান্ডের তারবিহীন পেসমেকার স্থাপন করা হয়।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৭

এআর/আইএসএ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।